গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখ বাংলা কবিতার পাতায় একটি কবিতা পোস্ট দিলেন আসরের “পল্লী কবি” খ্যাত আমার অত্যন্ত প্রিয় এবং শ্রদ্ধাভাজন কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী। শারীরিক অসুস্থতা ও অফিসের কর্মব্যস্ততার কারণে আসরে প্রবেশ করলেও প্রিয়দের অনেক কবিতা পড়ার সময় হয়ে ওঠেনি। নিজের কবিতা পোস্ট দিয়ে দুয়েকটি কবিতা পড়ে হুটহাট করে বেরিয়ে গেছি। কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী ২৬ ফেব্রুয়ারি আমার একটি কবিতায় সুন্দর একটি মন্তব্য দিয়ে এবং তাঁর কবিতায় আমার মন্তব্যের উত্তর দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন তাঁর লেখা “কাব্য-সর্বশ্রী কবিসম্মান” কবিতাটি পড়ার জন্য। তৎক্ষণাত কবিতাটিতে দৃষ্টি দিয়ে বৃষ্টির ধারা বয়ে গেল দু’চোখের পাতায়। এ অশ্রুবারি কষ্টের নয়, আনন্দের; অশান্তির নয়, প্রশান্তির। তাঁর দেয়া বিরল সম্মানে বিগলিত হৃদয়ের উপচে পড়া আনন্দ চোখের কার্ণিশ বেয়ে নেমে এসে সিক্ত করলো ভাষাশহিদের পবিত্র রক্তস্নাত বাংলার জমিন। তাঁর অমূল্য উপহারে আমি অভিভূত, আপ্লুত, নির্বাক। প্রশংসা করার মতো কোন মানানসই শব্দই তখন আমার মুখে আসেনি কেবল সাদামাঠা একটি কবিতার ক’টি লাইন ছাড়া। ইতঃপূর্বে কবি মহঃ সানারুল মোমিনের পক্ষ থেকেও কবিতা উপহার পেয়ে ধন্য হয়েছি। তবে এবারে কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী যে সম্মান দিলেন তাঁর যোগ্য আমি নই। আমি কেবল শিখছি। যিনি আমাকে এ ব্যতিক্রমী সম্মানে ভূষিত করলেন তিনি আসরে আমার থেকেও অনেক প্রবীন, অনেক বেশি সম্মানের অধিকারী। আসরে তাঁর পদচারণার সময়ের তুলনায় আমি নিতান্তই শিশু। তিনি আছেন প্রায় ৪ বছর। প্রকাশ করেছেন ৯ শতাধিক কবিতা। আমার প্রবেশ ২ বছরেরও কম। প্রকাশ করেছি মাত্র তিন শতাধিক কবিতা। অথচ তিনি আমাকে প্রবীন কবি হেসেবে উল্লেখ করেছেন। এটা আমার প্রতি তাঁর একান্ত ভালোবাসা ও বিনয় বলে আমি মনে করি। নবিশ কবি হিসেবে আসর থেকে এই স্বীকৃতি ও সম্মান আমার লেখার প্রেরণা ও দায়িত্ববোধ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।


আমার কাছে মনে হয়েছে, যে বাংলা কবিতা আসরের কল্যাণে এবং যাদের অপার ভালোবাসায় আজকের এই অভাবনীয় সম্মান তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলে প্রাপ্তির আনন্দ অপূর্ণ থেকে যাবে। তাই আলোচনার পাতাকে আশ্রয় করে কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীসহ আসরের সর্বকবিবৃন্দ ও বাংলা কবিতা ডট কমকে জানাই অসীম কৃতজ্ঞতা এবং আন্তরিক ধন্যবাদ।


কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর কথা ও কবিতা এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আমার লেখা কবিতা “বিনয়াবনত প্রণাম” আমি আসরের সকল সদস্যবৃন্দকে উৎসর্গ করলাম।


“কাব্য-সর্বশ্রী কবিসম্মান
- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
বাংলা কবিতা আসরের পরম শ্রদ্ধেয় কবি গোপাল চন্দ্র সরকার মহাশয় ও  শ্রদ্ধেয় কবি মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান মহাশয় দুই বাংলার কবি আমাদের কবিতা আসরকে দিনে দিনে সুসমৃদ্ধ করে তুলেছেন। তাই বাংলা কবিতা আসরের দুই প্রবীণ কবির শ্রী চরণকমলে উত্সর্গীকৃত আমার কবিতা।


কাব্য-সর্বশ্রী কবিসম্মান
               - লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


এপার বাংলা                  ওপার বাংলায়
           বাংলা কবিতা আসর,
দুই বাংলার                  দুই কবি হেথা
           মিলিলেন পরস্পর।


এক কবি থাকেন           এপার বাংলায়
          কবি গোপালচন্দ্র নাম,
অন্য কবি থাকেন           ওপার বাংলায়
         মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান।


এক কবি যবে             কবিতা লিখেন
          অন্য কবি গাহে গান,
দুই কবির লেখা          অমর কাব্যে
          সমৃদ্ধ আসরের মান।


সামাজিক কবি            গোপাল চন্দ্র
          লিখেন সমাজ নিয়ে,
গীতিকার কবি           মনিরুজ্জামান
         লিখেন লেখনী দিয়ে।


দুই কবিবর             বয়সে প্রবীণ
         জ্ঞানী অতি বিজ্ঞবান,
দুই কবিরে             দানিলাম আজি
         কাব্য-সর্বশ্রী সম্মান।


কবি মূলচাঁদ           কবি সানারুল
         রাখিল যাঁদের মান,
কবি আমি ভাই        কবিতার পাতায়
        গাহি তাঁদেরই গান।”



বিনয়াবনত প্রণাম
মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান


আমার জন্য এত বড় সম্মানের উপহার
কী দিয়ে ঋণ শোধিব কবি এহেন সম্মাননার!
আপ্লুত আমি আজ গর্ব করে বলতেই পারি
আমাকে ধন্য করলেন কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী।
কী দিয়ে রাখবো আমি পল্লী কবির মান
কাব্য-সর্বশ্রী সম্মাননায় যিনি ভরালেন মনপ্রাণ।
অধমের তরে নিবেদিত যে খেতাব বাড়ালো সম্মান
সশ্রদ্ধ চিত্তে গ্রহণ করলাম কবির অমূল্য এ দান।
বুক ভরা ভালোবাসা ছাড়া আর কী দিতে পারি
কৃতজ্ঞতা, শুভেচ্ছা, সেলাম কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী।
সঞ্জয় কর্মকার, মহঃ সানারুল মোমিনসহ আসর সর্বকবি
বাংলা কবিতার পাতায় প্রত্যেকেই আলোকোজ্জ্বল রবি।
কাব্যকথায় যায়নি বলা যেসব গুণী কবিদের নাম
সকলের প্রতি রইল আমার বিনয়াবনত প্রণাম।
২৬-২-২০১৮