আসমা উল হুসনা
মোজাম্মেল সুমন


আল আসমা হুসনা কবিতাখানির প্রথমে,
কৃতজ্ঞতা পরম করুণাময় আল্লাহর নামে।
আমি মুসলিম—মহানবী (সঃ) এর উম্মত,
মহান আল্লাহর তায়ালার সৃষ্টি বিশ্বজগত।


ফুল ফল আকাশ বাতাস নদী পাহাড় জল,
তাঁরই তো সৃষ্টি—শস্য দানায় খাদ্য ও ফসল।
সাগর, ঝর্ণা, বৃষ্টি, অরণ্য, জমিন ও আসমান,
দুচোখ যেদিকে যায় এক আল্লাহর মেহেরবান।


জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ কিংবা বরাদ্দকৃত রিজিক,
সবই স্রষ্টার হাতে—ইহলৌকিক, পারলৌকিক।
এই দুনিয়ার মোহে না ভুলি যেনো স্রষ্টারই পথ,
কোষে কোষে রক্তে রক্তে হোক মানুষের শপথ।


এই বিশ্বসংসার সৃষ্টির একটাই মাত্র কারণ,
যতোদিন আয়ূষ্কাল ততোদিন ইবাদাত পালন।
প্রভুর দেখানো পথে চিরসুখের পরম জান্নাত,
কুপথে চললে জাহান্নাম—খাটবে না অজুহাত।


আঠারো হাজার মখলুকাত যাঁরই আপন সৃষ্ট,
তার মাঝে মানবজাতিকেই করেছেন সর্বশ্রেষ্ঠ।
আমরা মানুষ, আমরা সেরা জীব, বিবেকবান,
সকল সৃষ্টির মাঝে গাহি একমাত্র তাঁর গুণগান।


আল্লাহ নামের অর্থ প্রভু যার অধীনেতে বিশ্বময়,
আর-রহমান নামে জানি পরম দয়ালু করুণাময়।
আর-রহিম সবচাইতে ক্ষমাশীল মানুষের প্রতি,
আল-মালিক সে তো দোজাহানেরই অধিপতি।


আল-ক্বুদ্দুস হলো পবিত্রতারই নিখুঁত এক নাম,
আস-সালাম শান্তি ও নিরাপত্তার উৎস অবিরাম।
আল-মুমিন নামের অর্থে খুঁজে পাই জামিনদার,
আল-মুহাইমিন যে প্রতিপালক এই বিশ্বের সবার।


আল-আযিয সর্বশক্তিমান ও সবচেয়ে সম্মানিত,
আল-জাব্বার নামটায় পাই দুর্নিবারে মহিমান্বিত।
আল-খলিক সে যে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে জানি মানি,
আল-বারি হলো বিবর্ধনকারী যাতে সুন্দর ধরণী।


আল-মুসাউয়ির আকৃতিদানকারী অতীব পরম,
আল-গাফফার নামে যিনি ক্ষমাশীল সর্বোত্তম।
আল-কাহ্হার দমনকারী ও ভীষণ রকম কঠোর,
আল-ওয়াহ্হাব সবকিছুর দানকারী জীবনভর।


আর-রজ্জাক নামে রিজিকদাতা হিসেবে স্মরি,
আল-ফাত্তাহ প্রারম্ভকারী কিংবা বিজয়দানকারী।
আল-আলীম নামটি সর্বজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত,
আল-কাবিদ যে সরলপথ প্রদর্শনকারী অবিরত।


আল-বাসিত নামার্থ প্রসারণকারী এই জগতভরি,
আল-খাফিদ হলো অবিশ্বাসীদের অপমানকারী।
আল-মুয়িজ্জিব যে সম্মান প্রদানকারী মুমিনদের,
আল-মুঝিল্ল হলো সম্মান হরণকারী কাফিরদের।


আস-সামীয়ু হলো সর্ববিষয়ে সততই সর্বশ্রোতা,
আল-বাসির নামের অর্থ সর্বদ্রষ্টা যিনি সৃষ্টিকর্তা।
আল-হাকিম অর্থ সমস্ত সৃষ্টিসমূহের বিচারপতি,
আল-আদল সে তো নিখুঁত এক নামের জ্যোতি।


আল-লাতিফ নামটার অর্থ অমায়িক যা অবিরত,
আল-খবির নামটায় পাওয়া যায় সম্যক অবগত।
আল-হালিম হলো যে ধৈর্যবান এবং প্রশ্রয়দাতা,
আল-আযিম অর্থ সুমহান, আমাদের সৃষ্টিকর্তা।


আল-গফুর হলো মার্জনাকারী সব সৃষ্টির প্রতি,
আশ-শাকুর নামের অর্থ সুবিবেচক, তীক্ষ্ম অতি।
আল-আলিই হলো আল্লাহ মহীয়ান বিশ্ব সম্রাট,
আল-কাবীর মানে মহৎ নামে সীমাহীন বিরাট।


আল-হাফিজ অর্থ সবকিছুরই সুসংরক্ষণকারী,
আল-মুকিত হলো স্রষ্টা সৃষ্টির লালনপালনকারী।
আল-হাসিব মানে সমস্যার মীমাংসাকারী পূত,
আল-জালিল শব্দের অর্থ আল্লাহ গৌরবান্বিত।


