সাতচল্লিশে দ্বিতীয় অধীন, ইংরেজ গেল ছাড়ি,
দেশ হল পাকিস্তান, উর্দু শাসন জারি।
বাংলাভাষা ছেড়ে দাও, উর্দু হবে মূল,
ফরমান বলে শাসক গোষ্ঠি বাড়ায় গন্ডগোল।
বীর বাঙ্গালী রেগে বলে একি সম্ভব হয়!
মূখের ভাষা কাইরা নিবে তাও কি প্রানে সয় ?
মায়ের ভাষা হরণ করে সাধ্য আছে কার !
যেমন করে হউক না কেন করবো প্রতিকার।
অত্যাচারে কত মানুষ ছাড়ে ভিটা মাটি,
ডাকঘরে যায়না পাওয়া বাংলায় লেখা চিঠি।
প্রতিবাদে ফেটে পড়ে সারাদেশের মানুষ,
জাতির মুখ বন্ধ হবে,-কি করিলাম দুষ ?
এই ভাবেতে দিন-মাস-বছর কয়টা গেল,
ধীরে ধীরে বাঙ্গাঁলীরা শক্তি কিছু পেল।
বায়ান্নতে সংগ্রাম হল মুখের ভাষার লাগি,
অনেক ভাই শহীদ হল, ভাষা রইল জাগি।
সত্তুরেতে ভোট দিলাম অনেক আশা করে,
আশার বদল যুদ্ধ হল, রক্ত গেল ঝরে।
ছেলে হারা মায়ের কান্না ,পূত্র হারা বাবা,
বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, সবাই যেন হাবা।
বীর বাঙ্গালী যুদ্ধ করে মাত্র নয় মাস,
চারিদিকে আওয়াজ উঠে সাবাস মুক্তি সাবাস,
পাক্ সেনারা কোন্ঠাসা,-যাবার নাই রাস্তা
সঙ্গেঁ যাহা রসদ ছিল, সবই গেছে খাস্তা।
সাদা নিশান উড়িয়ে বলে,- আমরা পাকিস্তানী,
মাফি চাই, সত্য বলছি ,করছি নাফরমানী।
লক্ষ সিপাই,- অস্ত্র ঢালে মুক্তি সেনার কাছে,
এত বড় লজ্জা কি আর এই দুনিয়ায় আছে ?
বিজয় মালা পরিয়ে দেয় মুক্তি সেনার গলে,
এই কথাটি লিখা আছে ডিসেম্বরের ষোলে।
র্স্বনাক্ষরে লিখা থাকবে সাল একাত্তুর,
অধীনের দিন শেষ হল,- সাঙ্গঁ ভয়াল সুর।
জন্মভূমি স্বাধীন তুমি,তুমি আমার ঠাঁই,
তোমার বুকে মাথা রাখি মনের গান গাঁই।
এত সুন্দর দেশটাকে আসুন ভালবাসি,
হানাহানি-মারামারি ভুলি রেষারেষি।
স্বাধীন আছি-ভাষা রাখছি ত্রিশ লাখ মরার পর,
স্বাধীনতা রক্ষা করতে কিসের এত ডর।
বর্গী গেল, ইংরেজ গেল, বিদায় পাকিস্তান,
মগের মুল্লুক মুছে গেল,- রইল দেশের মান।
আরুক আলী, মারুক আলী , যত পারে মারুক,
এক মিছিলে সবাই বলি দেশ দরদী আসুক।
ধ্বংস হউক, নিপাত যাক্, অত্যাচারীর দল’
স্বাধীনতা রক্ষা করতে চলরে ওভাই চল্।


লেখক ঃ মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।