গত ০১/০৬/১৫ ইং দৈনিক পূর্বদেশে প্রকাশিত


images (1) এনি গ্রে হার্ভে তাঁর বিবাহিত নাম নিলেন স্যাক্সটন। স্যাক্সটন অর্থ হলো চার্চ অফিসার যিনি চার্চের বেল বাজান এবং কবর খনন করেন। প্রতীকী দিক থেকে এবং সাহিত্যের দিক থেকেও এই নাম খুবই সমৃদ্ধ। তাঁর কেরিয়ারে ট্র্যাজেডি এবং কমেডি, সুর, বিষাদ, মৃত্যু এবং যৌনতা সবগুলো বিষয় নিয়ে কাজ করেন এবং এই নাম একটা প্রতীকী রূপ ধারণ করে। বিশ শতকের দিকে confessional poets নামে তেজস্বী কবি গ্রুপের সদস্য ছিলেন এনি স্যাক্সটন।


তিনি তাঁর স্বভাব নৈপুন্যের সাথে কবিতার ছন্দোবদ্ধ ট্যাবু ভেংগে ফেলেন, এবং লেখার ফর্ম এবং রীতি চিত্তাকর্ষক, হৃদয়গ্রাহী। এবং খোলাখুলি ভাবে লিখতে থাকেন মাস্টারবেশন, বাইপোলার ডিসঅর্ডার এবং একটু স্পর্শকাতর বিষয় যা ঐ সময়টাতে কেউ লিখতে সাহস করতো না স্যাক্সটন দ্বিধা ছাড়াই এই বিষয়গুলো নিয়ে লিখেছেন। বিদগ্ধ পালাগান এবং ফ্রীভার্স লিখেছেন তাঁর হৃদয়গ্রাহী ভাষায় এবং সুনির্দিষ্ট ফর্মে।


উইটি ব্যালাডস থেকে ভার্স সব অদ্ভুত হৃদয়গ্রাহী ভাষায় পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। ম্যাক্সিন কিউমিন স্যাক্সটনের একটি কবিতার বইয়ের রিভিউতে লিখেন স্যাক্সটনের বই শুরু করলে একবার চোখে তন্দ্রাও আসে না। তাঁর বন্ধু এবং প্রতিদ্বন্দ্বী সিলভিয়া প্লাথের মতন স্যাক্সটন মাত্র ৪৫ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন।


স্যাক্সটন এর উপাধি শুনে মনে হতো যেন কবর খাদককে সংবাদ পাঠানো। ১৯৬৬ সালে Live or Die prepared , the way for The Death Notebooks (1974) and The Awful Rowing Toward God (posthumous, 1975). এই তিনটি কবিতার বইয়ের জন্য পুলিতজার প্রাইজ পান। এছাড়া তাঁর অন্যান্য সাহিত্যকর্মগুলোর মধ্যে “The Hangman,” “Imitations of Drowning,” “Suicide Note,” “Godfather Death,” “For Mr. Death Who Stands With His Door Open,” and “Wanting to Die “ উল্লেখযোগ্য।


“The Truth the Dead Know,” এর প্রথম কবিতা ছিলো All My Pretty Ones (১৯৬২)বিংশ শতকে একটি অনন্য কবিতা ছিলো। ১৯৬৬ সালে Live or Die prepared the way for The Death Notebooks(1974) এবং The Awful Rowing Toward God (posthumous, 1975) “The Hangman,” “Imitations of Drowning,” “Suicide Note,” “Godfather Death” “For Mr. Death Who Stands With His Door Open,” “Wanting to Die.”বইগুলোর জন্য পুলিতজার প্রাইজ পান স্যাক্সটন।


তাঁর প্রথম কবিতা All My Pretty Ones (1962) বিশ সেঞ্চুরীর একটি অসাধারন কবিতা। এর দুটো উৎসর্গ লিখেছিলেন।
For my mother, born March 1902, died March 1959
and my father, born February 1900, died June 1959
The Truth the Dead Know” ছিলো এলিজি এবং এতে উৎসর্গে দেখা যায় দুটো বিষয় আছে।


দুটোই হলো সত্যিকারের জন্মবার্ষিকী মেরি গ্রে স্টেপলস এর এবং রালফ হার্ভের। তাঁদের কন্যার কবিতা প্রকাশের তিন বছর পরে তারা মারা যান। এই ধরনের অটোবায়োগ্রাফিক্যাল ডিটেইলস এগুলো কবিতায় খুবই সাধারণ বৈশিষ্ট। ১৯৬২ -৬৩ সালে হাডসন তাঁর রিভিউ তে একটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।


