ওপাড়ার পটল ঘোষ,
কেরানীর কারবার,
একদিন কবি হবেন,
মনে ভারী সাধ তার।


সেইভাবে চলে তার,
প্রস্তুতি- মহড়া,
গিন্নী সদাই খ্যাঁপা,
বাপরে, কি ঝগড়া!


গতকাল সকালেতে,
হাতে নিয়ে খাতা-পেন,
মোড়া টেনে টেবিলে,
যেই নাকি বসেছেন-


অমনি গিন্নী বলে,
“শুনছো, বাজার যাও।’’
“তুমি বড় বেয়াদব্,
সাধনাতে বাধা দাও!”


কথাখানি মুখ থেকে,
পড়েছে কি পড়েনি!
সুর তুলে সপ্তমে,
গিন্নীর ধাতানি।


শ্রীহরি সহায় রেখে,
পটল তো রাস্তায়,
থলে হাতে বাজারে,
দাও নেবে সস্তায়।


হাত ভরে গৃহমুখে,
পটল বেশ হাঁটছেন,
ওদিকে সেলুনে বসে,
বেপাড়ার রবি সেন-


“আরে, ও পটলদা,
দাঁড়ান না, আস্তে;
কাব্যের সখ নাকি!
ঘাষফুল না কাস্তে?”


দুই ভুরু জড়ো হল,
পটলের ভারী রাগ,
“আরে মশাই কবিতায়,
পলিটিক্স বাদ থাক।”


পটল তো হাঁটা দিল,
রবিটিকে ছাড়িয়ে,
বাড়ির মোড়ের মুখে,
জগুদা যে দাঁড়িয়ে।


“কি রে ভাই পটলা,
লেখালেখি কতদূর?”
“চলছে তো জগুদা,
চেষ্টা তো ভরপুর।”


“বেশ বেশ, ভালোকথা,
কালকের মিছিলে,
লিখে দে স্লোগান কটা,
শেষগুলো মিলিয়ে।”


পটলের মুখে ফের,
বিরক্তি একরাশ-
“ওরে বাবা কবিতায়,
রাজনীতির নেই বাস।”


“শোন্, শোন্ ভাইটি,
তুই বড় আবেগী,
এগুলো প্রফেশনালী,
চোখ বুজে ভাববি।


তিনটে স্লোগান পিছু,
তিন হাজার গুনবো,
ভাব আজ ভালো করে,
কাল এসে শুনবো।”


ভেঙ্গে পড়া মন নিয়ে,
গুটি পায়ে ফিরেছেন,
কবিতা বিক্রি হবে,
একি তিনি ভেবেছেন?


টেবিলের কাছে এসে,
চক্ষু চরকগাছ!
ছাগল চিবোয় খাতা,
কচমচে সে আওয়াজ।


হায়! হায়! সব গেল-
কবি আর কবিতা,
সাধ্য ও সাধনা,
ঘুচে গেল সবই তা।