কবির মৃত্যু আছে, কিন্তু কবিত্বের মৃত্যু নেই, কবিত্ব সত্তার গতি কখনও কখনও মন্থর হয়, স্থির হয়। একটু জিরোয়, হয়ত বিশ্রাম নেয়। কিন্তু একেবারে শেষ হয়ে যায় না।


কবিত্বের সত্তা বিভিন্ন সময়ে হাজির হয় তার বিভিন্ন রূপ, গন্ধ ও রঙ নিয়ে! তখন সেই সত্তায়, সেই রূপে, সেই গন্ধে, সেই রঙে কবিতা লিখতে হয়, কলম চালাতে হয়।


কবি যদি অবহেলা না করে সেই রূপ, গন্ধ ও রঙের সাথে মিশে গিয়ে কবি কবিতা লিখতে পারেন, তখনই কেবল সৃষ্টি হয় এক একটি মৌলিক কবিতার। যা অনেক সময় কবিতার জগতে রাজত্ব করে যুগ যুগ ধরে।


  কিন্তু যদি সেই রূপ, গন্ধ ও রঙকে কবি অবহেলা করেন, অবজ্ঞা করেন, তবে কবিত্ব তার সত্তাকে নিয়ে হারিয়ে যায়, হয়তো ঘুমিয়ে যায়। এই হারিয়ে যাওয়া বা ঘুমিয়ে যাওয়ার স্থায়িত্ব কখনও হয় একটু সময়ের জন্য বা কিছুদিনের জন্য! আবার কখনও কখনও এই হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপ্তি বহুকাল পর্যন্তও হতে পারে। এমনকি এই কবিত্ব সত্তার নিরুদ্দেশ হওয়ার সময়সীমা কোনো কোনো সময় কবির মৃত্যু দিন পর্যন্ত এসে উপনীত হয়।


আবার কোনো কোনো কবির কবি সত্তা তার বিকাশ লাভের পর থেকেই দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলে সামনের দিকে, এক মুহূর্তে জন্যও থামে না। এরূপ কবিরাই মূলত কবি জগতে নিজের কাব্য-রাজত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত করেন এবং মরে গিয়েও নিজেদের অপ্রতিরোধ্য কাব্য প্রতিভা দ্বারা কবিতার জগতে নেতৃত্ব দেন যুগের পর যুগ ধরে।


কিন্তু কখনোই একজন কবির কবিত্ব সত্তা কখনও একেবারেই নিঃশেষ হয়ে অন্তঃসারশূন্য হয়ে যায় না।


একমাত্র কবির মৃত্যু ছাড়া কবি সত্তার মৃত্যু নেই। অতঃপর কবির মৃত্যুর পর তাঁর কবিত্ব তাঁরই কবিতায় অমরত্ব লাভ করে!


~ মুহাম্মাদ আবদুল হাই।


২৫ / ৬ / ২০২৩ ইং, রবিবার,
জামিয়া কাসিমিয়া মহাখালী টি এণ্ড টি কলোনী মাদরাসা, বনানী, ঢাকা।