অাজ আর কোন দিক নেই, দশদিকই ঘোর তমসা
উত্তর থেকে ধেয়ে আসছে আগমনী বার্তা
সাজো সাজো রব আর কাশফুলের নাচন
খুব উপভোগ করছি মা,
গায়ে দশ বছর আগের তোমার দেওয়া সালোয়ার.....
অদ্ভুত একটা ঘ্রাণ এসে লাগছে মনে।
মনে হচ্ছে তুমি খুব কাছেই আছো
তৈরী করছ বিজয়ার নাড়ু,
উফ্ কি ঘ্রাণ ! ওই তো তোমার ঘর্মাক্ত আঁচল
বাবা চেঁচিয়ে বলছেন," একটু কর্পূর দিও গো"
বেশ ছিলাম আমরা জমজমাট একটা চিত্র.....
কি সেই আয়োজন ! খাবার মেনু, নতুন জামার....,
আজ রান্নাঘরটা জমাট অন্ধকার
মাত্র মিনিট কয়েক বাসন-কোসনের ঠোকাঠুকি
একা মানুষ দু'মুঠো চালে ডালে....।
দলে দলে মানুষের মিছিল চলে যাচ্ছে
আমার হৃৎপিন্ড দুমড়ে মুচড়ে।
আগে পূবের বাতাসে অনুরাগ ছিল
কেমন একটা অন্তরের উত্তাপ,
বলতাম পূবালী.......,
প্রতিদিন বয়ে যেত আলতো গাল ছুঁইয়ে।
আর দখিনায় মেতে থাকার উৎস
বা হাতের আঁচল নেড়ে যেন কার অবাধ প্রশ্রয়,
অখন্ড সময়ের এলোমেলো মুগ্ধতা
ঘর দোর, সরঞ্জামে বৈশাখী তান্ডব
আমি আর আমার ঝড়ের চুক্তির বোঝাপড়া।
পশ্চিমী ম্লান অালোয় মনে পড়ত তোমায় মা,
একরাশ ভিজে এলো চুল ছড়িয়ে তোমার সূচীকর্ম.....।
আজ উত্তুরে বাতাস দখল করেছে চরাচর
ঈশান কোনটা গাঢ় তমসায় আচ্ছন্ন
নৈঋৃতের বায়ু কার্বণ নিশব্দে শুষছি মাগো,
কোথায় যাবো মা? উর্দ্ধ-অধ: বিবর্তনের
মৃদু ইশারা টেনে নিতে চায় বেনামী বন্দরে
মাঠ,সীমা ছাড়িয়ে যেখানে তুমি থাকো না,
আরো কত চুক্তি বাকী ?
দূর থেকে ভেসে আসা আবাহনী
আমার ভিটেয় জমাট আঁধারে
গায়ে গাছ হয়ে জমে যাচ্ছে ধীরে
একযুগ স্থায়িত্বে নিশ্চুপ হয়ে,
ফিলামেন্টের তারে জং ধরেছে
তাই নিস্প্রভ, কিছুদিন পর আমি এক-
পাথর হয়ে যাব, নৈঋৃত থেকে নেমে এস মাগো,
একবার ছুঁয়ে দিয়ে যাও তোমার মাতৃত্বের ঘ্রাণ,
আজ আর কোন রেসিপী নেই,কোন ফর্দ,
কোন আগমনী নেই, কেন উৎপাত্
নতুনত্ব ভালো নয় মা, জনপ্রতি ফিলামেন্টের তারে--
শুধু ছুঁয়ে দিয়ে যাও তোমার অকৃত্তিম অালো
অামি খুঁজে নেব তোমায় ন্যাপথলি গন্ধে পুরানো সালোয়ারে,
অন্তত পাথর হবার আগে ।