কবিতা লেখার মুখ্য বিষয় কি?
কবিতা কেন গদ্য নয়?


আমাদের পাঠ্য পুস্তকের মাঝে লেখার যত নিয়ম আছে, যেমন পদ্য গদ্য প্রবন্ধ গল্প কবিতা, তা সব গুলো হলো বার্তা পাঠানোর একটি মাধ্যম, লেখক তার মনের ভাবকে এগুলির যে কোন একটি নিয়মে লিখে পাঠাতে পারে, তবে একটি বিষয় অবশ্যই মানতে হবে লেখক যে কোন নিয়মে লেখে বার্তা প্রেরণ করুক না কেন, সে নিয়মের কিছু রীতি নীতি অনুসরণ করতে হবে, যেমন গদ্যে লেখতে হলে গদ্যের কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে, পদ্যে লেখতে গেলে পদ্যের কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে, তবে যেহেতু কাব্য রচনার মুখ্য দিক হলো সংক্ষিপ্ত আকারে সাজিয়ে গুছিয়ে তাল মাত্রা লয়ের সাথে বলা, এর কারণে ছন্দের প্রয়োজন হয়, এবং অন্ত্যমিলের প্রয়োজন হয়, যাতে অল্প কথায় লেখকের বার্তা সকলের কাছে কাছে পৌঁছে যায়, এবং যারা পড়বে বা আবৃত্তি করবে তারা যেন ছন্দোবদ্ধ অবস্থায় পড়ে অল্পতে তৃপ্তি পায়, এ জন্যই কাব্য লেখার মুখ্য বিষয়, কাব্য মানেই হলো অল্প কথায় বার্তা প্রেরণ করা, এবং তাল লয় ছন্দ সুরের সাথে পাঠ করা বা আবৃত্তি করা ৷
তবে আর একটি বিষয় যে কবিতার মাঝে ছন্দ এবং অন্ত্যমিল এ দুটি নিয়মের একটিও থাকে না, তাহলে সে কবিতা হবে গদ্যের মতো, কিন্তু গদ্য নয়, কারণ এ কবিতা গুলোর মাঝে অবশ্যই তাল লয় আছে,  কিন্তু সাধারণ গদ্যের মাঝে তাল লয় নেই, তবে এ কবিতা গুলোকে মুক্তক ছন্দ বলা যাবে, অথবা মিশ্র ছন্দ বলা যাবে, কারণ এ কবিতা গুলোর মাঝে তাল লয় বিদ্যমান আছে, কিন্তু মাত্রা ছন্দ অন্ত্যমিল অমিল সমিল অবস্থায় আছে, যেমন কোন বাক্যে অথবা পদে অথবা চরণে, অক্ষরবৃত্ত ছন্দের ৬ মাত্রা পরেছে, পরের বাক্যে বা পদে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের ৫ মাত্রা অথবা ৭ মাত্রা পড়েছে, আবার পরবর্তী পদে অক্ষরবৃত্ত ছন্দের ৮ মাত্রা অথবা ১০ মাত্রা অথবা ৪ মাত্রা পরেছে, এভাবে ছন্দ মিশ্রণের মাধ্যমে কবিতাটি নির্মাণ হয়েছে, আবার অন্য একটি কাব্যে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের প্রথম পদে বা বাক্যে ৭ মাত্রা পরেছে, তার পরের পদে বা বাক্যে অক্ষরবৃত্ত ছন্দের ৮ মাত্রা অথবা ১০ মাত্রা পরেছে, আবার পরের কিছু পদে স্বরবৃত্ত ছন্দের ৪ মাত্রা করে পরেছে,  আবার মাত্রাবৃত্ত ছন্দের  ৫  মাত্রা অথবা ৪ মাত্রা অথবা ৩ মাত্রা পরেছে, এবং চরণের শেষে কোথাও কোথাও অন্ত্যমিল ঠিক আছে, আবার কোথাও কোথাও মিল অমিল অবস্থায় আছে,  তাই যে কোন অন্ত্যমিলের হউক না কেন, যে কোন ছন্দেই পড়ুক না কেন এ কবিতা গুলোর মাঝে কিন্তু তাল লয় বিদ্যমান আছে, এ কবিতা গুলো সোজাসুজি ভাবে গদ্যের মতো নয়, তাই এ কবিতা গুলোকে কে মুক্তক ছন্দ অথবা মিশ্র ছন্দ বলা যাবে, এগুলোকে নিছক গদ্য বা গদ্য কবিতা বলা যাবেনা, একটি কথা মনে রাখতে হবে কোন কবিতা তাল লয় ছাড়া নির্মাণ হয়না,  প্রত্যেক কবিতার মাঝে তাল লয় বিদ্যমান থাকে, কোথাও কোথাও ছন্দের ঝলকানি থাকে, কোথাও কোথাও অলংকারের ভাব মাধুর্য গাম্ভীর্য পূর্ণ পদ বাক্য থাকে, কোথাও কোথাও অন্ত্যমিলের অপূর্ব মিলন মেলা থাকে,  যার কারণে সে কবিতা গুলো পড়তে গেলে লেখক এবং পাঠকের মনের মাঝে ভাব তরঙ্গিত করে, তাই এই ধরণের কবিতাকে মুক্তক ছন্দ অথবা মিশ্র ছন্দ বলা উচিত, আমার কাছে এমনটি মনে হয়, কারণ আমি যতটুকু ছন্দ নিয়ে লেখাপড়া করেছি সেই  আলোকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে এটি বললাম, জানিনা আপনাদের মতামত কি?  আপনাদের সবার মতামতের অপেক্ষায় রইলাম ৷