অনন্তকাল এ-অনন্তলোকে
            মন-ভোলানোরে তার খুঁজে ফিরে মন।
দক্ষিণা-বায় চায় ফুল-কোরকে ;
             পাখি চায় শাখী, লতা-পাতা-ঘেরা বন।
        বিশ্বের কামনা এ – এক হবে দুই ;
        নূতনে নূতনতর দেখিবে নিতুই॥
তোমারে গাওয়াত গান যার বিরহ
             এড়িয়ে চলার ছলে যাচিয়াছ যায়,
এল সেই সুদূরের মদির-মোহ
              এল সেই বন্ধন জড়াতে গলায়।
        মালা যে পরিতে জানে, কন্ঠে তাহার
        হয় না গলার ফাঁসি চারু-ফুলহার॥
জলময়, নদী তবু নহে জলাশয়,
        কূলে কূলে বন্ধন তবু গাহে গান ;
বুকে তরণির বোঝা কিছু যেন নয়–
              সিন্ধুর সন্ধানী চঞ্চল-প্রাণ।
        দুই পাশে থাক তব বন্ধন-পাশ,
        সমুখে জাগিয়া থাক সাগর-বিলাস॥
বিরহের চখাচখি রচে তারা নীড়,
              প্রাতে শোনে নির্মল বিমানের ডাক ;
সেই ডাকে ভোলে নীড়, ভোলে নদীতীর,
              সন্ধ্যায় গাহে : ‘এই বন্ধন থাক’!
        আকাশের তারা থাক কল্পলোকে,
        মাটির প্রদীপ থাক জাগর-চোখে॥


(ঝড় কাব্যগ্রন্থ)