ভিক্ষুক এসে হাঁক দিল দ্বারে; ভিক্ষা চাই,
রেগে বললাম, কাজ করোনা কেন?
জবাবে সে বলে,
শরীরে শক্তি নাই বাবা,
এ ছাড়া বয়সও হয়েছে অনেক।
আরও বোল্লো, আমার অনেক সম্পদ ছিল,
আবারও ধমকে তাকে বিদায় করলাম।
দিন কয়েক পর এসে আবার ভিক্ষা চাইলো
আমি কিছু বলার আগেই
কর্মরত গৃহকর্মী অবাক হয়ে শুধালো তাকে
চাচা আপনি এখানে এ অবস্থায় কেন?
গৃহকর্মীর পানে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি মেলতেই
বলল সে; অনেক ধনী গেরস্ত ছিলেন উনি।
সদয় হয়ে ভিক্ষুককে চাচা সম্বোধনে বললাম
আপনি বসুন এবং খুলে বলুন সব।
তিনি বসলেন এবং অনেক কথাই বললেন
যার সার সংক্ষেপ হলো-
দুশো বিঘা জমি এবং আশীটা গরু ছিল।
এক রাতে গোয়ালে দু’সারিতে বাঁধা গরু
সর্বনাশা ভাঙ্গনে নদীগর্ভে চলে যায়
সেই সাথে বসত ভিটাও।
এসব বলে ডুকরে কেঁদে উঠলেন
এবং বললেন; রশি বাঁধা অবস্থায়
গরু গুলো কত কষ্টে মরেছে ভাবতে পারিনা!
আরও যোগ করলেন-
ফকির এলে বাড়ির গেটে তাকে ভিক্ষা দিতাম,
ছেলে বিএ পাশের পর মারা গেল
অথচ কখনও কারো সাথে দুর্ব্যবহার করিনি।
বউকে নিয়ে এখন বস্তিতে থাকি,
তাকে অনেক বলেছি
মানুষের বাসায় কাজ করে কিছু আয় করো।
কিন্তু সে সাফ বলে দিয়েছে-
জীবন গেলেও বাসায় কাজ করতে পারবোনা।
এসব জেনে তাকে বলেছিলাম,
আপনি আসবেন; সাধ্যমত যা পারি দেখবো।
অনেক বছর কেটে গেছে,
মাঝে মধ্যে তার কথা মনে পড়ে,
আজ বেশী বেশী মনে পড়ায়
কবিতা নয় জীবনের কথা লিখলাম!


(সত্য ঘটনা)
২০-১০-২০১৬