ময়না হতে পারলে তো কত খাঁচা আছে,
গোল্ডফিশ হলে আছে হাজারটা একুরিয়াম।
কত দ্রুত ভুলে গেলে......
আমি আলবাট্রস হয়ে চেয়েছিলাম,
অইযে সেদিন তুমি বললে
ঝাঁপ দাও.......
পাথুরে পাহাড় থেকে আমি হাসিমুখে
ডুব দিলাম অনন্ত নীলজলে
নিজের সবটুকু জীবন,
হয়ে উঠেছিলাম দুরন্ত ডলফিন।
নতুন সাঁতার শিখে দাপিয়েছি ভীষণ।


প্রশান্ত আমায় ছুটি দিয়েছে।
আমি এক অপাংক্তেয় অজাত ডলফিন।
মহাসাগরের কোথাও আমার ঠাঁই নেই।
কী এক বিরাট স্রোতে, গণিতের নিখুঁত উপপাদ্যে
ও আমায় আছড়ে ফেলে দিয়েছে,
পাথুরে সীমানায়।
কই যাব আমি?


আমার জল নেই, খিদেয় অন্ন নেই
চোখের জল গড়িয়ে গড়িয়ে
বালুকাবেলা ভিজিয়ে নিথর পড়ে আছি।
চোখের সামনে অথৈ নীলজল,
ঢেউগুলো সব দাগ খতিয়ানে ঠাসা।


ডলফিন থেকে মুহুর্তে আমি কি
বিড়ালছানা হয়ে গেলাম?
খুব জ্বালালে বস্তায় বেঁধে চার পাক ঘুরিয়ে
যাদের দূরে ফেলে দেয়া হয়।
আমার চোখ ফোটেনি,
ভালো দেখিনা, মিউমিউ কাঁদার শক্তিও কমে আসছে।
এ কী কোন সৈকত নাকি
কোন পুরোনো পোড়ো বাড়ি?  
কোথায় আমি?


কেন আমার সমস্ত শরীর কুঁকড়ে
এমন জ্বর আসছে?
কেন লাল পিপড়েগুলো হৈ হৈ করে
ধেয়ে আসছে?
আমিতো এখনো মরিনি।
এমন করে খাসনে আমার জ্যান্ত চোখ,
তোরা প্লিজ, একটু অপেক্ষা কর............


যুক্তি আর কথার টানাহ্যাঁচড়ায়
ছোট্ট স্বপ্ন প্রজাপতির একটা পাখা ছিঁড়ে গেছে।
কাঠবিড়ালির বুকের উপর দিয়ে চলে গেছে
সাইকেল চাকা,
দুষ্টুটা আর কখনো মাঝরাস্তায় বৈচি কুড়োবে না।


টুকরো টুকরো হয়ে গেছে
স্বপ্নের জাল।
ভেঙে গেছে আলবাট্রসের ডানা,
ডলফিন বালি খেয়ে বাঁচছে,
শালিকের কচি ঘাড় মচকে দিয়েছে ঝড়।
হাউমাউ করে কাঁদছে একলা কাঠবিড়ালি,
বজ্রপাতে ভেঙেছে শিলকড়ইয়ের ডাল।
মেঠোপথে রাশি রাশি বড়ই কাঁটা।


এ কোন কবিতা নয়,
ঘোলা চোখে শেষ শব্দচয়ন.......
নয়নে থাকতে চেয়ে বুঝিনি
চোখের বালির জায়গা স্রেফ অপনয়ন।