---------------------------------------------------------
## কবিতাটি মেহেরপুরে আঞ্চলিক ভাষায় লেখা। মেহেরপুরের আঞ্চলিক ভাষা বলতে আলাদ কোন ভাষা নেই। শিক্ষিতরা বেশিরভাগই শান্তিপুরের বাংলা বলেন। গ্রামের অশিক্ষিত লোকেরাও একই ভাষা, একই শব্দ বলে। তবে বলার সময় উচ্চারণটা একটু অন্য রকম হয়ে যায়, যা সঠিকভাবে বানান লেখাও বেশ কঠিন। তবু চেষ্টা করেছি একদম তাদের কথায় কবিতাটি লিখতে।
---------------------------------------------------------
    
রমিজ থাকে ঘরজামাই
সারাটা দিন খাটে রমিজ
তবু যে তার নেই কামাই।


ঘুম থেকি কেউ উটার আগে
বাড়ির জামাই রমিজ জাগে।
শীতের সকাল, কাঁপে জাড়ে
হাঁস, মুরগি, ছাগল ছাড়ে
গরুর নান্দাই খাবার দিয়ি
পুকুরি যায় খেপলা নিয়ি
রুই, কাতলা মাছে ঠেসি
খালুই নিয়ি বাড়ি এসি
নদীর ঘাটে নাইতি যায়
নেয়ি এসি খাবার চায়।
সবার খাওয়া শেষ হয়িচে
এখন কোতাই  খাবার পাই?
এই কতাটা বুলি বো তার
ব্যস্ত থাকে শাড়ি জামায়
রমিজ থাকে ঘরজামাই।


বাড়িই কুনু কুটুম আ'লি  
গাঁয়ির হাটে ইলিশ পা'লি  
ইলিশটা নেয় ঝুলিয়ি হাতে
মাথায় কপি, বেগুন সাথে
কান্দে ঝোলে গামচায় বান্দা
জিলিপি আর মিটাই মুন্ডা।
যে দেখে সেই জানতি চায়
লাগলু কত ইলিশটাই?
রমিজ হাপায়, বাপ্ রে বাপ্
ঘরজামাইর কি যে পাপ!
বাজার তো না পাহাড় আনে
লংকা থেকি হনুমানে -
গুষ্টির খাবার উঠুন মাজে
এক এক করি রমিজ নামায়
রমিজ থাকে ঘরজামাই।


সন্জি থেকি খাবার পালা
খাবে শালী, খাবে শালা
কুটুম, শ্বশুর, শাশুড়ি মা
রমিজের বো অরুনিমা।
রমিজ ভালো খাজিন্দার
তার বসাটা হয় না আর
তাই তো সে খায় সবার পরে
দেকে না বো এক নজরে
নুন আর ডালি কডা ভাত  
ঘর জামাইর সেই তো বরাত।
খাওয়ার শেষে ধুয়া হলে
বউ আসে তার চট বগলে
ছিড়া ক্যাতা দেয় তার হাতে
বার বাড়িতে থাকতে রাতে।
ভেতর বাড়িই জায়গা কম
নিজের লোকেই সরগরম
রমিজ হবে বেমানান
সাফ বুলি দেয় বিবিজানঃ
বার বাড়িতে শুতি যাও
রাতি যদি গাল না চাও
বেশি কথা বললে তোমার
ঘোষবু ও মুখ শক্ত ঝামাই
রমিজ থাকে ঘরজামাই।