আকাভান ইয়াজন প্রদেশের খোরাসান এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন  । মাহাদী আকাভান সালেহ   তাঁর প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ  করেন ১৯৪১ সালে  সিটি টেকনিকেল স্কুলে । ১৯৪৭ সালে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন । সঙ্গীতের প্রতি তাঁর আকর্ষন ছিলো । তার বাবা চাইতেন না পড়াশোনার বাইরে অন্য দিকে ছেলের মন যাক । সঙ্গীতের প্রতি তার আগ্রহ তার বাবা পছন্দ করতেন না বলে  বাবাকে লুকিয়ে তিনি পিয়ানো বাজানো শেখেন ।
আকাভান ছিলেন প্রথাগত পারসিয়ান কবিতার  প্রথম ছাত্র । কেরিয়ার শুরু করেন ক্লাসিসিজমের কবি হিসেবে । অন্যদিকে পারভিজ কাভিয়ান ঝারোমি ছিলেন টেকনিকেল স্কুল মাসাদের ইন্সট্রাকটর । তার সাথে  আকাভানের প্রায় পারিবারিক পর্যায়ে সম্পর্ক ছিলো। তার সাথে থেকে আকাভান ইরানী ক্ল্যাসিকেল  ছন্দ শাস্ত্রের সাথে পরিচিত হন ।  আবদুল হোসাইন নুসরাত মনসি খোরাসান লিটারেরি” সোসাইটি পরিচালনা করতেন  এবং আলী আকবর গোলসান আজাদী , সৈয়দ মোহাম্মদ ফারুক এই লিটারেরি সোসাইটিতে নিয়মিত ছিলেন । আবদুল হোসাইন মনসীর পরামর্শে তিনি তার ছদ্মনাম নেন এম ওমিদ । পরবর্তীতে তিনি তার এই কাব্যিক নাম দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন যদি এই বিষয়টি নিয়ে তিনি চিন্তিত ছিলেন । নামটি  যদিও যথেষ্ট কাব্যিক তথাপী এর অর্থ নিয়ে তিনি কিছুটা সন্দেহ প্রবণ ছিলেন ।
আকাভান মাহাদী  রেজা মারজবান , আলী মিলানী এবং অন্যান্যদের সাথে কবিতার আধুনিক সুর , কবিতার গঠনের নতুনত্ব ,কবিতার  আধুনিক প্রবণতা ইত্যাদি নিয়ে কাজ করেন । এই সময় (১৯৪০) আকাভান বামপন্থী রাজনীতির সাথে যুক্ত হন । ওই সময় বুদ্ধিজীবিদের এবং শিল্পীদের  এটি একটি প্রিয় বিষয় ছিলো । এরপর তিনি প্রাদেশিক টুডে পার্টির  ইয়থ অরগেনাইজেশনের সদস্য হন ।  ১৯৪৭ সালে আকাভান তেহরানে চলে যান । ওই সময় মাসাদের স্থানীয় পত্রিকা রাস্তিতে  তার কবিতা ছাপা হতে থাকে । ১৯৪৮ সালে তেহরানে আকাভান এডিটিং এর কাজ  করা শুরু করেন ।  একই সময় তৎসময়ের মিনিস্টির অব কালচার ভারমিনের উপকন্ঠে তাঁকে ক্লাসিক্যাল পারসিয়ান কবিতার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়  । ফলে তিনি ক্ল্যাসিকেল পারসিয়ান  কবিতার উপর কাজ করার প্রচুর সময় এবং সুযোগ পান । মাসাদে যে কাব্যিক কেরিয়ার তিনি শুরু করেছিলেন তা ফুলে ফলে পূর্ণ হলো এখানে এসে । ১৯৫০ সালে তার চাচাতো বোন কারাজ রিভারকে বিয়ে করেন । তাদের ছয় জন সন্তান ছিল । লালেহ তার এক সন্তান বিশ বছর বয়সে কারাজ নদীতে ডুবে মারা যায় ।
