কদিন ধরে ত্র্যস্ত ব্যস্ত সবখানে হয়  খোঁজা
যেথায় আছে যত রকম কবিরাজ আর ওঁঝা।
সবাই ছুটে রাজ্য সভায় কাধে ঝোলে ঝুলি
কেও বুঝে না ওরা সবাই বলে কী যে বুলি।
ঝুলির ভিতর কত গাছের হাজার লতা পাতা
হাজার পশুর শুকনো চামড়া, শুকনো পাখির মাথা।
কাঁচা হলুদ পুড়ায় কত, ধরে রাজার নাকে
ভুত যদি হয় কী করে আর রাজার সাথে থাকে?
অবশেষে মানলো সবাই ভুতের আছর নয়
নইলে কি আর কবিরাজের চেষ্টা ব্যর্থ হয়?
উন্নত দেশ অগ্রগামী জ্ঞান আর বিজ্ঞানে
যত রোগের ডাক্তার নাকি বাস করে সেইখানে।
বলল তারাও, এমন রোগের গল্প শুনি নাই
ওষধ পথ্যে কাজ না হলে অপারেশন চায়।
উন্নত দেশ অতি সদয়, বন্ধুর এ দুর্দিনে
পাঠিয়ে দিল বিজ্ঞ ডাক্তার উচ্চ মূল্য বিনে।
সাথেও এলো কয়েক ডজন সেবক, সহচর
গাড়ি ভর্তি ওষধ, পথ্য, যন্ত্র অতপর।
আবার তারা অতি যত্নে করলো নিরীক্ষণ
বুঝলো শেষে কেমনে উল্টে গেছে রাজার মন।
উল্টা মনকে সোজা করা কাজটা অতি জটিল
মন্ত্রী সভা মানবে নাকো চিকিত্সায় গরমিল।
ভেবে চিনতে ডাক্তারগন প্রেসক্রিপশন লেখে
মন্ত্রিসভা ফর্দ বানায় বুদ্ধিজীবী ডেকে।
উল্টো করে লিখতে হবে যা কিছু সব সোজা
কঠিন হবে রাজার কাছে সহজ কথা বোঝা।
বুঝবে রাজা কঠিন কথা অতি সহজভাবে
শাস্তি পাওয়ার কথাটি যার পুরস্কার সে পাবে।
পুরুস্কারের বিনিময়ে শাস্তি পাবে কেহ
শ্রদ্ধাভাজন ঘৃনা পাবে, ঘৃনিতরা স্নেহ।
ধার্মিকেরা ভন্ড হবে, ভন্ডেরা ধার্মিক
দেশের যারা শত্রু তারা হবে দেশ প্রেমিক।
দেশের বন্ধু বাধ্য হবে দেশটি ছেড়ে যেতে
মূর্খরা সব পন্ডিত হবে, পন্ডিত যাবে ক্ষেতে।
সত্যি যা সব মিথ্যা হবে, মিথ্যা যা সব ঠিক
সুবিচারের প্রার্থীরা সব পাবে ঘৃনা-ধিক।
রাজার কথা শুনবে প্রজা, প্রজার রাজা নয়
রাজার ভালো দেশের ভালো, গণতন্ত্রের জয়।    


ফর্দ খানা ঢুকলো আবার মডার্ন কম্পিউটারে
তৈরী হলো মেমরি চিপস, সব কিছু যা পারে।
ডাক্তার শেষে করলো অতি সহজ অপারেশন
রাজার মাথায় সে চিপসখানা হলো সংস্থাপন।
আনন্দেতে ডাক্তার কয় “সাকসেসফুল, সাকসেসফুল,
আজ থেকে আর রাজা মশায়  করবে নাকো কোনো ভুল।”
মন্ত্রিসভা হাত তালি দেই কন্ঠে মেলে, “জিন্দাবাদ!
পেলাম শেষে রাজার রাজা এতদিনে মিটল সাধ।”