এই বদ্ধভুমিতে শব পড়ে আছে,
কাক,চিল,শকুন খুবলে খুবলে খাচ্ছে,
কেউ নেই,কেউ নেই আশেপাশে,
কেউ নেই এই পাড়ায়,
হৃদয়ের নীলাভ সমুদ্রে এক
বিশাল তিমি আছে,সেই তিমিটি রোজ
সায়ানাইডের বিষে জলঘোলা করে,
আমি সক্রেটিসের হেমলক পান করেছি
জ্ঞানী না হওয়া সত্ত্বেও,
আমি গ্যালিলিওর কারাদন্ড ভোগ করেছি
কিছু আবিষ্কার না করেও,
আমি নেপোলিয়নের মতো নির্বাসিত হয়েছি,
দেশবিদেশ জয়ের পূর্বেই,
আমি হ্যাংলা গুয়েভারার মতো গুলিবিদ্ধ
হয়েছি বিদ্রোহ না করেই,
কারন,এই সময়ে স্পষ্ট কথা বলাটা,
প্রকাশ করাটাই পাপ,
এই সময়ে স্বাধীনভাবে হেঁটে চলাই অপরাধ,
এই সময়ে যে আমি বেঁচে আছি তাই বড় সংগ্রাম,
এই সময়ে যে আমি টিকে আছি তাই যেন আদতে
ছন্দবদ্ধ মনোগ্রাম,
আমার কি এই দুর্ভিক্ষের সময় টিকে থাকা জরুরী?
আমিইবা কেন স্বপ্ন দেখি?
আমি কি খুব বেশি হতাশ হয়ে যাচ্ছি?
আমি কেন এত প্রশ্ন করি?
এই সমাজ আমাকে চায় না,
আমার কথা শুনতে চায় না
আর আমিও শুনাতে চাই না,
এই সমাজ আমার প্রতিভাকে নাকচ করে দেয়,
দুমড়ে মুচড়ে কাগজে খামছে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়,কিংবা সবচেয়ে অবহেলিত চোখে বাকা মুখে
আমাকে গ্রহন করে,
পেছন হতে আরো পেছনে ঠেলে দেয়,
এই কিউ আদতে কে তৈরি করেছে?
কারা থাকবে সামনে?
এখন তো সক্রেটিসকে বিষপান করতে দেওয়া হয় না,কারন এই যুগে সক্রেটিসের বড় প্রয়োজন,
তার উপযোগিতা মিটিয়ে রসদ যুগিয়ে পেছনের সারিতে দাঁড় করিয়ে ভন্ডদের সামনে আনা হয়,
ত্যক্ত পরিত্যাজ্য করে তিক্ত বৈষম্যে তাকে জাগতিক বিষবায়ুতে শ্বাস নিতে বলা হয়,
এবং ধীরে ধীরে অসম্মানে প্রবীণ ধীবর হয়ে রগকাটা কিংবা পঙ্গু হয়ে ধুকে ধুকে মরতে বলা হয়,
তারপর,আয়োজন করে তার নামে মৃত্যুপরবর্তী
মিলাদ,শোকযাত্রা,মিছিল দেওয়া হয়,
সভার গোলটেবিলে আরেক ধান্ধা করা হয়,
আজকের দিনে সক্রেটিস জন্মালে তাকে আর মরতে হতো না,বেঁচে থেকেই তিনি মারা যেতেন।
আজকের দিনে নবাগতরা কান্না করে না,
কারন তারা জানে এ অশ্রু বাঁচিয়ে রাখতে হবে,
আজকের দিনে আমার শিশু চাঁদমামাকে খুঁজে না,চাঁদে চলে যায়,
আজকের দিনে কেউ শিখে না সবাই শিখাতে চায়,
আজকের দিনে কেউ গুরু না শুধু লভে নিতে চায়,
আজকের দিনে জ্ঞানীর দেখা মিলে না,
পথেঘাটে বাণিজ্য চলে ভাই,
আমি গতদিনের কথা ভাবতে চাই না,
কারন,এখনো বুকের নীলনদে একটি তিমি
হুংকার ছাড়ছে বেরিয়ে আসবে বলে পণ
নিয়েছে সেই কবে সগৌরবে বিষ ভূমিকায়।
১৮.১.১৮