জীবন পথের বন্ধু সকল, তোমাদের শত মন
গড়েছিল এক অতি সুউচ্চ নিষ্কলঙ্ক গগন।
উঠেছিল সেথা চন্দ্র, সূর্য আর অসংখ্য তারা
তারই নিচে আমি জোনাকি পথিক, ক্ষণে ক্ষণে পথহারা।
জ্বলেছি, নিভেছি তবু থামিনিকো তব সাথে পথচলা
হয়ত হয়েছে, হয়ত হয়নি, একই সুরে কথা বলা।


তোমরা গেয়েছ সুরে সুরে গান আমার বেসুরো গলা -
কোলাহলে তার ভঙ্গ করেছে তোমাদের কথা বলা।
তোমরা চলেছো একসাথে সব সারি সারি পরিপাটি
আমার চলায় হয়ত কখনো ছড়িয়েছে ধুলা মাটি।


তবুতো কেটেছে কতটা সময় একই আকাশের নিচে
একসাথে হাসা একসাথে কাঁদা কোনটায় নয় মিছে।
কখনো তীব্র সূর্য ছটা, কখনো ঢেকেছে মেঘে
কখনো ছিড়েছে জীবনের পাল তীব্র ঝড়ের বেগে।


তবুও থামেনি প্রতিদিন গাওয়া জীবনের জয়গান
ভগ্ন তরণী ছিন্ন পালে প্রাণপনে দিয়ে টান -
উত্তাল ঢেউ পাড়ি দিয়ে আজ জীবন-সাগর তীরে
কখনো হাসি কখনো কাঁদি পিছনের দিকে ফিরে।


তীরে বসে আজ আনমনা হয়ে গগনের দিকে চাই
চোখে জল আসে, সেখানে যে আজ সব তারকারা নাই।
দূর দিগন্তে সূর্য ঢলেছে ধরনীর কাছাকাছি
আঁধারের ভয় বুকের ভিতর সদা করে নাচানাচি।
আঁধারের মাঝে যাব চিরতরে তার এ-কদিন আগে
বন্ধুরা সব তোমাদের কিছু দেওয়ার যে সাধ জাগে।


সারাটা জীবন ধন্য হয়েছি ভালোবাসা নিয়ে নিয়ে
কি আছে আমার - ঋণ শোধ করি তোমাদের হাতে দিয়ে?
শুধু কথা ছিল, আজও তাই আছে, শত স্মৃতি তার সাথে
শব্দে ছন্দে লিখে দেব কিছু, কলমটা নিই হাতে।
স্মৃতি ও ছন্দে লিখে যাব আজ জীবনের স্মৃতিছন্দ
যার মাঝে রবে দুঃখ ও সুখ, বেদনা ও মহানন্দ।


দিন চলে যায়, জীবনের স্মৃতি প্রতিদিন কথা বলে
কখনো হাসায়, কখনো কাঁদায়, বুকের ভেতরে জ্বলে।
তাই দিয়ে যাই শংকিত মনে তোমাদের হাতে তুলে
নেই অভিযোগ দুই দিন পরে যদি যাও সব ভুলে।
তবু জেনে রেখো রবে না আমার এতটুকু অভিমান
শুধু তোমাদের সাথে ছিনু তাই ভরেছে আমার প্রাণ।


যদি কোনক্ষণে মনে পড়ে তা, খুলে দেখো কোনদিন
বিচার করোনা ভালো না মন্দ, কতটা মূল্যহীন।
শুধু মনে করো স্মৃতিটুকু তার তোমাদের মাঝে আছে
আজ নেই সে একদিন যে ছিল তোমাদের কাছে।
ভেবেছিল যে নিজেকে নিজেই তোমাদের এক কবি
কবি বা অ-কবি, তোমাদের প্রেমে পেয়েছিল সে যে সবই।