আজ আসরে প্রকাশিত হলো আমার ৭০০ তম কবিতা । আজ এই ২০ বছর বয়সে আমি ৭০০ এর দ্বোরগড়ায় । আলো আঁধারের ভেলায় চড়ে সৃসৃক্ষু ভাবনেরা সৃজনের উন্মাদনায় নেশাখোর দীর্ঘ ১০ টা বছর । হৃদয় চিরে কত সন্তানের জন্ম দিলাম তার মধ্যে কত হারিয়ে গেল কত চুরি হয়ে গেল কত বা ভালো হয়নি বলে ছিঁড়ে ফেলেছি তার ঠিকই নেই !
আজ আমি ৪ বছর নেটের মধ্যে আছি, তার আগে তো ইন্টারনেট সম্বন্ধে কিছু জানতামই না । তাই লিখা কবিতা গুলো প্রকাশ করার কোনো সুযোগও হয়নি । যদি কোনো পত্র পত্রিকার সম্পাদকের কাছে যেতাম তাহলে যা না তাই শুনতে হত আমাকে বলত - এই টুকু ছেলে নয় কবিতা লিখছে, টাকা দিতে পারবি ৫০০ টাকা তাহলে ছাপব ।
আর তা ছিল আমার সাধ্যের বাইরে । কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরতাম নিরাশ হয়ে । তারপর বাবার পকেট থেকে টাকা চুরি করে ডাকের মাধ্যমে কলকাতায় প্রকাশিত শুকতারা পত্রিকায় আমার কবিতা পাঠাতে শুরু করলাম । তখন আমার বয়স ১২ কি ১৩ । শুকতারা পত্রিকায় যখন আমার কবিতা প্রকাশ হলো সেদিন কি আনন্দই না হয়েছিল আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলাম আমি ।
আজ এতদিন পর সেই সম্পাদকেরা আমার কাছে এসে লেখা চায় যাঁরা একদিন আমাকে দুয়ার থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল ।
বহুদিনের ইচ্ছে একটা কাব্যগ্রন্থ বার করব তা দেখি অনেক টাকার খেলা ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা । এই দরিদ্র চাষীর পরিবারে জন্ম নিয়ে সেই সাধ আর পূরণ হয় না । জানি না কোনোদিন হবে কি না । দিন আনা দিন খাওয়া আমাদের সংসার । তবুও এই অভাবের সংসারে ভালোবাসার কমতি নেই বড়োই সুখে আছি । আমি আগের মতো কবিতা আসরে আর আসতে পারি না কবিতা পড়ে মন্তব্যও করতে পারি না । কারন আমার মা খুবই অসুস্থ । মায়ের সেবা যত্ন করা, ঘরে রান্না করা, জল আনা, ঝাঁট দেওয়া, গরুর জন্য খড় কেটে দেওয়া - সব কাজ আমাকেই করতে হয় । সারাদিনের কাজ শেষ হলে রাত্রি জেগে কবিতা লিখি । ক্লান্ত অবসন্ন শরীরে কবিতা লিখতে লিখতে ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ি মনেই থাকে না । আমিও এক ভয়ংকর রোগের শিকার হয়েছি । জানি না কবে চলে যেতে হবে সবকিছু ছেড়ে । একদিন হয়তো আমি থাকবো না রয়ে যাবে আমার শত শত কবিতা এই আসরের বুকে । পড়ে রইবে হাজার স্মৃতি চারিদিকে, কবিতারা করবে আর্তনাদ । একদিন আর কোনো কবিতার রান্না হবে না । শুধু স্মৃতি আর স্মৃতি । সেদিন নীলকে ভুলো না বন্ধু । কবিতার মাঝেই খুঁজে পাবে তোমাদের নীলকে ।