কাক ডাকা ভোর
আমিনার মা,খুলে দাও দোর
ধুই হাত মুখ,কালো নিমের মাজন
সরিষার তেল মাখি লাগে না সাজন।
গামছায় বাঁধি চিড়া,মুড়ি,গুড়
ভাঙা গলায় সাধি এলোমেলো সুর।
হাঁটতে হাঁটতে বাটে,
পৌছাই সদরঘাটে।
বৈঠা নিয়ে হাতে নৌকার প্রান্তে বসি
জীবন সংসারের গরমিল হিসেব কষি।
কষিতে কষিতে হিসেব
শেষ হয়ে আসে আঙ্গুলের রেখা,
এতটা বছর পেরিয়ে গেল
পেলাম না তবুও সুখের দেখা।


টানতে টানতে বৈঠা
টনটন করে ওঠে বয়ষ্ক মেরুদণ্ড।
সবকিছু মেনে,তবুও চলেছি টেনে
সন্তানকে দু'গ্রাস খাওয়াবো বলে।
টানাটানির সংসার
টানতে টানতে দায়ভার
কখনো দেখা হয়নি  খুলে
নিজের জীবনের হিসেবের খাতা
বউয়ের জন্য কিনতে শাড়ী
রাঁধার জন্য চাল
মেয়ের জন্য ফেয়ার লাভলির পাতা।


কালো জল কালো দেহ কালো নয় মন
নিয়তি যতই হোক নিষ্ঠুর
তবুও হতে দেবনা কখনো পরাজিত
জীবিকার কাছে এ জীবন।
করি পারাপার এপার ওপার
ভীড়াই তরী কূলে
সবারে পৌছাই ঠিকঠাক মত
ভেসে আছি আমি নিজ পথ ভুলে।


জল বলে মাঝি,এত কিছু নিলে
ভেবেছো কি কখনো আমার কথা
আমারও আছে পেট,
আছে যন্ত্রনা ও ব্যাথা।
মাঝি বলে,সাধ্য কি আছে আমার
দেওয়ার কিছু? আমি সহায়সম্বলহীন।
তবুও দিয়ে যাচ্ছি
যতটুকু পারি দিতে দাম
তপ্ত রোদে,বৈঠার টানে
মগজ থেকে গলে পড়ে জলে
ফোঁটা ফোঁটা ঘাম।


-লালবাগ, ঢাকা
২৭/১২/২০১৬