তৃতীয় বিয়ে  
  মোহাম্মদ মোমিনুল হক আরাফাত
বছর পেরিয়ে মাস ঘুরিয়ে এল এবার ঈদ,
নব বধু বলে চেঁচিয়ে এনে দাও কীরণ মালা,
না হয় করবো পরকিয়া।
স্বামী গম্ভীর কন্ঠে বলে,
রূপের মায়াই পড়ে করেছি তোমায় বিয়ে
পাইনি তো যৌতুকের টাকা
কী করে পড়াব তোমায় কীরন মালা?
ছোট কবি আঁড়াল থেকে উঁকি দিয়ে বলে,
আমি পড়াবো তোমায় মালা,


নব বধুঃ
ছুটে এসে বলে আভিমান করো না,
তোমার কাছে আবার এসেছি ফিরে,
শুধু দেখিতে চেয়েছিলাম আমায় কতো ভালোবাস।


ছোট কবিঃ
এখনো কী দেখার শেষ হয় নাই?
কত রাত জেগে চোখে চোখ রেখে হয়েছে প্রভাত।


নব বধু বলেঃ
রাখ তোমার এসব দুঃখে মোড়ানো অতীত,
এবার বলো কখন দিবে কীরন মালা এনে?


ছোট কবিঃ
তুমি তো কীরণের চেয়ে কীরণ,
তোমার প্রভা লেগেছে হৃদয়ে,
তাইতো এনেছি ফিরিয়ে-
তোমায় বানাব মোর গলার মালা।


নব বধুঃ
চেচিয়ে বলে, দাও এনে কীরন মালা,
না হয় তোমার বুক খালি করে,
উড়াল দিব দূরে আকাশে।


ছোট কবি বলেঃ
খালি হওয়ার বাকি নাই আর কিছু,
তাইতো ছুটছি বৃদ্ধা আশ্রমে।
যাও তুমি চলে আমি আছি অনেক সুখে।
প্রভাত শুরুতে নব বধু পেল আলোর দেখা,


বড় লোক এসে বলেঃ
জীবন যৌবন সপেছি প্রবাসে, তোমায় পাব বলে।


নব বধু বলেঃ
তোমার বয়স শেষের দিকে
তোমায় বিয়ে করে জীবন যৌবন শেষ হবে আমারও।]


বড় লোক বলেঃ
এই গাড়ি এই বাড়ি সবি তো তোমার জন্য,
কেন আসবেনা তুমি আমার বুকে?


নব বধুঃ
হেসে উঠে বলে, না এসে কী উপায়?
এই বয়সে তোমার সেবা করা মানুষের ধর্ম।
বড় লোকের সন্তান এখন নব বধুর গর্ভে।
বড় লোক তো ওপাড়ে এখন।


খোকা বলেঃ
মা আমার বাবার জন্য মন কান্দে।
নব বধু বলেঃ
খোকা জীবন যৌবন শেষ করেছি
তোকে মানুষ করব বলে।
খোকা বলেঃ
মা কোথায় আমার বাবার ছবি?
নব বধু বলেঃ
ঐ তো দেওয়ালের মাঝ খানে,
খোকা হেসে উঠে বলে,
ভেবেছিলাম সেতো আমার দাদু!
খোকার হাতে গাঁজা।
নব বধু দেখে অভাক।
খোকা বলেঃ মা আমিও কবি।
নব বধু বলে, কে তোর গুরো?


খোকা বলেঃ
ঐ ছোট কবি, যিনি এখন বৃদ্ধা আশ্রমে।
নব বধু বলে, বঝেছি এখন,
সেতো করেছে এত বড় সর্বনাশ,
দিয়েছে তুলে খোকার হাতে গাঁজা।


খাকা বলেঃ
নারে মা তুমি ভুল বলো।
ছোট কবি গাঁজা খাইনি কখনো,
তাই সে হতে পারে নি বড় কবি,
আমার তো বড় কবি হওয়া চাই।
খোকা দু এক টান মেরে হয়ে গেল বড় কবি।
মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,
তুমি তো বুঝনা মা, বাবা হারা ব্যথা।


নব বধু বলেঃ
তুইও বুঝিস নারে স্বামী হারা ব্যথা।
খোকা হেসে উঠে বলে-
তুমিও তো বুঝনা-
শুধু আমার বুকটা হাহাকার করে…


….জন্মের আগে বাবা হারিয়ে।


মা তুমি তো স্বামী হারাও নি।
বাবা মরছে তাতে কী?
তোমার তো ছিল অ-প্রকাশিত অনেক স্বমী।
নব বধু নিরভুদ আজ।
খোকা বাবার ছবি নিয়ে বলে এই কি আমার বাবা?
নব বধু মাথা নেড়ে বলে হ্যাঁ।
খোকা মাথা নেড়ে বলে,
নয়রে মা তুমি তাকেও করো নি বিয়ে,
এই গাড়ি এই বাড়ি-এসব তো আমার বাবা,


নব বধু বলেঃ
শেষ বয়সে মিথ্যা বলে কী লাভ?
এই গাড়ি এই বাড়ি করেছি বিয়ে।
খোকা বলে মা আমার বাবা বেঁচে আছে।
নব বধু চমকে উঠে বলে কী?


খোকা বলেঃ
ঐ ছোট কবি আমার বাবা!
নব বধু মাথা নেড়ে বলে, নারে বোকা,
সে কখনো হতে পারেনা।
যদিও আমার স্বামীর অভাব ছিল না।


খোকা বলে, মা তুমি জাননা,
কী ভাবে আমার সৃষ্টি।
তোমার চলে যাওয়ার সময়
যে দু ফুটা অশ্রু
ছোট কবি উৎসর্গ করেছিল,
তার থেকে আমার সৃষ্টি।
তাইতো আমি বুঝি এত কিছু,


নব বধুঃ হতেও পারে-
না হয় এত বুদ্ধি এল কী করে?
সত্যিই তুই ছোট কবির চোখের জল।
সেতো কখনো আমাকে স্পর্শ করেনাই।
যদি হয় সে তোর বাবা-
তবে চোখের জল থেকে তোর সৃষ্টি।


বিবেক বান এসে বলেঃ
আজ ঈদ উল্লাছে মেতে উঠলি তোরা,
হাজার টাকা জড়ালি গাঁয়ে,
পাশের বাড়ির অবুঝ শিশুটা,
পাইনি ঈদের দেখা।
তোরা তো মানুষ না তোরা আজ পশু,
রোজা রাখিস নাই,,
নামাজ পড়িস নাই
তোরা মুসলিম?
গাঁয়ে দামি জামা লাগিয়ে করবি ঈদ আনন্দ।
আমি বলি উচ্চ স্বরে,,
ঈদ আসেনাই তোদেরি কাছে,
যদি ঈদ চাস তবে জুতার বাড়ি দিব।
২১ আষাঢ় ১৪২২ বাংলা,
০৫-০৭-২০১৫