অন্য সন্তানরা হলো লুলি , তুস , জারদোস্ত  , মাসদাক আলী এবং তানাসগোল । তানাসগোল জন্মের মাত্র চারদিনের মাথায় মারা যায় ।
১৯৫১ সালে আকাভানের প্রথম কাব্যসংগ্রহ আরগানুন (The organun ) প্রকাশিত  হয় । এটি তিনি উৎসর্গ করেন সকল মুক্তিযোদ্ধাকে এবং রেজা মারজবান এই বই প্রকাশ করেন । এখানে বেশীরভাগ কবিতাই ক্ল্যাসিকেল । আবার কিছু কবিতা ছিলো যেখানে   ট্রাডিশনাল  থেকে ধীরে ধীরে ক্ল্যাসিকেল কবিতার দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয় । পরের এডিশনে তিনি এই কবিতাগুলো সরিয়ে ক্ল্যাসিকেল কবিতা যুক্ত করেন । ১৯৫১ সালে  সাহিত্য পত্রিকা Javānān-e demokrāt, (Young democrats), এর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শুরু করেন । এই দায়িত্বে থাকায় তৎকালীন বিখ্যাত কবি সাহিত্যিকদের সাথে তার সখ্য গড়ে ওঠে । ১৯৫০ এর গোড়ার দিকে তেল সংকট এবং সামরিক অভ্যুথানের পর ১৯৫৩ সালে শাহ  পূণর্বহাল হন । এটি সেইসময়ের তরুণদের মধ্যে যথেষ্ট হতাশা তৈরী করেছিলো । এই সময় আকাভান  তরুণদের সাথে ছিলেন এবং  তুবে পার্টির সাথে সক্রিয় এবং সম্পৃক্ত হন এবং ১৯৫৩ সালে তাঁকে এক বছরের কারাভোগ করতে হয়। ইরানের গণতান্ত্রিক  সংগ্রাম  ব্যর্থ হবার  পর আকাভান রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন । এরপর তিনি মাজদোস্ত’ নামের একটি সংগঠন গঠন করেন , যাতে ফারসী নবী মাজদাকের মূল আদর্শ ,  সাথে মানি এবং বুদ্ধের আদর্শবাদের মিশ্রনে একটি ভিন্ন রকম সংগঠন ।
তার মুক্তির পর তাঁকে কাসানের শহরতলীতে শিক্ষক হিসেবে পাঠানো হয় । এরপর তিনি তার চাকুরী  ছেড়ে দেন এবং তেহরানে চলে যান । এরপর সাংবাদিকতার সাথে  নিজেকে যুক্ত করেন এবং প্রকাশক হিসেবে ছদ্মনামে  লিখতে থাকেন । ঐ সময়ের রাজনৈতিক প্রকাশনা Irān-e mā  পত্রিকা জাহাঙ্গীর তফাজ্জল প্রকাশ করতেন এবং এর  সাহিত্য পাতাটি আকাভান দেখতেন । এর ফলে রাজরোষে পতিত হন এবং হোসাইন রাজীর সাথে তিনিও কারাদন্ড ভোগ করেন । Zemestān (Winter, 1956), আকাভানের দ্বিতীয় কাব্য সংগ্রহ , এখানে ৩৯ টি কবিতা রয়েছে । এখানে অনিশ্চয়তার চাইতে আশাবাদ এবং ইতিবাচক মনোভাব কবিতাগুলোকে  Nimaic কবিতার দিকে ঠেলে দিয়েছে । এই কাব্য সংগ্রহটি আকাভানকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয় । এর শিরোনাম কবিতাটি সমালোচকদের শুধু দৃষ্টিই আকর্ষন করেনি একই সাথে তাঁকে সমৃদ্ধ কাব্যধর্মী স্বভাব কবি হিসেবে স্বীকৃতি এনে দেয় । এবং ক্ল্যাসিকেল কবিতার ঘনিষ্ঠ পাঠ তাকে এমন একটি অবস্থানে নিয়ে যায় যে ঐ সময় বিশেষ করে ১৯৫০ সালের বিষাদ সংকুল পরিবেশে  তীক্ষ্ণ ও গভীর দৃষ্টিসম্পন্ন কবি হিসেবে পারসিয়ান সাহিত্যিক সমাজে পরিচিতি লাভ করেন ।
