ওই যে একটি ছোট ছেলে ,
দেখো কাঁদছে,
নাক দিয়ে জল পড়ছে,
গায়ে ছেঁড়া  জামা,
পড়ৃণে প্যান্ট নেই।
আর আমরা উৎসবে মেতেছি।
দুগ্গোত্সব-
বাঙালির প্রধান উৎসব।
আনন্দ আমাদের ধরে না,
হৈ হৈ করছি।
আমি শুধালেম তাকে,
কিরে কাঁদছিস কেন?
বললো তিন দিন খায় নি.
খুব খিদে পেয়েছে।
মা নাকি ভাঙা ঘরে,
ঘুমিয়ে আছে.
তিন দিন ধরে,
উঠছে না.
বুঝলাম যা বুঝার।
তার সাথে তার ঘরে গেলাম।
ঘরের চাল নেই।
বেড়াগুলি ঝুলে পড়েছে।
বৃষ্টির জল পড়ে,
ঘর আর ঘর নেই.
কেউ আসে না,
তাদের দেখতে।
খাবার চুরি করতে গিয়ে,
ধরা পড়েছে।
বেদম মার্ খেয়েছে।
তাও কেউ খাবার দেয়নি।
ও...আমরা তো উৎসবে মেতেছি।
দামি দামি কাপড় কিনছি।
একটা নয়, দশটা।
রেস্তোরাতে বসে মজলিশ করছি।
বাড়িতে দামি আলোর,
বাতি লাগিয়েছি।
আমরা, হা ! হা ! উৎসবে মেতেছি।
কেউ একবার চোখ
তুলে চারপাশ দেখিনি।
কত দুস্থ মানুষ,
খেতে পায় না,
পড়নে কাপড় নেই,
আমাদের কাছে তাদের,
কিছু হাতে তুলে দেওয়া ,
বড়োই অপ্রয়োজনীয়।
তখন আমাদের টাকা নষ্ট।
আছে আমাদের অঢেল,
উৎসব পালন করার।
ক্লাবে, ক্লাবে, চাঁদা দেবার।
জাঁকজমক করে প্যান্ডেল সাজাবার।
আমরা উৎসবে মেতেছি।
কেউ আসে না এগিয়ে,
একসাথে মিলেমিশে,
দুস্থদের মঙ্গলে চাঁদা তুলতে,
পুজোর তিন দিন,
নুতন কাপড় দিয়ে
তাদের বরণ করতে।
তাদের খিদে মেটাতে।
আমাদের একদম সময় নেই,
দুস্থদের দুঃখ দূর করবো,
আমাদের কি খেয়ে কাজ নেই!!!
নানা--আমরা উৎসবে মেতেছি।
আমরা আত্ম্হারা।
আমাদের লাগে জাঁকজমক ।
পুজো এসেছে।
গাড়ি হাঁকিয়ে আমরা পুজো দেখবো।
'মা' কে বরণ করবো।
'মা' কি তাই বলেছে?
'মা' কি সত্যিই খুশি তাতে?
না না- আমরা উৎসবে মেতেছি।