১৩ জুন ১৯৮৬  


এখন আমার হাতে অখণ্ড অবসর,
সকাল সাতটায়  তরিঘড়ি  করে
অফিসে যাবার তাড়া নেই।
সংসারে পরগাছার মত দিন গুনি,
বাড়িতে বসে থাকি অলস অবসন্নের মত।
স্ত্রী, পুত্র -কন্যা  সবাই কেমন এড়িয়ে চলে,
আগের মত আর চলতে পারিনা।
দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছি
শারিরীক এবং মানষিক দিক থেকে।
বাড়ির কুকুরটাও কেমন  অবজ্ঞার চোখে দেখে।
কারো কাছে প্রয়োজনীয় জিনিষ চাইলে
অপ্রয়োজনীয় কথা শুনতে হয় প্রায়ই।
অনেক কৈফিয়ত শেষে হয়তোবা
মিলেও যায় কাঙ্খিত জিনিষ।
আনমনা হয়ে  অতীতে তাকালে
প্রিয়জনেরা রুষ্ট হয়ে বলেই ফেলে,
বুড়োর ঢং দেখ!
অথচ আমিও সচল সজীব ছিলাম কোনোদিন।
যে সংসারকে তিল তিল করে গড়েছি
অনেক কষ্টের  বিনিময়ে,
সেখানে আজ আমি অপাংক্ততেয়!
যদি কোন মনোরম বিকেলে
ছেলেকে ডেকে বলি,
খোকা একটু  বসনা  আমার কাছে,
দুটো কথা বলি।
কাজ আছে বলে সুকৌশলে
আমাকে সে এড়িয়ে যায়।
অথচ এমন একদিন ছিল,
যেদিন আদরে আদরে
ভরিয়ে  দিতাম ওর  ছোট্ট মন,
ওর কল্যাণ কামনায় ব্যস্ত থাকতাম সারাক্ষণ!
কিন্তু এখনতো  আর
ও  সেই আগের মত নেই।
আমার মত বৃদ্ধের কাছে বসে
সোনালী বিকেল মাটি করবার মত
সময় কোথায় তার!
তাই আমার মত বৃদ্ধদের
চিরচারিত প্রথায় হাল ছেড়ে দিয়ে
যুগে যুগে পরগাছার মত
কাটাতে হয় প্রিয়জনদের সাথে আমৃত্যু!