প্রতিদিন যে ঘুঘুটা বসে থাকত
আমাদের ঘরের চালের নিচে
       মাটির দেয়ালের উপরে,
সেটা নিশ্চিৎ নিরাপদ আশ্রয় ভেবেই ।
আমি তো বুঝতে পারিনি ওকে ধরতে গেলেই
ও এতটা অভিমানি হয়ে উঠবে ।
সে উড়ে গেল এবং চিরতরে !
ভুলটা আমার'ই, কারন মায়ের কাছে
ঘুঘুটা ধরার আবদার আমিই করেছিলাম ।
আর আমার মা !
আমি চাইলে আকাশের চাঁদ ছাড়া
বাকী সব'ই এনে দিতে পারে অনায়াসে,
আর একটা ঘুঘু, সেটাতো নেহায়েত মামুলি ব্যাপার !
সকাল, বিকেল, সন্ধ্যে বা মধ্যরাত বলে কিছু নেই;
এই যেমন আমার রসগোল্লা খাওয়ার ইচ্ছে হয়েছে
মুখে বলতে দেরী, কোলে নিয়ে হাজির,
বাড়ির কাছেই পালানের দোকান ।


মাটি, পুকুর, সজনে গাছে হলুদ পাখি
বাঁশ বাগানে ভাটফুল, সুবাস, মৌমাছি
পেঁপে ডগার পাইপ, জলকামান, লাটিম,
এসব ছেড়ে স্কুলে যেতে কার ভাল লাগে ?
রঙিন ঘুড়ির সুতোই মন উড়ে আকাশে...
তবুও মা স্কুলে নিয়ে যায়, কোলে করে;
পড়াশোনা বলতে একটি করে নতুন বই
                      প্রতিদিন ছিঁড়ে ফেলা;
কখন ছুটি হবে ? সময় যেতে চাইনা...
মা বসে আছে স্কুলের পাশের বাড়িতে ।


মেঘে মেঘে আকাশ ভারি হচ্ছে...
মুশলধারে বৃষ্টি, ঘোরলাগা দুপুর, ফাঁকা স্কুলঘর
বৃষ্টির ছাঁটে ভিজে যাচ্ছে মেঝে, বেঞ্চ, বই, খাতা
সবুজ মাঠ ভরে গেছে থৈ থৈ বৃষ্টির জলে
কালো ছাতা মাথায় দিয়ে আসছে স্কুলের নতুন স্যার
আবছা অন্ধকার, দূর থেকে চেনা যায়না ।


মা, তুমি কি এখনো বসে আছো, পাশের বাড়িতে ?
বৃষ্টি থেমে গেছে, আমাকে বাড়ি নিয়ে যাবেনা ?