Zemestān  প্রকাশ হবার পরে আকাভান  ইব্রাহিম গোলেস্তানের সাথে কাজ শুরু করেন । ইব্রাহিম গোলেস্তান ছিলেন সিনেমা পরিচালক , কবি এবং লেখক । সেখানে আকাভানের কাজ ছিলো ছবি সম্পাদনা করা , এবং সাউন্ডট্রেক রেকর্ডিং এর সুপারভাইজ করতেন ।
কবি ফরফ ফররখজাদ ও ঐ সময়  তার সাথে কাজ করতেন । এছাড়া ফেরেইদান রাহনেমা , করিম ইমামী এবং নাজাফ দারাবান্দারী এবং আরো অনেকে তার সাথে ছিলেন ।
আকভান একটা দীর্ঘ সময় নিমেইক কবিতার পেছনে ব্যয় করেন । যাতে ইরানী পাঠকের উপর ভালো প্রভাব বিস্তার করে । তার সমস্ত বই এবং রচনাসমুহে আকাভান বেসিক একটা পার্থক্য দেখাতে চেয়েছেন যেখানে Nimiac  কবিতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন এবং সেখানে পাঠকের আগ্রহ জাগিয়ে তোলা অথবা সৃষ্টিশীল কিছু করার দিকে ঝোঁক বাড়িয়ে তোলা কিংবা অন্যদিকে ক্লাসিকেল কবি যারা শতাব্দী ব্যাপী যুক্ত এবং যাদের পাঠক একটা দীর্ঘ সময় ব্যপী নতুন ধারার ব্যপারে আগ্রহী হয় ।
১৯৫৯ সালে আকাভান তার তৃতীয় সংগ্রহ Āḵer-e Šāh-nāma (The ending of theShah-Nameh), প্রকাশ করেন । কবিতাগুলো খুব প্রশংসা ধন্য হয় । শিরোনাম কবিতাটি আকাভান ইরানের  প্রাক ইসলামিক যুগের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরার পাশাপাশি রেনেসাঁ যুগের করুন রস পরিবেশন করে ।
বিজয়ীরা বাতাসের সাথে নগরে যায়
অথচ দুর্বল  স্বর যেনো বুকে হাঁটে
আমরা গল্প বলতে ভুলে গেছি -
Āḵer-e Šāh-nāma  খুব ভালোভাবে পাঠক এবং সমালোচক গ্রহণ করেছেন । ফরফ ফররখজাদ তার এই কবিতা সংগ্রহকে খুব শক্তিশালী কবিতা বলে অভিহিত করেছেন । জালাল আল ই আহমেদ যখন লিখেন তখন সময়টা ক্রিটিকাল ছিল বিশেষ করে সামাজিক এবং রাজনৈতিক ইস্যু  ।
১৯৬১ সালে আকাভান গোলেস্তান ফিল্ম স্টুডিও ত্যাগ করেন এবং রেডিও ইরানে কাজ করতে শুরু করেন । সেখানে তিনি কালচারাল এবং লিটারেরি প্রোগ্রামের সাথে নিজেকে জড়িত করেন । তার কবিতার এক  তৃতীয়াংশ এই সংগ্রহে  স্থান পায় এবং যেগুলো Niamiac  কবিতা হিসেবে স্থান পেয়েছে সেগুলো  সমালোচকদের যথেষ্ট প্রশংসা পায়  । Zemestān  এ তার যে কবিতাগুলো শেষের দিকে স্থান পেয়েছিলো সেগুলোর  যে স্টাইল  ছিলো আকতারই শাহনামাতে তার অনুবাদ খুব ভালো ছিলো এবং এগুলোতে একধরনের পরিপূর্ণতা আসে । আকাভানের বৈশ্বিক দর্শন , আচ্ছন্নকারী প্রবৃত্তি এবং আজীবন সংগ্রাম অন্ধকার এবং আলোর  একটা বৈপরীত্য অথবা সামঞ্জস্য খোঁজা তার কবিতায় বার বার ফিরে এসেছে এবং এর জন্য  তাকে অনেকবার রেজা বারাহেনি দ্বারা সমালোচিত হতে হয়েছিলো । কিন্তু উল্লেখ্য যে আকাভানের দৃষ্টিতে মানুষের ক্রমবর্ধমাবন  পতনের ইতিহাস পরিলক্ষিত হয় । আবার এই যে শরনার্থীদের একটা অবরুদ্ধ দরোজার সামনে নিজেদের বন্দী দেখা সেটি ক্রিটিকদের সৃষ্টি ।
