পাতাঝড়া বৃক্ষ উন্মুক্ত আকাশ চাতকের কন্ঠসুর
যে তল্লাটে আমি দাড়িয়ে আছি
সে আদিবাসী গ্রামের শুকনো নদী
ধূধূ পলিমাটির বিশাল ধূসর চর
পাল তোলা নৌকা মাঝি আর গাংচিল
কুয়াশার সকাল হিমেল হাওয়া একবিন্দু শিশির
কেউ ভালো নেই আজ বসন্ত পহেলায়।
সুতাকাটা ঘুড়ির অবিকল নিশ্চুপ দুরন্ত ঈগল
দিগন্তের একরাশ খোলা চুল বদ্ধ খোঁপায়
ছায়াবিথীর মন্থর রাগের সুবর্ণ যাত্রায়।
নির্ঘুম শতরাত লগ্ন প্রভাতে ক্লান্তির হাত
ভালোবাসা জন্ম ভিক্ষা করে ফিরে আসে
ভাঙ্গে হৃদপ্রাচীর মুছে দেয় গোধুলির রং।
কেউ ভালো নেই আজ এই বসন্ত পহেলায়।
জন্ম তখন আজন্ম পাপ বলে মনে হয়
অনুভূতি ভেসে চলা শৈবালের মত।
হৃদপিন্ড ঠুকে ঠুকে খায় নিশ্চুপ প্রেম
গনন বিদায়ী বাক্যে মার্শাল আর্ট।
সূবর্ণ যাত্রা জন্ম অনুভূতি আর প্রেম
কেউ ভালো নেই আজ এই বসন্ত পহেলায়।
তুমি নেই উর্বর মৃত্রিকা আমাকে আঁধারে ডাকে
গন্ধহীন বুনো ফুলের অশ্রুকণার কালো পর্দায়
ধূলা-বালির নগ্ন নৃত্যের আকস্মিক নিরবতায়
কৃত্রিম ভালোবাসার আসক্ত স্মৃতির জ্বলজ্বল উৎসবে
স্থির অভিমানের নিরব নয়নে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে
ডুব সাঁতারে কাঁচ ভাঙ্গা শব্দের টুকরো টুকরো জীবনে
আমি ভালো নেই আজ এই বসন্ত পহেলায়।
রূপালী দুঃখের মৃত নন্দন ছায়ায় গন্তব্য নেই
নিরাশার খুব কাছ থেকে উড়ে আসে কবিতার ঘুড়ি।
অজস্র ধোঁয়ার মত নেমে আসে ঝাঁক ঝাঁক জ্যোৎস্না
প্রগাঢ় মমতায় কুয়াশার ওড়নায় স্বপ্ন সন্ধানে
হাড়ানো ভালোবাসার অশ্রুঝরা নগর সম্মেলনে।
বিদীর্ণ দীর্ঘ ভগ্ন শ্বাসে ঘাস ফড়িঙের উদ্যানে
কেউ ভালো নেই আজ এই বসন্ত পহেলায়।
অপতিরোধ্য চোখের জলে ভারাক্রান্ত বিশ্বাসে
ক্ষত-বিক্ষত নিজেকে খুব অসহায় লাগে
প্রচন্ড ক্ষোভে খুন করতে ইচ্ছে হয় নিজেকে
ক্রমশই বিচ্ছিন্ন হয়ে পরি অনাকাঙ্ক্ষিত দ্বন্দ্বে
শূন্যতা আমাকে ডাকে তুমিহীন অরন্যে
নির্জন দুপুুরে বিষন্ন বিকালে নিস্তেজ অনুভবে
ছায়াবিথী আমি ভালো নেই সেই উৎসবে
আমি সত্যিই ভালো নেই বসন্ত পহেলায়।
তারিখঃ ১৭/১২/২০ ইং
মির্জাপুর ময়মনসিংহ