“কোন সন্দেহ নাই কবি চাইছেন যে নিজেকে পাঠকের সাথে যুক্ত করতে, এর ফলে লেখকের সুবিধা হলো লেখক তাঁর স্বীয় অনুভুতির সাথে পাঠকের অনুভুতি একাত্ম হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এর খারাপ দিক হলো এর ফলে পাঠক কিঞ্চিৎ বিব্রত হয়“।
কবি চান আমরা যেন তার কবিতার সাথে যুক্ত হই। এর সুবিধা হলো এর ফলে আমাদের অনুভুতি তীব্রতর হয় কিন্তু অসুবিধা হলো আমরা কিছুটা হতবুদ্ধি হই। এর ভালো কারণ হলো অতীতের যুগে অনেক ঘটনার উপর অল্প কথা বলা হয়েছে। যাই হোক এর ফলে যে কবিতা এসেছে সেগুলো এরকম স্বীকারোক্তির কারণে ব্যাপক একটা সৌন্দর্য নিয়ে আবির্ভুত হয়েছে। এর বিমুঢ়তাকে মনে হয় খেয়ালী এবং এর বিপরীত দিক থেকে মনে হয় তিনি বিভ্রান্ত কিছুটা। কারণ একটা নির্দিষ্ট ফ্রেমওয়ার্ক এর মধ্যে সবসময় বন্দী থাকা। তিনি কবিতার গভীরতাকে অনুভব করেছেন এবং এর ব্যাপ্তি নিয়ে ভেবেছেন। এবং দেখেন যে কবিতা কোথায় নিজস্ব ঐতিহ্যকে ধারণ করে। এর চিত্রকল্প যে কোন শতকের হতে পারে। যেমন চার্চ, কবর, শবযান জুতো, পাথর, নৌকা, জুতা, পাথর নৌকা, সমুদ্র, সূর্য এবং গাটার যেন মোমবাতির ধুয়ো যে ব্যাপারগুলো এগুলো চিরন্তন।


Gone, I say and walk from church,
refusing the stiff procession to the grave,
letting the dead ride alone in the hearse.
It is June. I am tired of being brave.
We drive to the Cape. I cultivate
myself where the sun gutters from the sky,
where the sea swings in like an iron gate
and we touch. In another country people die.


এ্যানি স্যাক্সটন এর লেখাগুলোতে ল্যাটিন ভাষার শব্দের সমাহার এত যে মনে হয়েছে বাহুল্যময়। অনেক বেশী মেদ। কিন্তু প্রতিটি স্তবকের অভ্যন্তরে মনোসিলেবল, শব্দের একধরণের মিছিল এবং শব্দগুলো উচ্চকিত এবং আনুষ্ঠানিক যে কর্ষণ করা যায়। এবং প্রতিটি কবিতার শেষের দিকে অনেক বেশী সমৃদ্ধ। প্রতিটি কবিতার থিমের অভ্যন্তরে ঢুকলে দেখা যাবে এর গতি অনেক বেশী সহজ এবং স্বচ্ছন্দ।


My darling, the wind falls in like stones
from the whitehearted water and when we touch
we enter touch entirely. No one’s alone.
Men kill for this, or for as much .


whitehearted water সাদা হৃদয়ের জলের যে কথা বলা হয়েছে এর সাথে তুলনা হতে পারে হোমারের ওয়াইন ডার্ক সী এর সাথে। এর আন্দোলন একটা লোহার গেটের মতন। এবং আবার বলা যায় যায় এই লোহার গেট জীবনে প্রবেশ করার দরজা। আমাদের চোখের জলের যে অবিমিশ্র আনন্দ এবং বেদনা প্রতিটাকেই উপভোগ করি। এবং সমস্ত প্রেমিক প্রেমিকার মনে হতে পারে একটা থ্রেট অথবা বিপদের মুখোমুখি করা। “the wind falls in like stones,” বাতাস আছড়ে পড়ছে পাথরের মতন এই যে তুলনা যেন একটা পাথরের উপর কবি ছায়া ফেলেন। মানুষ এর জন্য খুন হতে পারে Man kill for this, or for as much – । মানুষ এবং প্রকৃতির যে অবিচ্ছেদ্য টান এবং ভালোবাসা সেই উচ্চারণ প্রতিধ্বনিত হয় বক্তার উচ্চারণে।


And what of the dead? They lie without shoes
in their stone boats. They are more like stone
than the sea would be if it stopped. They refuse
to be blessed, throat, eye and knucklebone.


শেষ স্তবকে তিনটি পলিসিলেবিক শব্দ ব্যবহার হয়েছে। যেমন without, refuse, knucklebone. তিনটি শব্দই মৃত্যুকে অনেক বেশী মূর্ত করা হয়েছে। এবং এই যে মৃত্যু যার জুতো নেই এবং যে গতিহীন। এবং তাদের এই যে অস্বীকার করার প্রতিধ্বনি তা এসেছে বক্তার মুখ থেকেও স্বয়ং। মৃত্যু এবং এর যে শেকড় যা কবরে শায়িত সুতরাং একটা মৃত্যু এখন জীবনের এই বেঁচে থাকার আশীর্বাদকে গ্রহন করে। এবং শেষ শব্দ knucklebone অনেকটা মনে হয় দ্বান্দ্বিক এবং একই সাথে নগ্ন।


স্যাক্সটনের যে সমুদ্রের পাথরের কথা বলা হয়েছে যেখানে এমিলি ডিকনসনের তিনটি ছবির কথা মনে করিয়ে দেয়। মৃতদেহ যেখানে একটি ঘড়ির ঘুরে যাওয়া অথবা চলা বন্ধ করে দেয় অথবা আত্মার বাল্ব একটা পাথরের মতন, এবং পাথরনৌকা জীবন থেকে মৃত্যুর দিকে দীর্ঘ ক্লান্তিকর চলাকে নির্দেশ করে। জলের ছুড়ে দেয়া ভালোবাসা পৃথিবীর তাবৎ প্রেমিক প্রেমিকার দিকে – সবগুলোই সেক্সটনের কল্পনা শক্তির উচ্ছ্বল প্রকাশ। যেখানে সমুদ্র নৌকো এবং শরীর ক্রমশ হয়ে যায় পাথর এবং মৃত্যুই চিরসত্যি এবং অপরিবর্তনীয়।


পরের পর্বে সমাপ্য --