এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল


কুড়ি বছর আগের মতন---
তখন তুমি আমায় বৃষ্টি বলতে,
নিজে তুমি মেঘ ছিলে--
বন্দী ফ্রেমে ছবি আর ,
জমা খরচের খাতায়-
অহেতুক বুনতে চাওয়া-
শাল্মলীদের কাব্য কথা।
দেশ বিদেশে,সাগর-পাহাড়ে
কত না কায়দা-কানুন,
কলেজ ফেরার পথে
সেই যে পিছু নিলে--
তারপর থেকে আমার
অণু আকাশেরা ম্লান হলো
বললে মেঘ তো বৃষ্টির
পেছনেই থাকে--
সীমিত চরাচরে আমি তুমি,
তুমি আমি ,মেঘ বৃষ্টি,
বৃষ্টি মেঘ ব্ব্যাস্ ---।
তারপর বৃষ্টি আর বৃষ্টি--
নদী হল,সাগর হল
এল আচ্ছাদন,
আমাদের কাব্য হল,বৈঠক হল,
খ্যাতি এল, সাথে ধিক্কারও
চোখ পড়েনি তোমার
আবুচাচার খড়ের ছাউনি
উড়েছিল ঝড়ে , নালিশ ঠুকলো বেচারা---
অন্তরীক্ষে তুমি তাই
পেয়ে গেলে শাল্মলীদের
অবাধ আস্কারা
আমার বসুধায় প্রাণের ছত্রাক যখন,
দশ বছর আগের খরায় ---
আমায় বললে "ক্রান্তি",
সন্তাপ সরিয়ে
ঠায় দাঁড়িয়ে ম্লান বেদীতলে
একে একে পার হচ্ছে
ফাগুন হাওয়ার মাস,
আরও পাঁচ বছর পর--
কেড়ে নিচ্ছে
হৃদয় আচ্ছাদিত অথৈ উড়াণ , মিশে যাচ্ছে
আমার সুন্দর সীমান্ত--
জলেরা হলুদ ক্রমাগত
নীল আর শ্যাওলার মিশ্রণ
এখানে ওখানে কাটাকুটি শব,
চতুর্দিকে যন্ত্রণার নিষাদ,
বললে অাবারও "নিবৃত্তি"--
তুমি বৃষ্টি নও আর
বাতানুকূলে সেটে গেছো
ম্রিয়মান ফেলে যাওয়া
কিছুটা সময়,


আজ আমি নিন্দামন্দে
গল্পের মেয়ে শুধু --।


পশ্চিমের কাজ শেষে
ছুটে এল ওপাড়ের মেঘ
গনগনে রোষে ঘোর কালো
ছেয়ে গেল চৈত্র্যময়
প্রখর দহন,
হাঁক দিল -- "কোথা মেঘ, মেঘ কোথা"?
আলুথালু বেশবাস ফাগুনে আগুন,
খসে গেছে খচিত অাঁচল, "বৃষ্টি কি তুমি?
অামাদের দেশে আজ ঝড়বে কি না বলো"?
কুড়ি বছর আগের মতন
ব্যাথার দু'চোখ ভার--
"কে বলেছে প্রখর খরা " ?


জমা জল নেয়ে এল পাহাড় ভূ-ভাগ,
এক পশলা ভিজে  
এবার আচ্ছাদনহীন
থৈ থৈ তিনভাগ জলে
অন্তহীন ভাসাবো আঁচল
আমি জল,জল আমি
সারাদিন খেলা দুষ্টুমি।