বক্ষে রক্ত!
বয়ে চলে স্রোত ধারা যমুনার মত,
জ্বলে উঠে অগ্নিশিখা অনির্বাপিত।।


ওরা হারামজাদা সব!
আঁধারে নিদ্রিত নিরহের উপর পাষণ্ড,
অধিকার কেঁড়ে নিতে এসেছিল সব হায়েনা ভন্ড।
আর রক্তের লালে রঙিন করেছিল ভূমি,
আজ হৃদয়ে সেই রক্তেরই মানচিত্র বীরদের পদচূমি।।


নব সূর্যের জ্বলন্ত ত্যাজে আকাশ করে ছাই,
এই মানচিত্রে আজ লাল-সবুজের পতাকা উড়াই।
পুরো বাংলার বুকে জ্বলন্ত মানিকসম নদী ভূমি জল,
রক্তের মানচিত্রে প্রতিচ্ছবি দেখি মুক্তির মিছিল অবিচল।।


দেখি একাত্তর!
এই মানচিত্র আয়নার মত স্বচ্ছ গড়া রক্তের কাঁচে,
কত অবলা অবুঝ হাহাকার করে মরে শয়তানদের পদনীচে।
শহর থেকে গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে করে ছাই উড়ায় ধোঁয়া,
তবু মানচিত্র কথা বলে জাগে প্রাণে বলে শির নাহি নোয়া।।


ওরা রদ করতে চেয়েছিল পাখির গান ফুলের সুভাষ,
পাখি মরিতে জানে ছাড়িতে জানেনা সুর; ফুল ঝরেও সুভাষ ছড়ায় বহুদূর।
চেয়েছিল স্তব্ধ করতে স্রোত পদ্মার করতোয়ার সুরমার,
পারেনি, যৌবনে জেগেছে নদী হেঁকেছে নিন্দাবাদ ওদের শতবার।।


ওরা জোঁক!
চেয়েছিল শুষিতে রক্ত করতে মৃত চির সবুজের মানচিত্র,
জেগে উঠেছে লাখো লাখো তরুণের শক্তবাহু বিনিদ্রিত।
লাথির তোপে উড়ে গেছে ওরা নরকের সিংহ দ্বারে,
প্রাণের মায়া ভুলে মায়ের প্রেমজালে জ্বলেছে প্রদীপ আঁধারে।।


ওরা আকাশ বাতাস ভারি করেছিল গলিত লাশে,
খাল-বিল জুড়ে মৃতদেহের স্তুপ করেছিল; নারী হত্যা নরের পাশে।
ওরা শোনেনি বৃদ্ধের আঁকুতি বৃদ্ধার তরে,
বোন মরেছে ভাইয়ের পরে আত্মচিৎকারে।।


ওরা জানোয়ার ওদের অভিশাপ করে প্রতিটি শিশির ফোঁটা,
যখন মাঘের শেষে আজও পায় গন্ধ রক্তচ্ছটা।
কি এক ধ্বংস খেলায় মেতেছিল উন্মাদ নেকড়ের মত,
দেয়ালে দেয়ালে পথে পাথরে যেন আজও আছে হিংস্রতার ক্ষত।।


কিন্তু এ মানচিত্র গর্বের প্রতীক প্রাণের জয়োল্লাস,
পৃথিবীর বুকে বাঙ্গালী বীর সন্তানদের মুক্তি উচ্ছাস।
আজ প্রতিটি প্রান্তে প্রান্তে বিজয়ের ফুল মালা গাঁথা,
এই মানচিত্র জাগায় মোদের শেখায় নত না করিতে মাথা।।


এ আমার রক্তে মাখা সবুজে ঘেরা মানচিত্র,
আমার প্রাণের আমানত বেঁচে থাকার প্রেরণা চিত্র।
শিরে রাখি বুকে বাঁধি উড়াই গগন জুড়ে,
লাল-সবুজের পতাকা আমার উচ্ছাস গানে সুরে।।


১৬-১২-২০১৬