রূপসী বাংলা ঘুরিয়া দেখিতে
বাসনায় ছিনু মাতি
তাই আয়োজন করেছিনু মোরা
একটি চড়ুইভাতি।
দেখিতে গিয়ছি পাহাড়ি ঝর্ণা
সিন্ধুর মাঝে দ্বীপ
সে দ্বীপ যেন রূপসী বাংলার
কপালের মাঝে টিপ।
দেখিতে গিয়াছি সাগরের ঢেউ
পাহাড়ের উঁচু চূড়া
দেখিয়াছি সেথা আকাশের নীলে
মুক্ত বিহঙ্গ উড়া।
হিমছড়ি তটে করিয়াছে সবে
চড়ুই ভাতির রান্না
আমি দেখিয়াছি নির্বাক চোখে
বোবা পাহাড়ের কান্না।
পাহাড় কাঁদিছে ঝর্ণা ধারায়
ঝরিতেছে আঁখিজল
অশ্রুতে তার করিছে স্নান
তরুণ -তরুণী দল।
গোধূলী বেলায় সাগরের কুলে
মানুষের কোলাহল
তাকিয়ে সবাই সুরুজের পানে
দেখিতে অস্তাচল।
কপোত-কপোতী দেখিছে চাহিয়া
সাগরের রূপখানি
আমি দেখিয়াছি ক্ষুধিত সিন্ধুর
মায়াবিনী হাতছানি।
দেখিতে গিয়াছি সেন্টমার্টিন
ট্রলার করিয়া ভাড়া
সাগরের মাঝে ঢেউ সম্রাট
সামনে আসিয়া খাড়া।
ভয়ে কাঁপে বুক নিস্তার নাহি
সীমাহীন পারাবারে
নিশ্চিত সবে যাইতেই হবে
পাতালের কারাগারে।
দোয়া-কালাম আর মন্ত্র পড়িয়া
জীবন ভিক্ষা চাহিয়াছি
ক্ষণ পরে দেখি চক্ষু মলিয়া
সাগরবক্ষে ভেসে আছি।
এমনি করিয়া হেলিয়া দুলিয়া
ঢেউয়ের নাগর দোলায়
অবশেষে মোরা পৌঁছাই এসে
নারিকেল জিঞ্জিরায়।
দ্বীপ নয় যেন স্বপ্ন পুরী
নারিকেল গাছে ভরা সাগরের মাঝে সাগর কন্যা
রূপে গুণে মনোহরা।
ঝিনুকের দুল কানেতে তাহার
গলেতে শামুক মালা
অপরূপ সাজে সাজিয়াছে যেন
রূপসী সাগর বালা।
দেখিতে গিয়াছি রাঙ্গামাটি জেলা
সুদূর চাটগা হতে
পাহাড় ভেদিয়া চলিয়াছি মোরা
দূর্গম গিরি পর্বতে।
দেখিয়াছি সেথা ঝুলন্ত সেতু
বৌদ্ধ বিহার আর
কাপ্তাই লেক, সুভলং আরও
চাকমা বিহার।
রাঙ্গামাটি তার রূপে যে আমায়
করেছে আকর্ষণ
পাহাড় চূড়ার হাতছানি মোর
উদাস করেছে মন।
শ্যামল বরণ অঙ্গে তাহার
বহিছে রূপের বন্যা
জংলী ফুল খোঁপায় পরিয়া
সেজেছে পাহাড়ি কন্যা।
রূপসী বাংলা ঘুরিয়া ফিরিতে
অস্ত গিয়াছে রবি
নীড় হারা মন ফিরিয়াছে নীড়ে
মনেতে আঁকিয়া ছবি।
-------------------