ছেলেটি বাড়ির বাইরে আছে।
সাইবার ক্যাফেটা একটা
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে।
ঠিকানা দিয়ে গেছে কিশোর।
কিন্তু ওখানে কাউকে যেতে নিষেধ করেছে সে।
এমন কী স্বয়ং তার মাকেও।
ফেসবুকেও তেমন কোন প্রতিক্রিয়া
দিচ্ছে না সে।
টেক্সট মেসেজ এর ও রিপ্লাই দিচ্ছে না।
মেসেজ আদৌ দেখছে কিনা তাই কে জানে?
ফোন দিতে নিষেধ করেছিলো ও।
তারপরও দুবার ফোন দিয়েছিলো মা।
রিসিভ করে নি।
হয়তো কাজে খুব ব্যস্ত ছিলো।
কাল লামিয়ার জন্মদিন।
কিশোর বাড়ি থাকলে অনেক
ধুমধাম করেই জন্মদিন পালিত হতো।
সেই করতো সব।
এবার ও বাড়ি নেই।
কে করবে এসব।
বাবা বলেছিলো,
একটা কেকের অর্ডার দিয়ে আসি।
লামিয়া নিষেধ করলো।
বললো,ভাইয়া নেই।
কেক দিয়ে কী হবে?
এমনিই ভালো কাটবে।
কাউকে নিমন্ত্রনও করা হয় নি।
শুনেছে,ওদের নাকি একটা ফেসবুক পেইজ আছে।
সেখানে ওদের সব কর্মকান্ড পোস্ট দেয়া হয়।
টুইটারেও আপডেট থাকে ওদের তথ্য।
মা সেগুলো মাঝেমধ্যে দেখে।
কিন্তু তাতে মন ভরে না।
পাত্রী দেখার স্বাদ তো আর
নাম শুনে মেটে না।
বড্ড ইচ্ছে হচ্ছে ছেলেটাকে দেখতে।
একসময় অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধে যেত মানুষ।
জীবন হাতে নিয়ে লড়াই করতো।
অনেক ক্ষয়ক্ষতি হতো তখন।
এখনও কম হচ্ছে না।
বরং একটা ডিজিটাল দেশ এর জন্য
এই ক্ষতিটা যে কোন মহামারীর চেয়েও ভয়ানক।
এখন আর শুধু হার্ডওয়্যার এ যুদ্ধ হয় না।
হার্ডওয়্যার দিয়ে সফট্ওয়্যার চালিয়ে
তবেই না যুদ্ধ করতে হয়।
সাইবার যুদ্ধ।
নিজের জন্য,পরিবারের জন্য,
মানুষের জন্য,দেশের জন্য।
যুদ্ধ চলে খুব ভয়ানক ভাবে।
কি প্রতিবাদী ভাষাই না থাকে
তাদের সোস্যাল মিডিয়ার লেখাগুলোতে।
থাকবেই তো।
এরা বাংলার দামাল ছেলে।
একাত্তরেও এরা ছিল।
পার্থক্য একটা আছে।
আজ আর মানুষকে জীবন দিতে হয় না।
আপামর জনতা যুদ্ধে নামে না।
এ যুদ্ধে শুধু উচ্চশিক্ষিতরাই অংশ নেয়।
অল্পশিক্ষিতও আছে কিছু।
তবে তারা স্বশিক্ষিত।
হ্যাকিং এ বিশেষ দক্ষতা আছে।
এদের প্রত্যেকের ওয়ালপেপার
রক্তাক্ত বা বিমর্ষ,
ভয়ানক সব ছবি বা কোড।
এগুলো প্রমান করে,
হ্যা,এরাই অগ্রগামী।
এরাই লড়তে পারে।
লড়ছে দেশের জন্য।
এদের নাম শুনলে যে কেউ ই কেঁপে উঠে।
ভয়ে নয়,অদ্ভূত মানসিকতায়।
এদেরকে না দেখলেও শুধু শুনলেই হয়।
এসবই মা জানে।
ছেলে প্রায়ই বলতো তাদের টিমের কথা।
তাদের কাজকে কিভাবে
ধনধান্য করছে করছে পত্রিকাগুলো।
দেশের বুদ্ধিজীবীরা।
কিশোরের বাবার তো উচ্ছ্বাসই উচ্ছ্বাস।
ছেলে এখনও চাকরি পায় নি।
মাস্টার্স শেষ করেছে দুবছর।
কিন্তু মোটেও তার জন্য চিন্তা হয় না বাবার।
কারণ বাবা জানে তার ছেলে একদিন বড় হবে।
দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।
দুফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো মায়ের চোখ দিয়ে।
শত হোক,খোকা এখন যোদ্ধা।