১৯৬৯ সালে তিনি আবাদানের দিকে যান এবং সেখানে স্থানীয় টিভি স্টেশনে কাজ করা শুরু করেন ।
সেখানে রিসার্সের কাজের সাথে নিজেকে জড়িত করেন তাছাড়া সাহিত্যিক এবং কালচারাল প্রোগ্রামগুলো করা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার ঐতিহাসিক বিষয় , ভুগোল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করেছেন । এই বছরেই তিনি তার পঞ্চম সংগ্রহ Pāʾiz dar zendān(Autumn in prison), প্রকাশিত হয় । ১৯৭৬ সালে এই সংগ্রহটি
Dar ḥayāt-e kučak-e pāʾiz, dar zendān, (In Autumn’s little yard, in prison), নামে পূন প্রকাশ হয় ।
এবং আকাভান নিজে পরে এই সংগ্রহকে “principal title” হিসেবে  স্বীকৃতি দেন । এই সংগ্রহটিতে অনেকগুলো কবিতা স্থান পেয়েছে । তার কারাবাসকালীন সময়ের কিছু কবিতা এবং বেশীর ভাগই Nimiac  স্টাইলের কবিতা এতে স্থান পায় । কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম ছাড়া বেশীরভাগ কবিতাই সাহিত্যিক মানোত্তীর্ণ এবং তার পূর্বের সংগ্রহ থেকে ভিন্ন ।
আকাভানের ষষ্ঠ প্রকাশনা  endegi miguyad: ammā bāz bāyad zist  ১৯৭৮ এ প্রকাশিত হয় । এখানে কবিতার চাইতে পদ্যই বেশী লক্ষিত হয় । সাধারণ অর্থে কবিতা বলতে যা বোঝায় এগুলো সেরকম নয় ।
Duzaḵ ammā sard (Hell, yet cold, 1978), আকাভানের ৭ম সংগ্রহ । এখানে ক্লাসিকেল কবিতা এবং Nimiac কবিতাই বেশী স্থান পেয়েছে । শিরোনাম কবিতা “Āhāy, bā to-am! যেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু এখানে তার আগের কাজ গুলোর মতো Nimiac  এর বৈশিষ্ট্য থাকলে সেগুলোর মতো বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেনি ।
এখানেও অনেক কবিতা স্থান পেয়েছে যেগুলো প্রাক ইসলামিক যুগের প্রতিনিধিত্ব করে । ১৯৭৯ সালে আকাভান Sāzemān-e entešārāt va āmuzeš-e Enqelāb-e Eslāmi, এ চীফ এডিটর হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন ।। কিন্তু সেখানে তিনি কয়েক মাস মাত্র কাজ করলেন । যদিও তিনি দীর্ঘদিন সরকারী চাকুরী করেন কিন্তু ১৯৮১ সালে তাঁকে কোনো টাকা - পয়সা ছাড়াই অবসরে যেতে হয় ।
১৯৮৯ সালে আকাভান তার অষ্টম সংগ্রহ  To rā ey kohan bum o bar dust dāram প্রকাশ করেন । এখানে আকাভানের কিছু শ্রেষ্ঠ কবিতা স্থান পায় । কবিতাগুলো ছিলো ক্লাসিকেল ছন্দে লিখা । এই কাব্যগ্রন্থে Nimiac  কবিতা স্থান পেয়েছে বেশী । এতে আধুনিক কবি লেখকরা অনেকেই ভুরু কুচকেছেন ।এবং তাদের কাছে মনে হয়েছে এটা ফাপা বেলুন ছাড়া আর কিছুই হয়নি ।
