সাদা ভাত হাঁড়িতে ভিজাত গ্রীষ্মকালে মা,
সকাল বেলায় বাসি ভাত, মরিচ পেঁয়াজের ঝাঁ।
কি মজা হত, যখন থাকতো ভাজা ইলিশ মাছ,
ভুলিতে পারিনা সুন্দর সময়,স্মৃতির উঠোনে আজ।
মায়ের হাতের পান্তা উস্তা, সবার তৃষ্ণার জল,
সিং কই আর রুই কাতলা, নাদুস নুদুস বোয়াল।
খাল বিলগুলো শুকিয়ে গেল নদীর স্রোত হলো গল্প,
চাষের মাছে তৃপ্তি গেল , পানতা ভাতে অল্প ।
পুকুর জলে সাঁতার ছিল, গ্রামীণ ফোনে গান
মাটির হাঁড়ির বাসন-মায়ের, ঢেঁকিতে বাধে ধান ।
খেজুর গাছে রসের হাড়ি, মুড়ি মটকা মিঠাই,
দিন চলে যায় ঠিকই আহা, কিছুই ভুলি নাই।
বাঁদর নাচের বাজনা ছিল, বাইস্কোপের ছবি,
শীতের রাতে নাড়ায় আগুন ভোরের বেলার রবি।
স্কুল পালানো ছেলেবেলা , অভিজ্ঞতার রীতি
ভোরের আজানে ঘুম ভাঙাতো মা, নামাজ পড়ার স্মৃতি।
ইঁদুরের গর্তে দাঁত রেখেছি , জ্বরের ভান করেছি আবার
মা বলতেন আজ পড়বে না স্যার, দাঁত পড়েছে তার।
কলার পাতায় বাঁধি ঘর আহা, হায়রে শৈশবের সংসার,
তাসের প্যাকেটে সোনার মোহর, খুঁজি তারে দিন ভর
জোলা পাতি খেলে সন্ধ্যা আসে তবু হয় না খেলা শেষ,
পুতুলের বিয়েতেঅশ্রু ঝরে মিছামিছি রাধি পায়েশ।
মনে পরে আজি, খাওয়াতো মা, কোথায় দুধের বাটি,
আহা লুকিয়েছে সে, হারিয়ে গেছে তারই হাতের চিঠি।
মসজিদের মক্তবে যেতে হতো কুয়াশায় ঢাকা পথ
বাঁশঝাড়ের পাশে দাদির কবর প্রতিদিন জিয়ারত।
মা নেই আজ,নেই খেজুর পাটিতে গল্প শোনার প্রাণ,
গাভী গুলো নেই, নেই মায়ের হাতে রাধা পায়েসের ঘ্রাণ।