আমাদের এই ছোট্টো ঘরে
খেলত যখন ফুলকলিরা
আনন্দে ঘর উঠত ভরে
আসত উড়ে মৌমাছিরা।


মধুর সুরে বাজত বীণা
আসত ভেসে ইমন তান
প্রভাতবেলা ঘুম ভাঙাত
কিচিরমিচির পাখির গান।


ফুলকলিরা পাখনা মেলে
জমায় পাড়ি দূর প্রবাসে
শরৎ এলে শিউলি বকুল
পড়বে ঝরে সবুজ ঘাসে।


বুলবুলিরা দিচ্ছে উঁকি
গাছের ডালে পাতার ফাঁকে
ফুলবাগিচায় কৃষ্ণভ্রমর
গুনগুনিয়ে খুঁজছে কাকে?


দুলে দুলে মায়ের কোলে
বলত শশী আয় রে আয়
দুধের বাটি ধরিয়ে দেব
পরিয়ে দেব নূপুর পায়।


ওদের মধুর ডাকটি শুনে
হারিয়ে যেত আমার মন
রক্তরাঙা ঠোঁটের হাসি
কত সাধের প্রাণের ধন।


আলমারিতে বইয়ের রাশি
যেমন ছিল তাই এখনো
উঠবে না আর আমার ঘরে
হাস্যরসের ঢেউ কখনো।


এঘর-ওঘর খুঁজে বেড়াই
শূন্য এখন সব বিছানা
কার তরে যে কেঁদে মরি
বৃথা আমার এই ভাবনা।


হলুদ হয়ে গাছের পাতা
মাটির ’পরে পড়ছে খসে
দুই গালেতে হস্ত রেখে
একলা ঘরে কাঁদছি বসে।


নানারকম খেলনাপাতি
সবাই এখন কেমন মূক
নরম হাতের স্পর্শে ভরা
ওদের দেখে পাই যে সুখ।


বৃষ্টি যখন ঝরতে থাকে
ফুলকলিরা চোখের পাতায়
অতীত দিনের সেসব কথা
অটুট আছে জীবন-খাতায়।