১৯৯০ সালে আকাভান  বার্লিন ভিত্তিক Haus der Kulturen der Welt এর আমন্ত্রনে  জার্মান , ইংল্যান্ড , ডেনমার্ক , সুইডেন , নরওয়ে এবং ফ্রান্স ভ্রমন করেন । এটাই ছিলো তার ইরানের বাইরে তার  প্রথম এবং শেষ ভ্রমন । তিনি যে সব জায়গায় গেছেন সেখানের খ্যাতিমান এবং বিখ্যাত  কোনো মানুষ তাকে স্বাগত জানিয়েছে । হার্ট এটাকে তিনি সেবছরই মারা যান । তেহরানের তুস “ এ তাকে শেষ শয্যায় শুইয়ে দেয়া হয় । এরপর তার Nimiac  কবিতার সংগ্রহ গুলো Morteżā Kāḵi, প্রকাশ করেন । আকাভান জীবিত থাকা কালে কিছু কবিতা čahārpāra এ “Emšab šab-e čist   শিরোনামে প্রকাশ হয় ।  
WORKS
আধুনিক পারসিয়ান সাহিত্যের অগ্রগতিতে  আকাভানের ইউনিক  ভুমিকা উল্লেখ করার মতো এবং আধুনিক পারসিয়ান সাহিত্যের ইতিহাসে আকাভান  একজন উল্লেখযোগ্য কবি । প্রায় পুরো শতকে যখন পুরনোরা এবং তাদের অনুসারীদের হাতে শাসিত হয়ে এসেছে পারসিয়ান ক্লাসিকেল এবং গীতিকবিতা সেক্ষেত্রে  আধুনিক
পারসিয়ান  সাহিত্যিকগন রক্ষনশীলতা  থেকে নিজেদের  মুক্ত রাখছিলেন ।  শতাব্দী কাল ধরে এক একটা নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ থেকে  কবিতা যে শাসিত হয়ে এসছিলো , আধুনিক কবিতায় আকাভান সেই আবীলতা থেকে মুক্ত রাখলেন তাঁর কবিতাকে  । খুব অল্পই আকাভানকে অনেক বেশী নিজের ভাবতে পেরেছেন যেমন কবি সার্বজনীনতায় নিজেকে ছড়িয়ে দিলেন ।  তাঁর কিছু প্রশংসিত এবং স্থায়ী কবিতাকে তিনি কখনো যুদ্ধবাজ কখনো বা ট্রাডিশনাল এবং বিশেষ করে প্রাচীন প্রথাগত রীতিতে লিখেছেন । এবং সেই সময়ের যারা  ট্রাডিশনাল কবি ছিলেন তাদের কাছে আকাভানের উপর তীর্যক দৃষ্টি ছিলো । তাদের দাবি যদিও আকাভান ক্লাসিকেল কবিতা লিখতে চেয়েছেন কিন্তু সবই Nimiac  কবিতা লিখেছেন ।
ঠিক নিমার মতো নয় কিন্তু অতীতের মতো তার কবিতায় ক্রিটিকাল সংলাপ এবং ক্ল্যাসিকেল চিত্রকল্প এবং প্রতীক ব্যবহার অব্যাহত রেখেছেন । তার অর্থবোধক শব্দ ব্যবহারে সতর্কতা , ক্লাসিকেল ভাষার সাথে সমকালীন ভাষার মিশ্রন এবং নিজের ভাষার প্রতি মননশীলতা খোরাসান থেকে মাজান্দারানের সংক্ষিপ্ত যাত্রা , তার কবিতার ভাষাকে আলাদা একটা ফ্লেভার দিয়েছে । এবং অন্যান্য Nimaic কবিতা থেকে আলাদা বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্য মন্ডিত করেছে । আকাভানের সেকেলে ভাষা ভঙ্গি অনেক বেশি সফলতার দাবীদার ছিলো এবং অনেক কবি সেই স্টাইলটাকে গ্রহণ করেছেন তথাপী অনেক সমালোচক এই বৈশিষ্ট্যর মিশ্র প্রতিক্রিয়া করেছেন ।
লোককাহিনী  এবং পৌরাণিক গল্পের আকাভানের Nimaic অনেক কবিতার আখ্যান লাইন । আখ্যানগুলো
