দিকে দিকে শুনি ঘরে ফেরার ধ্বনি প্রতিধ্বনি
কোথায় ফেরার তরে ওগো দিনান্তের দিনমনি
আবির আভায় ধীরে ডুবে গেলে সমুদ্রের ওপারে
যেন এক অবহেলিত কুলবধূ নির্বাক হাহাকারে  
বেদনায় আরক্তিম? যে সমুদ্র প্রতিদিন
তোমার আগমন বিগমনে নিতান্তই উদাসীন,
সে কেন নিত্য সাড়া দেয় চন্দ্রিমার টানে
জোয়ারের উচ্ছাসে আর ভাটার গর্জন-গানে?
তার বুকে তোমার শেষ আবিরের রঙ মাথা খুঁড়ে
ঢেউয়ের ভাঙনে ভেঙে ভেঙে, জলের আগুনে পুড়ে
মধ্য গগনে তীব্র জৌলুসের অহংকার ফেলে
খন্ড বিখন্ড অম্বুদের বুকে বেদনার লালিমা ঢেলে  
শুধু ক'টি খাদ্যান্বেষী পাখির কূজনে তোমার বিদায়
সমুদ্রের পারে গতিময় নাগরিক জীবনের ব্যস্ততায়।


তোমার এ নিত্য বিসর্জনের অলেখ্য ইতিহাসে
ক্ষুদ্র এক কবি বসিয়া ছোট এক অলিন্দ-পাশে
নির্বাক বেদনায় ভাবে, তোমার প্রেমের কেন অবহেলা?
গগনের তারকারা ক'রে চলে কী নিঠুর খেলা
কেন ওরা প্রতিদিন নিশি অন্তে তোমার উদয়নে
নিশিভর খেলাশেষে চাঁদের সাথে লুকায় গোপনে?


কতকাল পৃথিবী, সমুদ্র আর তারাদের ভালোবেসে
অবহেলা বুকে নিজেকে বিসর্জন দেবে প্রতিদিন এসে?
নাকি এ শুধু তোমার অবচেতন মনে প্রতিদিন আসা
দেখিতে সমুদ্রের বেলাভূমিতে হাজার মানুষের ভালোবাসা?


==================================
কয়েকদিন আগে বসন্ত উৎসবে কবিতা আবৃত্তি করে সমুদ্রের পাশে বন্ধুর এক বাসা থেকে সমুদ্রের ওপারে সূর্যাস্ত দেখেছিলাম। হঠাৎ আমার স্ত্রী জানালো আমার বন্ধুপত্নী অনুরোধ করেছেন সে দিনের সেই সূর্যাস্ত দর্শনে আমার মনের যে অনুভূতি তা একটা কবিতায় লিখে দিতে। তাই আজকের এই প্রচেষ্টা।