আল-কারিম হলো আল্লাহ উদার এবং অকৃপণ,
আর-রকিব মানে সদা জাগ্রত যা প্রভু একজন।
আল-মুজীব অর্থ সাড়া দানকারী ও উত্তরদাতা,
আল-ওয়াসি হলো আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমানতা।


আল-হাকিম সে তো সুবিজ্ঞতার সুউচ্চ উত্তম,
আল-ওয়াদুদ নামের অর্থ স্নেহশীল অতি পরম।
আল-মাজিদ শব্দের অর্থটা হলো মহিমান্বিত,
আল-বাঈস মানে পুনরুত্থানকারী যা সুনিশ্চিন্ত।


আশ-শাহীদ সে তো সাক্ষ্যদানকারী এক নাম,
আল-হক মানে বুঝি প্রকৃত সত্য যা অবিরাম।
আল-ওয়াকিল মানে হলো সহায় প্রদানকারী,
আল-কুওয়াত নামের অর্থটা যে ক্ষমতাধারী।


আল মাতীন শব্দের অর্থ সুদৃঢ়তার মহাসিন্ধু,
আল-ওয়ালিই মানে সাহায্যকারী পরম বন্ধু।
আল-হামিদ হলো সকল প্রশংসার দাবীদার,
আল-মুহসি যে নির্ভুল বর্ণনাকারী নাম স্রষ্টার।


আল-মুব্দি শব্দের অর্থ হলো যে সৃজনকর্তা,
আল-মুঈদ যার পুন:প্রতিষ্ঠার আছে ক্ষমতা।
আল-মুহিই সে ততো জীবের জীবনদানকারী,
আল-মুমীত নামের অর্থটা মৃত্যু আনয়নকারী।


আল-হাইই যে চিরঞ্জীব যার কোনো শেষ নাই,
আল-কাইয়ুম জীবিকানির্বাহ প্রদানকারী তাই।
আল-ওয়াজিদ হলো পর্যবেক্ষক নামে বিশুদ্ধ,
আল-মাজিদ নামের অর্থ পেয়ে থাকই সুপ্রসিদ্ধ।


আল-ওয়াহিদ অর্থ যে এক, অনন্য, অদ্বিতীয়,
আস-সমাদ নামটি স্বয়ং সম্পূর্ণতায় অতুলনীয়।
আল-কাদির হলো সর্ব বিষয়েতে সর্বশক্তিমান,
আল-মুকতাদির যে সিদ্ধান্তগ্রহণকারী এক নাম।


আল-মুকাদ্দিম অগ্রগতিতে সহায়তা প্রদানকারী,
আল-মুআক্ষির বলতে বুঝায় যে বিলম্বকারী।
আল-আউয়াল সর্বপ্রথম—যার কোনো শুরু নাই,
আল-আখির হলো সর্বশেষ যার আর কেহ নাই।


আজ-জাহির মানে হলো সুপ্রতীয়মানে সুস্পষ্ট,
আল-বাতিন যা কিছু দেখা যায় না—অস্পষ্ট।
আল-ওয়ালি হলো সুরক্ষাকারী পরম এক বন্ধু,
আল-মুতাআলী মহিমান্বিতে সুউচ্চ অসীম সিন্ধু।


আল-র্বার নামের অর্থটা যে কল্যাণকারী প্রত্যহ,
আত-তাওয়াব হলো বিনম্র যা দীপ্তিমান অহরহ।
আল-মুন্তাকিম হলো যে প্রতিফল প্রদানকারী,
আল-আফুউ নামটা কঠিন শাস্তি মউকুফকারী।


আর-রওফ যে সদয় ও সমবেদনা প্রকাশকারী,
মালিকুল মুলক সার্বভৌম ক্ষমতারই অধিকারী।
জুল-জালালি ওয়াল ইকরাম মর্যাদা ও ঔদার্য,
আল-মুকসিত হলো ন্যায়পরায়ণেরই দীপ্তসূর্য।


আল-জামি মানে ঐক্য সাধনকারী ও একত্র,
আল-গানিই নামে পাই ঐশ্বর্যবানেরই স্বতন্ত্র।
আল-মুগনি হলো সমৃদ্ধকারী এবং উদ্ধারকারী,
আল-মানি সে তো রক্ষাকর্তা ও প্রতিরোধকারী।


আদ-র্দারু যন্ত্রণাদানকারী বা উৎপীড়নকারক,
আন-নাফি হলো হিতকারী কিংবা অনুগ্রাহক।
আন-নূর মানে অন্ধকারহীন অর্থাৎ আলোক।
আল-হাদী হলো সমস্ত সৃষ্টিকূলের পথপ্রদর্শক।


আল-বাদী নামের অর্থ যার কভু তুলনা না হয়,
আল-বাকী অর্থ অপরিবর্তনীয়, অসীম, অক্ষয়।
আল-ওয়ারিস মানে সবকিছুরই উত্তরাধিকারী,
আর-রশিদ যে সঠিক পথের নির্দেশক, দিশারী।


আস-সবুর অর্থ উৎকৃষ্ট ধৈর্যশীলতার মহাক্ষেত্র,
আর-রাফি হলো উন্নীতকারী যা পাই দিবারাত্র।
আল-মুতাকাব্বির সর্বশ্রেষ্ঠ ও গৌরবান্বিত উপমা,
আল আসমা উল হুসনা স্রষ্টার নামের পরিসীমা।