আজ গন্তব্যের ঠিকানাটা বেশ অপরিচিতই লাগে
চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে, কেমন যেন একাকী লাগে
সিগারেটের নেশাটা সদ্য ছুটেছে
তাই নেশাটাও বাধ্য হয়েই ছুটি নিয়েছে
ভাবি নতুন করে নেশাটা না ধরাই শ্রেয়
পান চিবোতে চিবোতে দোকানি হেঁড়ে-গলায় বলল
দাদা! কিছু লাগবে নাকি ?
কর্কশ স্বরে ভেঙে খানখান দিব্যস্বপ্ন  
শুধু ঘাড় নেড়ে হনহনিয়ে এগিয়ে চলি অফিস অভিমুখে।


সদ্য হারানো স্মৃতিগুলো এখনও তরতাজা
অনেক আশা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা ধূলিসাৎ নিমেষে
নাইনটি টু শতাংশ, ভাল ফলাফল, ভাল কলেজ,
ইঙ্গিনিয়ারিং, প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর, ভাল চাকুরী
আরও অনেক কিছু ভাল, ভাল-ভাল কথাগুলো নিয়েই  
মগন ছিল জীবনের সুন্দরতম সে-কটি দিন।


অবশেষে ছোট্ট পিওনের চাকরিটি জুটেছিল অতিকষ্টে  
ইঙ্গিনিয়ারিং পড়ে পিওনের চাকরি
সংবাদটি শুনলেই বাবা নির্ঘাত হার্টফেল করতেন
বাড়ীতে আর জানানো হয়নি সে চাকরির সংবাদ।
গুরুগম্ভীর জ্যাঠা শুনলেই নিশ্চয় ফোঁড়ন কাটতেন
"আসলে এই দেশ থমকে যাচ্ছে কেন জানো?
ধৈর্যহীন মানুষ আর নিজের লাইনে নেই
এদের জন্যই দেশটা একেবারে গোল্লায় যাবে।"


ফেরার পথে কলরব মুখরিত গঙ্গার দুই ঘাটের
মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া জলরাশি
আর সন্ধ্যাপ্রায় নীলাভ আকাশের দিকে তাকিয়ে
প্রশ্ন দুটি প্রায়ই মনে জাগে
আমি কি সত্যিই লাইনচ্যুত?
আর দেশ কি সত্যি সত্যিই থমকে যাচ্ছে?