বাড়ি ফেরার পথে এখন তুমি আমার
অদম্য নেশা।
সেই যে সোনালি ওড়না আর ঝুমকায় আমায় দেখে
তুমি অপলক তাকিয়ে রইলে,
তারপর আর তোমায় এড়াতে পারিনি।


নাম জানিনা, ধাম জানিনা
শুধু চিনি তোমার অপলক চোখ।
কি দেখো অমন করে?
ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত, চোখের কোলে
প্রাক্তনের দিয়ে যাওয়া নির্ঘুম কালো দাগ
নিয়ে চলা
আমিটাকে অমন করে কেন দেখো?


অই শান্ত দৃষ্টি দিনের পর দিন
আমাকে উত্তাল অস্থির করে চলেছে।
বিদ্রোহী হয়ে উঠছে দুচোখ,
তাই আমিও এখন তোমায় অপলক দেখি।
যা ভাবার ভেবো তুমি,
আমি অসহায়।
যেদিন দেখিনা অই চোখ
কেন ফাঁকা ফাঁকা লাগে?
অচেনা তুমি কি এক তীব্র আকাঙ্ক্ষার জন্ম দিয়ে
বিমোহিত করে চলেছ
আমার বাড়ি ফেরার প্রত্যেক ধাপ!


আজ তোমায় দূর থেকে দেখেছি,
মেরুন রঙা শার্টে তুমি রাস্তা পেরুলে।
টের পেয়েছ?
আজ আমিও তোমায় অপলক দেখেছি।
চাইলেই জেনে যাব
তোমার নাম, ধাম, জন্মের আদ্যোপান্ত।
তবু জানব না......  
অচেনাই থেকে যাও তুমি।
আমাদের কখনো কথা না হোক।
এই নির্বাক দৃষ্টি বিনিময় চলুক
সহস্র শতাব্দী ধরে।


এই অচেনা শহর,
কাকদের হুল্লোড় আর বিদ্যুতের খুঁটিতে
পেঁচানো কালো তারের হিজিবিজি,
লক্ষাধিক গাড়ির হর্ণ,
মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকান
আর একলা আকাশের ভিড়ে,
তুমি আমার একমাত্র শান্ত অনুভূতি।


কি হবে দু'পা বেশি হেঁটে
কোন এক ভরা পূর্ণিমায়
যদি তুমি বাড়ির সমুখে আসো!
কসম সৃষ্টিকর্তার, অই অচেনা তুমির জন্য
রাকা চাঁদ লিখে দেব।
প্লাবন ঠেকিয়ে দেব প্রেমের ভেলায়
আর শুকতারার কাছে খানিক আলো
চেয়ে নেব, ছোঁয়াব তোমার পায়।


বাড়ি ফেরার পথে তুমি আমার
এক অদম্য নেশা।
আজকাল কাজল পড়ি তোমার জন্য,
কালো টিপ খোঁজে তোমার চশমার ফ্রেম।


মায়ার হাতছানি নিয়ে যদি বারবার
অমন করে চেয়ে থাকো,
লোহার সিন্দুক গলে যাবে মোমের মতো।
যতো কথা জমা থাকে
খসে যাবে নক্ষত্রের মতো।
ক্ষত হবে ফের এই প্রাণে.....
তারচে এই ভালো অচেনা তুমি
অচেনাই থেকে যাও.......
থেকে যাও সঙ্গোপনে অধরা আকাশ
আর বাড়ি ফেরা টান হোক চঞ্চল হরিণের।