এসো এসো এসো ওগো মরণ!
এই   মরণ-ভীতু মানুষ-মেষের ভয় করো তো হরণ॥  
     না বেরিয়েই পথে যারা পথের ভয়ে ঘরে  
     বন্ধ-করা অন্ধকারে মরার আগেই মরে,  
     তাতা থইথই তাতা থইথই তাদের বুকের পরে
ভীম   রুদ্রতালে নাচুক তোমার ভাঙন-ভরা চরণ॥  
      দীপক রাগে বাজাও জীবন-বাঁশি,  
      মড়ার মুখেও আগুন উঠুক হাসি।  
     কাঁধে পিঠে কাঁদে যেথা শিকল জুতোর-ছাপ,  
     নাই সেখানে মানুষ সেথা বাঁচা-ও মহাপাপ।
সে   দেশের বুকে শ্মশান-মশান জ্বালুক তোমার শাপ,
সেথা  জাগুক নবীন সৃষ্টি আবার হোক নব নামকরণ॥  
     হাতের তোমার দণ্ড উঠুক কেঁপে  
     এবার দাসের ভুবন ভবন ব্যেপে,  
     মেষগুলোকে শেষ করে দেশ-চিতার বুকে নাচো!  
     শব করে আজ শয়ন, হে শিব জানাও তুমি আছ।  
     মরায়-ভরা ধরায়, মরণ! তুমিই শুধু বাঁচো –
এই   শেষের মাঝেই অশেষ তুমি, করছি তোমায় বরণ॥  
     জ্ঞান-বুড়ো ওই বলছে জীবন মায়া,  
     নাশ করো ওই ভীরুর কায়া ছায়া!  
     মুক্তিদাতা মরণ! এসো কালবোশেখির বেশে;  
     মরার আগেই মরল যারা, নাও তাদেরে এসে।  
     জীবন তুমি সৃষ্টি তুমি জরা-মরার দেশে,
তাই   শিকল-বিকল মাগছে তোমার মরণ-হরণ শরণ॥


   (বিষের বাঁশি কাব্যগ্রন্থ)