সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত
সু-রঞ্জিত সু-শোভিত সুবাসিত
সুষমা ছড়ানো বর্ণাঢ‌্য জীবনের অধিকারী
বাংলাদেশের রাজনীতির অঙ্গনে
সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে
এক উজ্জ্বলতম নক্ষত্র।
আইনের আঙ্গিনায় সুবাস ছড়ানো
এক রক্ত গোলাপ।
বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা
সংসদ-সদস‌্য, ঝানু পার্লামেন্টারিয়ান
সাবেক মন্ত্রী, দেশ গড়ার কারিগড়;
দেশের ক্রান্তিলগ্নে মাথা উঁচু করে
কথা বলার এক দুঃসাহসী সৈনিক।
একাত্তরের রনাঙ্গনে সাহসী যোদ্ধা
৫নং সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার
ভোট ও ভাতের লড়াই
প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামের
অগ্র পথিক; বাগ্মী ও সুবক্তা
যুক্তির শাণিত অস্ত্রে প্রতিপক্ষ
ধরাশায়ী করার শিল্পগুণে গুণান্বিত
প্রখর যুক্তিবোধ আর হাস‌্যরসে ভরপুর
আপাদমস্তক এক রাজনীতিবিদ
গণমানুষের প্রাণের নেতা।

নিভৃত পল্লীর কুঁড়েঘর থেকে যাত্রা শুরু
হাওরের কাঁদা-জল মাড়িয়ে
রাজধানীর বুকে রেখেছ দৃপ্ত পদক্ষেপ।
সত্তরের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে
আওয়ামী লীগের গণজোয়ারে না ভেসে
একাই একশ কনিষ্ঠতম সদস‌্য হয়ে
সেই যে বিজয়মাল‌্য কণ্ঠে করেছ ধারণ
তা আর হারাতে হয়নি কোনদিন
বিজয়ের গৌরব বয়ে চলেছ আমরণ।
ছাত্র ইউনিয়ন, ন‌্যাপ, একতা, গণতন্ত্রী পার্টি হয়ে
আওয়ামী লীগের নৌকায় ভেসেছে
তোমার জয়রথ।
কোথায় পড়েনি তোমার পদচিহ্ন?
গাঁয়ের মেঠো পথ থেকে রাজ পথ
জজকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, বক্তৃতার মঞ্চ
প্রেস ক্লাব, টিভি টক শো, সংসদ ফ্লোর
রনাঙ্গনের বৈরি মাঠ থেকে জনতার হৃদয়
সব, সব কিছুই করেছ জয়।
অদম‌্য সাহসিকতায় হেঁটেছে বহুদূর পথ
জীবনের পথে।
জেল, জুলুম, নির্যাতন, স্বৈরশাসন
কোন কিছুই থামাতে পারেনি তোমাকে।
তুমি জ্বলেছ, জ্বালিয়েছ ক্ষেপে
তোমার হুঙ্কারে জালিমের আত্মা উঠেছে কেঁপে।
সেই তুমি কিনা আমাদের ছেড়ে চলে গেলে
মৃত‌্যুর কাছে মেনে পরাজয়!
ভোরের আলো ফুটার আগেই রাতের অন্ধকারে
উল্কার বেগে খসে পড়লে বাংলাদেশের আকাশ হতে;
মাঘের কুয়াশার শ্বেত চাদরে নিজেকে ঢেকে নিলে।

তোমাকে হারিয়ে যে শূন‌্যতা তৈরি হলো
এ জাতির এই শূন‌্যতা আর কী দিয়ে পূরণ হবে?
৬-২-২০১৭