একটা সুতীক্ষ্ম ড্রাকুলা প্রতিদিন আমার পিছু নেয়,
আমার কন্ঠহারের মতি খসিয়ে
নিরবে চুষে নেয় সবটুকু মিষ্টি আমি
আর টুকটুক রক্ত পলাশ।


সেদিন সন্ধ্যেবেলা তাকে ছুঁয়ে জিজ্ঞেস করেছি,
কেন?  ঠিক আমিই কেন?
শীতল চোখে বললো, "তুমি তিলোত্তমা!"
গলা থেকে ঘাম বেয়ে
নিমেষে পায়ের আলতা ছুঁলো!
ভয় নাকি স্তব্ধতা?
এ কী বিষাক্ত প্রমাদ!
কী অদ্ভুত সেই টান,
এই যন্ত্রণার জন্যেই কি
এখন আমি অপেক্ষা করি?


সূর্য ডুবলেই আকাশে কালো ছায়া
দীর্ঘতর হয়।
সে কী তিল তিল করে তিলোত্তমাকে
নিঃশেষ করতে আসে?
নাকি আছে গল্প বিশেষ!
ভারি সুতীক্ষ্ম দাঁতে,
তার নতুন নতুন ধ্বনি!


আমার প্রথম প্রেম বিচূর্ণ হবার পর
জন্মের সৌন্দর্য ফুটেছিল,
শেষ প্রেম পূর্ণ হবার আগে কংকালে ঘুণ লেগে গেছে।
মাঝের গল্পটা জানে শুধু সে,
সেই রক্তপিশাচ।


প্রথম প্রথম হাড় হিম হতো।
এখন ইচ্ছে করে বাতি জ্বালাইনা।
অই পাশবিক নিঃশ্বাস,
অই ভীতি, অই যন্ত্রণা
এখন আমার ভালোলাগে।
আমি চাপাতির নিচে বুক পেতে দিই,
রূপোর থালায় চোখের মণি খুলে
কাঁটাচামচ বিঁধিয়ে রাখি;
অভিভূত হবার শাস্তি পাক ওরা।


এসব সে আমায় শিখিয়েছে নিপুন হাতে।
কি করে আত্মঘাতী হতে হয়,
কি করে ভালোবাসার গলা টিপে পাথর হতে হয়।
ঠিক কিভাবে পেন্সিল হিলের গোড়ায়
হৃদয় মাড়াতে হয়, সব সব সব।


আঁধার হলেই ব্যাঙের চামড়া খুলে
রাজপুত্র বেরোয় না।
অই গল্পের পাতায় পোকা লেগেছে অনেক আগে।
রাত মানেই এখন অলীক পেয়ালায় ডুবে মরা,
হাওয়ায় ভেসে ওঠা
আর ক্যানভাসে পাপের পায়ের ছাপ।


আকাশ বাতাস ভারি করা নিকোটিন
আর কিছু দমবন্ধ মায়া,
এখনো ঘরের কোণে পাক খেয়ে যাচ্ছে৷

মধ্যরাতে তাই বেনারসি জড়িয়েছি,
সাথে লক্ষ বেলীর মালা।
তিল তিল করে তলিয়ে যাওয়া তিলোত্তমা,
নিলয়ের কপাট খুলে আজ
পিশাচকে ডেকে নেবে।


হে রক্তপিশাচ,
আমায় চাঁদের আলোয় রক্তহীন করো।
রুধিরের শেষ কণা শুষে নাও,
স্পন্দনে তার নাম আমি আর সইতে পারছিনা।
বিশ্বাস করো, প্রেমকে আমি আর
এক বিন্দু ভালোবাসিনা..........।