কাল প্রভাতে, সূর্যোদয়ের আগে, নগ্নপদে হেঁটে যেও  
তোমার প্রাসাদের সমুখে গোলাপের বাগানটিতে।
যদি তোমার চরণদ্বয় সিক্ত হয় সবুজ ঘাসের শিশিরে
জেনো তারা নাম না জানা অনেক মানুষের অশ্রুবিন্দু।
গোলাপের পাপড়িগুলি যদি অন্যদিনের চেয়ে বেশী লাল মনে হয়
তবে জেনো সে রং নামহীন অনেক মানুষের রক্তে,
যা ঝরেছিল স্বর্ণ জৌলুষিত বুদ্ধ মন্দিরের দ্বারে
মেদ পেলবিতো বুদ্ধ মূর্তির সামনে -
যার শিক্ষা ছিল "জীব হত্যা মহাপাপা"।
বুদ্ধের কপালে দেখবে চর্মের ভাঁজ, কুঁচকানো ভুরু
যাতে গভীর ভাবনা ও প্রশ্ন দীপ্যমান -
ওরা জীব ছিল কী না?  
যারা মুসলমানিত্বের দায়ে পায়নি মানুষের স্বীকৃতি।
তারা কালরাতে রক্ত দিয়ে লাল করে গেলো
তোমার গোলাপের পাপড়িগুলিকে।
পাপড়িগুলি একবার নাকের কাছে শুঁকে দেখো
যদি তাতে রক্তের ঘ্রান না পাও,
গোলাপ-সৌরভের কোনো ঘাটতি না থাকে,
তবে জেনো পৃথিবী থেকে শেষ বিদায়ের আগে
সেই আত্মাগুলো কালরাতে তোমার এই বাগানে এসে
মাতৃ-প্রতিভূ তোমার চরণে রেখে গেছে
রক্তে ভেজা শান্তির গোলাপগুলি।
সেই শান্তি, যে শান্তির মূল্য হয়েছিল পরিশোধিত
একদিন তোমার ক্ষমতাহীন, শীর্ণ হাতে।
আজ মনে হয় তোমার সে হাত আরও ক্ষমতাহীন ও শীর্ণতর।
কার সাধ্য খুন করে ক্ষমতাশীল মায়ের সন্তানকে তার গৃহদ্বারে?
কোন মায়ের হাত ফিরে আসে নিজ সন্তানকে অস্বীকার করে?


আলোর পথ পাড়ি দিয়ে
সেই মহাত্মারা পৌঁছে গেলো পরম শান্তির দেশে,
যার কিয়দাংশ দেওয়ার ক্ষমতাও তোমার নেই।
কেনো তারা দেবে তোমায় অভিসম্পাত?
করুণায় দিয়ে গেছে শান্তির গোলাপ।


পৃথিবীর নির্জন কোণে
এক নামহীন কবির পাঠানো
একটি পাপড়ি যদি খুঁজে পাও একটি গোলাপে
তাতেও পাবে না অভিসম্পাত।
হয়তো পাবে রক্তলালের মাঝে নীল-তিলক এক বেদনা-বিন্দু।
আর পাবে তোমার ভবিষ্যৎ জীবনে
অশান্তির আশংকায় বিবর্ণতা।
যে শান্তির দায়িত্ব নিয়ে হাতে, পারোনি তা দিতে
সে কি ক্ষমিবে তোমায়?


রচনা: ২৬ নভেম্বর, ২০১৬