আমি যেখানে এতদিন ধরে আছি,
সেখানে বাস করে আমারই মত আরও অনেকে,
আমারই মত অন্তঃসারশূন্য কিছু মানুষ,
অথবা মানুষের মত দেখতে কিছু শরীর।
যেখানে পরিচয় হারিয়ে যায়, শয্যা-সংখ্যার ভিড়ে।
এই মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন আমার নাম
বেড  নাম্বার পঁয়তাল্লিশ।
হাতের কব্জিতেও বাঁধা আছে দুটো সংখ্যা-
চার এবং পাঁচ-!


কবে এসেছিলাম এখানে, মনে নেই।
আমার ধারেকাছেও কেউ কখনও আসে না,
আসেনি, আসবেও না কোনদিন।
আমার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আছে
আমি পাগল,আমি উন্মাদ, আমি হিংস্র।
ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্তাক্ত করি প্রতিটা অবয়ব।
অমানুষিক জোরে এরা আমায় বেঁধে রাখে,
ফুটে ওঠে আমার গায়ে রক্ত জমাট বাঁধা চাকা দাগ।
আমার ছিঁড়ে ফেলে ইচ্ছে করে সব-
আমি মুক্তি চাই, আমি মুক্তি চাই।


ভোরের আলোয় অথবা অন্ধকারে,
স্নায়ুতে দুর্নিবার বেগে প্রবাহিত বিদ্যুৎতরঙ্গ
আমার বেঁচে থাকাকে ভোঁতা করে দিতে চায়-
অসহ্য আর্তনাদে চৌচির হয় চারিধার।
বেড নাম্বার পঁয়তাল্লিশ মিশে যায়
পঁয়তাল্লিশ নাম্বার শয্যায়।
চোখের জল আর শব্দের গোঙানিতে,
আবছা হয়ে যায় দৃষ্টির সীমানা;
শুধু কঠিন যন্ত্রণা কাঁধে জেগে থাকে
দুটো সংখ্যা- চার এবং পাঁচ , আর
ঘুমন্ত পাগলামির মাথায় নিশ্বাস ফেলে
মর্মান্তিক অট্টহাসি-বেড নাম্বার পঁয়তাল্লিশ!!