মুক্তকছন্দ এবং মিশ্রছন্দের ব্যবহার রীতি ৷
মোঃ মাসুদার রহমান মাসুদ


একজন বিশিষ্ট কবির মন্তব্যে মুক্তকছন্দ এবং মিশ্রছন্দের
ব্যবহার প্রসঙ্গে, আবারও সংক্ষিপ্ত কিছু আলোচনা ৷


প্রিয় কবি মহোদয়; আমি এ ছন্দ-দুটো নিয়ে যতটুকু পড়াশুনা করে তথ্য উদ্ধার করতে পেরেছি তা হলো, মুক্তক ছন্দকে,  মুক্তক অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রূপ দেওয়া যায়, মুক্তক মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রূপ দেওয়া যায়, মুক্তক স্বরবৃত্ত ছন্দে রূপ দেওয়া যায় ৷
ছন্দের প্রয়োগ অক্ষরবৃত্তের ক্ষেত্রে  জোড় জোড় রাখতে হবে যেমন ৮+৪+৬+১০+১২
৬+৮+৪+১২+১০
এমন ভাবে ছন্দ বসানো যাবে,


স্বরবৃত্তের ক্ষেত্রে ছন্দের প্রয়োগ হবে,
৪+৪+১
৪+৪+৪+২
৪+৪+৪+৪+৪+৩
যেহেতু স্বরবৃত্ত ছন্দের চাল হলো সব সময় ৪ মাত্রার চাল তাই স্বরবৃত্তের মুক্তক হবে এমন নিয়মে,


মাত্রাবৃত্তের ক্ষেত্রে ছন্দের প্রয়োগ হবে,
জোড় জোড় এবং বিজোড় বিজোড়,
তবে ভিন্নতা জোড় বিজোড় ছন্দ বসানো যাবে,
অপূর্ণ পর্বও বসানো যাবে,
যেমন:
৪+৬+৪+৬
৫+৫+৭+৭
৫+৬+৭+৫
৩+৫+৫+৬+৭+২
এমন ছন্দে  মুক্তক মাত্রাবৃত্ত কবিতা রচনা করা যাবে ৷
মুক্তক ছন্দে অন্ত্যমিল প্রসঙ্গে কথা উঠলে উত্তর হবে, অন্ত্যমিল ঠিক রেখেও কবিতা রচনা করা যাবে, অন্ত্যমিল ঠিক না রেখেও কবিতা রচনা করা যাবে, অন্ত্যমিল হচ্ছে কবিতার সৌন্দর্য, এবং আবৃত্তি সুন্দর করার উন্নত মানের বৈশিষ্ট্য, অন্ত্যমিলের সাথে ছন্দের কোন  সম্পর্ক নেই, অন্ত্যমিল এক বিষয়, ছন্দ আর এক বিষয় ৷


মিশ্রছন্দের ক্ষেত্রে ছন্দ বসানোর কোন নিদিষ্ট ধরা বাঁধা নিয়ম নেই, উন্মুক্ত নিজের মন মতো ছন্দ বসাতে পারবে,
তবে অতীতের কিছু কিছু কবি সাহিত্যিক মহোদয়গণ কিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছে, যেমন;  কবিতার একটি চরণে বা পাশাপাশি দুটি চরণে বা একটি স্তবকে যে কোন একটি নিদিষ্ট  ছন্দের  কবিতার বিন্যাস হবে,
যেমন প্রথম স্তবকে বা প্রথম চরণে বা পাশাপাশি দুটি চরণে অক্ষরবৃত্ত ছন্দের বিন্যাস হবে,
পরের স্তবকে বা পরের চরণে বা পাশাপাশি দুটি চরণে
মাত্রাবৃত্ত ছন্দের বিন্যাস হবে,
তারপরের স্তবকে বা পরের চরণে বা পাশাপাশি দুটি চরণে
স্বরবৃত্ত ছন্দের বিন্যাস হবে,
এমন রীতিতে অতীতের কিছু কিছু কবি সাহিত্যিক মহোদয়গণ মিশ্রছন্দের কবিতা রচনা করার কথা বলেছেন,
তবে এমন রীতি কয়জন গ্রহণ করবে? সবাইতো চায় স্বাধীনতা, প্রতি বাক্যে বাক্যে স্বাধীনতা, প্রতি পদে পদে স্বাধীনতা, প্রতি ছন্দে ছন্দে স্বাধীনতা, যেহেতু মিশ্রছন্দ আমাদেরকে ছন্দ বসানোর স্বাধীনতা দিয়েছে,
তাই আমরা গবেষণা মতে, যদি প্রতি ছন্দে ছন্দে প্রতি পর্বে পর্বে, ছন্দ বসানোর স্বাধীনতা গ্রহণ করি, তাহলে কবি সুন্দর ভাবে এবং সহজ নিয়মে একটি কবিতা রচনা করতে পারবে, কবি তার সম্পূর্ণ মনের ভাব সহজেই প্রকাশ করতে পারবে, একটি আধুনিক কবিতা সৃষ্টি হয়ে উঠবে, আমরা বর্তমানে সবাইতো আধুনিক কবিতা চাই, আমরা বর্তমানে সবাইতো  সহজ নিয়ম চাই, সহজ ভাবে মনের কথা গুলো কবিতা আকারে প্রকাশ করতে চাই, তাহলে কেন আমাদের এত বাধা প্রতিবন্ধকতা? তাই আসুন আমরা সকলে সহনশীল হয়ে উত্তম পন্থাগুলো অনুসরণ করি, যে পন্থার মাঝে আমাদের মনের মূল্যবান কথাগুলো সহজেই প্রকাশ পাবে ৷


ধন্যবাদ প্রিয় কবি মহোদয় আপনাকে ৷