ক্ষুধার জ্বালায় পথের পাশে কাঁদে এক ভিক্ষুক
দাতা রাজা যায় সেই পথে, তাই হ'লো উত্সুক।
ডাকিল রাজা তার সাথে যাওয়া একজন সহচরে
শুধাইল রাজা, বৃদ্ধ বসিয়া কাঁদিছে কিসের তরে।
জানিল রাজা, বৃদ্ধ কাঁদে অভাবেতে আছে তাই
ভাবিল রাজা, অভাবটা তার দূর করা আজই চাই।
কণ্ঠ হইতে খুলিল রাজা, দামী এক মণিহার
ঘোড়াতে বসিয়া হাতে তা ছুড়িয়া দিল তারে উপহার।
ক্ষণিক চাহিয়া বৃদ্ধ দিল তা, ঝুলিটার পাশে রাখি'
এমন হেলায় ক্ষুব্ধ রাজা, দেখিল দূরেতে থাকি'।


হঠাৎ দেখিল, আসিল কে যে, বসিল বৃদ্ধের পাশে
হাতটি তাহার গাত্রে রাখিয়া, মুখেতে মধুর হাসে।
নিজের ঝুলিটি খুলিয়া করিল বাহির চারটি রুটি
জলের সাথে খাইল তাহারা একেক জনেতে দু'টি।
খাওয়া শেষ হ'লে হাস্য-বদনে বৃদ্ধ তুলিল হাত
আগন্তকের মঙ্গল চাহি' করিল সে মুনাজাত।
ক্ষণিক পরেই বৃদ্ধ উঠিয়া চলিল নিজের পথে
আগন্তকের সম্মুখে রাজা আসিল আড়াল হ'তে।
শুধায় তাহারে, রুটির সহিত এমন কিইবা দিলে
যাহা পারেনি মোর মণিহার - আদায় করিয়া নিলে?


আগন্তকের মুখেতে হাসি - নাই যদি মেলে সাজা
মনিহার-দানে কোথা ভুল ছিল বলিতেছি তবে রাজা -
অভাব যাহার তাহারে কিছু করিতে হইলে দান
আনত হইয়া ভুমিতে নামিয়া দেখাইবে সম্মান
জানিতে হইবে আসল অভাব কি, তার কতটা চাই
যতটুকু হোক, চেষ্টা হইবে, তাহারে দেওয়ার তাই।
দান নয় তাহা, দেওয়ার গর্বে দিলেও অঢেল সোনা
অথবা তাহাকে গচাইয়া দিলে ঘরের আবর্জনা।