সেখানে  সচিত্র অতিস্বর সঙ্গে একটি মহাকাব্য স্বভাব দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং কখনোই সমসাময়িক সমাজজীবনের অপ্রাসংগিক ছিলো না । তিনি প্রায় সময় একটা ঘটনা বা ধারাবাহিক ঘটনাপুঞ্জকে Ṭolu হিসেবে নিয়েছেন । এবং যখন কোনো কোনো কবিতায় বর্ণনাকে উহ্য রাখা হয়েছে সেই গুলো নিয়ে তিনি কোনো কোনো সমালোচক দ্বারা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন ।
আকাভানের কবিতায় গভীর হতাশাবোধ   এবং পীড়ন ১৯৫৩ সালের সেই বিষাদ সময় উঠে এসেছে ঘুরে ফিরে । তার সময়ে তিনি ছিলেন মুখপাত্র । একটি অত্যন্ত সুন্দর কবিতা তার পীর মোহাম্মদ আহমেদাবাদীকে উতসর্গ করেছিলেন ।  মোসাদ্দেকের নিজগ্রাম তেহরানের আহমেদাবাদে জীবনের কষ্ট পীড়ন হতাশাবোধ যন্ত্রনা প্রতীকের মাধ্যমে জ্বাজ্বল্যমান হয়েছে ।
O heart, you saw that the loved one did not come
The dust came and the rider did not come
The candle burnt to the end
But the golden dawn did not come.
ও মন তুমি দেখেছো ভালোবাসা এককালে আসেনি
ধুলো এসেছে অথচ চালক আসেনি
মোম জ্বলে শেষ হয়েছে
অথচ সোনালী ভোর আসে নি -
সামাজিক এবং রাজনৈতিক  ইস্যুগুলো তার কবিতার বিষয়বস্তু হিসেবে এসেছে ।  আকাভান কিন্তু তার কবিতায় ভেতরের  কল্পনাশক্তির উপর বেশি নির্ভর করেছেন যতটা না নির্ভর করেছেন বহির্মুখী সাহিত্যিক স্বাভাবিক ভাষার উপর ।। আবার রাজনৈতিক মতাদর্শের বিপরীতে সাহিত্যের সাথে সময়ের যে সংযোগ সেটি তার একসময় শত্রু বলে বিবেচিত হতো এবং তার  কবিতায় দুরকমের ধারা সৃষ্টি হয়েছে -  উভয়ই দেখা যায় স্বয়ং সম্পূর্ণ -  সম্পূর্ণ স্বাধীন রূপে অর্থ প্রকাশ করতে পারে । তবে তার কবিতার যথার্থ পর্যবেক্ষনের জন্য আরো সুক্ষ্ম বুদ্ধিজীবী প্রয়োজন । । যেমন Bāḡ-e man” in Zemestān একটি উল্লেখযোগ্য উদাহারণ হিসেবে গণ্য করা যায় ।
… The leafless garden,
Is alone day and night,
In its pure and sad silence. …
The leafless garden
Its laughter, bloody tears
Forever, on its golden-maned horse gallops
The king of seasons, the autumn.
পল্লবহীন উদ্যান
বিশুদ্ধ বিষন্নতায়
দিনে রাতে কি ভীষন একা
পাতাহীন বাগান
ওর হাসি , ওর ক্রন্দন
সোনালী ঘোড়ায় চেপে  শুন্যে ধাবমান
ঋতু রাজা তো হেমন্ত  
আকাভানের কবিতা রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিষয়বস্তুর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় । জীবনের নানান রং , ভালোবাসা প্রকৃতির প্রতি অনুরাগ কবিতার গায়ে গায়ে লেগে আছে । যদিও তার দীর্ঘ ভালোবাসার কবিতাগুলো বেশীর ভাগ ক্লাসিক এবং Nimaic বিষয়ক । তবু  তিনি তার ছোট কবিতাগুলোর জন্যই বেশী আদৃত থেকে যাবেন ।


The moment of the encounter approaches.
