সাধারণত একজন কবির লেখা কবিতা পড়ে ভালো লাগার প্রেরণা থেকে অন্য কবির কলমের আঁচড়ে সৃষ্টি হয় নতুন আরেকটি কবিতা এবং সেই কবিতা প্রেরণাদায়ী কবিকে উপহার/উৎসর্গ করতে দেখা যায়। যেটা মাঝেমধ্যে আমিও করি। বাংলা কবিতার পাতায় এটি একটি অনন্য ভালোবাসার নিদর্শন। ব্যাক্তিগত পরিচয় না থাকলেও ভার্চুয়াল পরিচয়ের সুবাদে এহেন ভালোবাসা চিত্তকে আরও বেশি প্রফুল্ল করে। একে অপরকে ভালোবাসার অদৃশ্য বন্ধনে আবদ্ধ করে। মনে হয় বাংলা কবিতা একটি পরিবার; যে পরিবারের প্রতিটি সদস্য ভালোবাসার প্রগাঢ় বন্ধনে আবদ্ধ।


গত ২৯-১-২০১৮ খ্রিঃ তারিখ পাতায় ঢুকে চক্ষু কপালে ওঠে। বিস্ময়ে হতবাক হই এমন এক ভালোবাসার দানে। এই বিরল ভালোবাসার জন্য আমি তাঁকে কোনোদিন কোনো কবিতা উপহার দিয়েছি বলে মনে পড়ে না। আসর কবি মহঃ সানারুল মোমিন, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বঙ্গ, ভারত থেকে পাতায় পোস্ট দিলেন “মনের কবিতা”। তাঁর ভাষায়-


“[আসরের চির পরিচিত পরম শ্রদ্ধেয় কবি ও গীতি কবি “মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান” মহাশয়কে আমার এই লিখা উপহার দিলাম। যার লিখা কবিতা ও গীতি কবিতা পড়লে মনে প্রাণে জাগে ছন্দ আর সুর।]


সেদিন, ভোরের আকাশে-
                স্বপনের বাতাসে।
শুনবে?- শুনবে গো প্রিয়া?
গাইবে কুঞ্জ কাননে, নিজ আনমনে।
               কাননের প্রিয় বকুল, পাপিয়া।


তন্দ্রা নয়নে, স্বপনও শয়নে-
                  ব্যকুল হবে মন প্রাণ।
হৃদয়ের গভীরও গহনে।
সুরে সুরে, গানে গানে।
                 জুড়াবে, ক্লান্তির প্রাণ।
হবে ওগো, শত বিরহের অবসান।


না জানা, অজানা কত কথা-
আছে, হৃদয়ের গভীরে গাঁথা।
সুর দিয়ে হবে কোকিলের কলতান।
              সদা, ভরবে হৃদয়পুরে,
               সুমধুর সুরে সুরে-
জাগবে শুধু দুটি প্রাণ।
হবে গো প্রিয়া,
             শত বিরহের আবসান।
             গাইবে বকুল, পাপিয়া গান।”


আনন্দে বিগলিত হৃদয়ের মধুময় স্রোত চোখের নদী উপচে পড়ে। বাকরুদ্ধ, বিমুগ্ধ ভালোবাসার প্রতিদানে তাৎক্ষণিক লিখলাম-
“কৃতজ্ঞতা


আমার জীবনের শ্রেষ্ট উপহার
করলে আজ দান
জানি না কিভাবে দিবো তার
উত্তম প্রতিদান।


হে কবি, শব্দ সৈনিক যে শব্দমাল্য
আজ দিলে উপহার
আনন্দাশ্রুতে করলাম গ্রহণ
যদিও আমি যোগ্য নই তার।


“মনের কবিতা” পুষ্পডালিসম
হৃদয়ে করলাম ধারণ
তুচ্ছ এ জীবন যে দানে ধন্য আজি
সে দান অতি উচ্চ, অসাধারণ!


ভালোবেসে হৃদয়ে দিয়েছ যে আসন
সেখানে রেখো এ অধমেরে চিরদিন
কী দিয়ে শোধিবো কবি
তোমাদের ভালোবাসার ঋণ।


দোয়া চাই লেখার মাঝে হৃদয়ে সবার
যেন বেঁচে রই চিরদিন
কৃতজ্ঞতা এবং অপার শুভেচ্ছা
কবি মহঃ সানারুল মোমিন।
২৯-০১-২০১৮”


এই কৃতজ্ঞতা কেবলমাত্র কবি মহঃ সানারুল মোমিনের প্রতি নয়। এই কৃতজ্ঞতা আসরের সকল কবির প্রতি যারা একে অপরকে মূল্যবান মন্তব্য দিয়ে, কবিতা উপহার দিয়ে, প্রেরণা দিয়ে এগিয়ে চলার সাহস যোগান। যারা ভালোবেসে দুর্দিনে পাশে দাঁড়ান। নিঃসন্দেহে এমন স্বীকৃতি লেখকের দায়িত্ববোধকে আরও বাড়িয়ে দেয়।


যাকে কোনোদিন দেখি নাই
তার কাছে যদি ভালোবাসা পাই
তাকে আর কী দিবো ভাই
শুধু দিতে পারি হৃদয়ের গভীরে ঠাঁই।


বাংলা কবিতা আসরের প্রতিটি কবির এমন হৃদয় ছোঁয়া ভালোবাসা, অনুপ্রেরণা হৃদয়ের গভীরে ধারণ করে এগিয়ে যাবো প্রগতির পথে। অন্ধকার থেকে আলোর পথে। সমৃদ্ধ হবে বাংলা সাহিত্য। এ প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেষ করছি।


সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
৩০-১-২০১৮