পর্ব-প্রথম

ছাড়বি না হাত আসছে টেরেন আপু
দেখব কেমন কু ঝিক্ বাঁশির ভে'পু
মাঠ পেরিয়ে দে'ছুট আপু বাঁচার আনন্দে
কাশের আলাপ ছুঁবো চল্ সবার অজান্তে।          

আগে যায় কার কত দম রেডি স্টেডি গো
দিদান বলে দৌড়ে আমি তোকে হারাবো।
হিংসেতে তুই ল্যং মেরে দিস পিছে ফেলে
দেখবো এবার ট্রেনের সাথে পাল্লা কে চলে।

মানুষ কতো? ভয় কি এমন ? যাব দুরান্তে
চল চলে যাই ওদের মতন মনের আনন্দে।
ঠিক বুঝেছি ভেংচি বাদর,বলবি যাবো না
জন্ম ভীতু পঁচা, হুতোম,একলা বাড়ী যা' ।

যাবো আমি সাত সাগরে ঘুরবো দেশান্তর
ঝিনুক তুলে হার বানাবো মুক্তো মতি হার
চাস যদি তো তোকেও দেবো আপু ট্রেনটা'
চলেই যাবে চলনা জোড়ে জিতব বাজী'টা।

জানিস কতো মুক্তো মনি রাজ রানীদের ঘর
বইতে আছে খোঁজ পেয়েছি মাঠের তেপান্তর।
ঘোড়ার গাড়ী দশ পালোয়ান রাজার দরবার
আনব অনেক হীরে মোতি সাজব ঘোর সওয়ার।

না বাবা না সে কোন্ রাজার আজব দরবার
ছল করে সে কয়েদ বানায় সুয়োরানীর চর
পাগল হলি দুর্গা রে তু'ই পাঠশালে চ' দেরী
পড়বে পিঠে বেতের চরম ঠাকুরমশা'র ছড়ি।

যাসনে কাছে ট্রেনের পিছে যন্ত্র আটা আছে
টানবে নীচে ফুরুৎ জীবন পিস্টে যাবি শেষে।
ছাড়বো না হাত দু'দিন বাদে এট্টু বড় হই
যাবোই যাবো বিদেশ বিঁভূ' ই আমরা দু'জনেই।

সত্যি তবে তিন সত্যি বলনা  ছুঁয়ে হাত
রাগবো না আর ভাব এবারে রইল শপথ।
বড় হয়ে আনব সেঁচে সাত সামরিক ঢেউ
পাঠশালে চ' শক্ত দু'হাত সাধ্যি খুলে কেউ ?

                  পর্ব-দুই  

হুতোম প্যাচার নকশা আঁকা হেই পালোয়ান ব্যঙ
বই,খাতা তোর স্বেচ্ছা-স্বাধীন কাঁধ ঝোলানো ব্যাগ।

প্রেমের ছবি অগাধ আমার ইস্কনের ওই  ধাঁচে
উড়িয়ে ধূলো রাস্তাগুলো সই পাতিয়ে গেছে।

সন্ধ্যা নামার প্রথম থেকেই বারান্দা শুনশান্
জোনাকজ্বলা হাতের নাচন যায় ভরিয়ে প্রাণ।

স্বভাবটা সেই রয়েই গেছে সূর্যটা নেই আলো
স্মৃতির পাতায় ঠাঁই ধরেনা দৃশ্যটি ভাগ হলো।

আমের বনে জাগত নেশা মগডালে কে কত
মিঠে আমের কোঁচড় ভরা দুপুর ছিল শত।

বলনা আপু ফড়িং কত ব্যাঙের খোরাক দিতে
কোলা দিদির হাপুস খিদেয় চলত চালান হতে।

নুপুর পরা পা দুখানি কলসি কাঁখের মেয়ে
যায় দাগিয়ে মন রাঙিয়ে ফুলের রেনু নিয়ে।

তবু আঁধার নামে নুপুর ঘিরে ঝলসা দুপুর'টা
বর্ষা তো নেই  কোলার নাচন নষ্ট সময়'টা।

ফার্স্ট বয়'টা বন্ধু ভীষন আমার প্রিয় সই
ঘন্টা দিলে টিফিন জুড়ে কুমীরডাঙা ওই...।

অাঁধারভরা টিমটিমে মোম আমি,তুই আর মা
সুয়োরানী, ছমছমে গা' সাক্ষী বারান্দা......??

           পর্ব--তিন
             (দুর্গা)
বইয়ের পাতায় মন বসেনা
       ক্লাশের পড়ায় ফাঁকি
টিফিনবেলায় তোতে আমায়
       পেয়ারা তলায় থাকি।
দেখলি কেমন পড়ল ছড়ি
        গুরুমশা'র ক্লাশে
মুখটি বুঁজে পেছন পানে
         হাসছিলি খুব কষে।
জানিস নাকি টুনটুনিদের
          চারটি বাসার খোঁপে
ডিম ফুটেছে গোটা দশেক
          ছোট্ট টুনি থাকে।
              
              (অাপু)
আজ টিফিন ছুটি, মেলা বসে
          ময়না পাড়ার মাঠে
নাগরদোলায় কাঁপবি ভীতু
           চল্ দেখি কে বটে!
ইয়্য়া বড় নাগরদোলন
            তেমনি গতিবেগ
বেজায় মজায় রোমাঞ্চে মন
            পুরবে ভাবাবেগ।
              
               (দুর্গা)
কি খাওয়াবি মুড়কি,মোয়া
           জিলিপী আর ক্ষীর
দাদুর পকেট বল্ কেটেছিস
            মেলার এ ফন্দির।
শুনব যখন তাইরে নানা
            দাদুর মুগুর ভাজ্
মুচকে হেসে আড়াল হবো
            দিলাম বলে আজ।

( শিঁশুকালে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুত্বের স্মৃতির উদ্দেশ্যে আমার দশ বছর আগের রচিত কবিতা নিবেদন)