চিকন গড়ন, পাতলা শরীর, গায়ে লাগেনি
এখনও গোস্তের পুরু আবরণ।
গ্রামের খেটে খাওয়া সেই আদম আলির ঘরে
জন্মেই দেখেছিল মেয়েটি গ্রামে শীত আসে,
আসে গরম, আসে বর্ষা।
আসেনা কেবল তার বাবার ঘরে অর্থের যোগান।
পেটে তার ক্ষুধা, পান্তা হজম হতেই সে দ্যাখে  
মায়ের শূন্য পাতিলে জল তরঙ্গের বেহায়া চেঁচামেচি।
ওদিকে তার শরীরের আদিম ভাঁজগুলো অদৃশ্যমান করতে
কাপড়ের সংস্থানে বাবার চোখে শরীষা ফুলের ক্ষেত তখন
পরকীয়া হাসিতে বহ্নিমান।
হঠাৎ আসে সেই এক ভাগ্য দ্যূত,
গ্রামের মাতবরের ছেলে, বলে মেয়েটির বাবাকে,
চাচাগো মেয়েটি তোমার বাড়ন্ত।
কী হবে আর ওকে ঘরে রেখে।
দ্যাখনা মোম বাতি গিয়ে গ্রামে এসেছে ইলেকট্রিক বাতি,
তাকাও, চোখ খোল, মাটির রাস্তাতেও লেগেছে পিচ।
আর মেয়েরা আজকাল বিদেশে দিচ্ছে পাড়ি,
তুমিই কেবল সর্বহারা, তোমার নেই কোন হার জিত।
বললো মেয়েটির বাবা, বাবাগো জীবন হয়ে গেল ক্ষয়,
দেখেছিতো অনেক, এ জগতে কেউ কারো নয়।
এলে তুমি নিয়ে তোমার দয়ার চোখ,
দেখ ওকে দিয়ে হয় যদি কিছু, তবে তা-ই হোক।
এর পরে সেই ভাগ্য দ্যূত হয়ে গেল যম দ্যূত।
মেয়েটি উঠে এল গ্রাম  থেকে, তারপর দিন থেকে রাতে,
রাত থেকে রাতের বাসরে গড়লো সে প্রমিলা জীবন।
বাবার গুলাবি আশা, মায়ের মুকুলিত ভালোবাসা
লাল শরাবের লালিমায় পড়লো ঢাকা।
পরের ইতিহাসের পাতা মোড়া,
মেয়েটি এখন মেয়ে নয়, মানুষ নয়, নয় আদম সন্তান।
তবে কার পাপে, কোন্‌ দোষে জীবন তার হলো এমন গোরস্থান?