Again I am crazy, drunk.
Again there is a trembling in my heart, my hand.
Again you would say that I am in another land.
সম্মুখ লড়াইয়ে পড়ে
ফের নেশাতুর , পাগল আমি
পুনরায় আমার বুক কাঁপে  , হাত কাঁপে
এরপরেও তুমি বলবে আমি অন্য  দেশে  আছি -
If I love anything in the world
I love you, ancient homeland …
যদি পৃথিবীতে ভালোবাসা বলে কিছু থাকে
হে আমার বৃদ্ধ দেশ তবু আমি তোমাকেই ভালোবাসি
কাসিদায় আকাভান অনেকটাই  স্বচ্ছন্দ  । তার সমসাময়িকরা তাদের পুরনো শাসকদের অবগত করানোর জন্য একটি নতুন ধারার প্রবর্তন করতে চেয়েছিলেন । কবিতায়  বিষাদাক্রান্ত মুড আশাকে বিরাগভাজন করে মাঝে মাঝে দেখা যায়  কিছু কিছু চরিত্রে বুদ্ধি এবং বিদ্রুপের একসাথে সহাবস্থান এবং তার সমসাময়িকদের মধ্যে থেকে তাকে আলাদা করা যায় । মাঝে মাঝে কবিতায় অশ্লীলতা আনলেও এগুলো স্যাটায়ার হিসেবেও বেশ স্বচ্ছন্দ ।
আকাভানের কবিতা পৃথিবীর অনেক ভাষায় অনুদিত হয়েছে । কবিতার বাইরেও আকাভান সমালোচনামূলক কিছু রচনা লিখেছিলেন ।  এগুলো তিনটি ভলিয়ম আকারে প্রকাশিত হয় । ভলিয়ুম গুলো হলো Badāyeʿ va bedʿathā-ye  Nimā Yušij (Nima’s innovations and novelties, Tehran, 1978), ʿAṭā va laqā-ye Nimā Yušij (on Nima’s legacy and literary idiosyncrasies, Tehran, 1983), and Naqiża va naqiża sāzān (Parodies and parodists, Tehran, 1995).  এছাড়া  মোরতোজা কাকীর সম্পাদনায় ১৯৯৪ সালে তার সব প্রবন্ধের সংগ্রহ  Ḥarim-e sāyahā-ye sabz  নামে প্রকাশিত হয় । আকাভানের গদ্য , প্রবন্ধ তার উপস্থাপনা সাবলীল আন্তরিক এবং পরিশ্রুত সত্য  যেগুলো তার সময়কালেই তিনি নন্দিত হয়েছিলেন । Akhavan’s prose, as encountered in his essays and introductions, was well composed and characterized by soundness and sincerity নামে একটি ছোট গল্পের বই ১৯৭৫ সালে প্রকাশ করেন । । শিশু কিশোরদের জন্য এই লেখা অনেক সুখপাঠ্য ।  ফেরদৌসীর কাজ এবং তার সমস্ত জীবনব্যাপী শাহনামার  মতো গ্রন্থ রচনা করা নিয়ে লেখা শিশুদের জন্য জনপ্রিয় একটি প্রবন্ধ । তবে তার কাব্য প্রতিভার আড়ালে তার গদ্য এবং অন্যান্য বিষয়গুলো আড়াল হয়ে গিয়েছে ।
THE EXCUSE
Yes, you are that which the heart desires.
But,
alas!
It is a long time since that bloody pigeon,
the searcher of the lost enchanted tower, has flown.
হ্যাঁ ! তুমি সেই যার জন্য হৃদয় আকুল হয়েছে
কিন্তু
হায় !
সময় চলে গেছে  
শুকতারা খোঁজা পাখি সেই  উড়ে গেছে দূরে -