যাতনার গল্প লিখে যাই,
শিরা, উপশিরা আর ধমনী-প্রাচীরে।


এই অহেতুক বাঁচা,
প্রতিটি দিন দেহের প্রতি কোষে তাজিয়া মিছিল,
চাবুকের হানায় আর ছিঁড়ে যাওয়া চামড়ায়
আমি চিৎকার করে যাই
থরথর করে কাঁপে সারা কারবালা,
বধির পৃথিবী!
নিরব এ চেহারায়
তারা নাকি শোনে শুধু বিধুর বেহালা!


অথচ আমার চোখের কোলে,
ধ্বসে যাওয়া পুরোনো কবর
প্রতিদিন হয়ে ওঠে আরেকটু গহীন।
স্বপ্নেরা আত্মঘাতী,
লাশের সংখ্যা বাড়ে নিত্যদিন।
'নয়টা-পাঁচটা' করে নয়ছয়
বিশ্রী জীবন,
খুঁজে যায় স্বস্তির একমুঠো ক্ষণ।
লড়াই করে বেশুমার
ভেঙে ফেলে শেষ ফালি আয়না,
চৌচির জীবনের এই শেষ বেলা,
ছেঁড়া চুলে খোপা বাঁধা যায়না।


আমার তো সূর্য ছিল,
ছিল তুরগের মতো গতি।
নাল ছুটানোর নাম করে কেটে দিলো পা,
রাত বড় দরকার বলে সূর্য করলো ছাই।
কখনো পুষবে কি এই বেশুমার ক্ষতি?


হয়ে উঠি ক্যাকটাস
ক্ষোভ আর হতাশায়,
ড্রাকুলার দাঁতে নিষ্পেষিত
বোকা এক খরগোশ প্রাণ........  
এই আসে, এই বুঝি যায়।
এখন,
আমার মস্তিষ্ক জুড়ে
চন্দ্রবোড়া দাপাদাপি করে।
চেয়ারের দাপটে সব পশুর সমান,
বলী দিতে ইচ্ছে করে চাপাতির কোপে।
এই নিদারুণ দাসত্ব আর পা চাটার খোপে
পোষা কইতর,
মুক্তি চায়, বাঁচতে চায় গাংচিল হয়ে।
ডানা নেই, পাখ নেই, শেষমেষ গাঙটাও বালুচর।


আমি হেরে যাওয়া লুন্ঠিত কলিঙ্গ সৈনিক,
ছুটে যাই দিগবিদিক,
তৃষ্ণায় জল নেই, পড়ে আছে ফাটা খুলি
ফেঁড়ে যাওয়া বুক আর রক্তাক্ত কাঁচুলি।
এই অবেলায় সূর্যাস্তের ঠিক আগে,
সমুদ্রও শুকিয়ে গেছে অপয়া বেহাগে।


দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে,
কলমের শেষ কালি বুকের রুধির,
অস্থির এই প্রাণে শুধুই মাতম
হাতছাড়া হয়ে গেছে স্বপ্নের তীর।


যাতনার কাব্য লিখে যাই
এলেবেলে মনের প্রাচীরে।
'অহেতুক নথি আর বৈরী আইন'
             মস্তিষ্ক অসুস্থ এই কালো জিঞ্জিরে।