মানুষ এখান থেকে ওখানে যায়, ছুঁটে বেড়ায় সুখের আশায়
সবাই উন্মুখ, পায় নাতো সুখ, ঘিরে ধরে শুধু ঘোর হতাশায়।  
আইনের পর আইন তো আসে, বুড়ো আঙুল সেই আইনই দেখে,
আইনপ্রণেতাই ভাঙছে যে আইন, কার কাছ থেকে কে আর শেখে?
দোষ না করেও পায় কেউ সাজা, দোষীরা পায় আইনের ফাঁক,  
অনাগত শিশু হত হয় গুলিতে, সংবিধান থাকে চির নির্বাক!  
শাসকেরা নিজে সুবিধা পেতে সংবিধানের বুকে চালায় কাঁচি,  
প্রতিবাদী মুখে বুলেট ফুঁকে নিজ ক্ষমতা বাড়াতে সব্যসাচী।  
রক্ষকেরাই ভক্ষক আজ, বেড়া লাগিয়ে নিজে শেষ করে ক্ষেত,
গরীবের ত্রাণ লুটে নেতাগণ, ক্ষুব্ধ অনাহারী খায় গুলি-বেত। ৬০
নারী মাতা, নারী ভগ্নী, নারী নারী করে মাতায় যে জন,
নিজের ঘরে নারীরেই সে সময়ে অসময়ে করে জ্বালাতন,
শিশু অধিকার, বাঁচাও শিশু- গলা বাড়িয়ে যে যে চেঁচায়,
তাদের বাড়িতেই গৃহকর্মী শিশু তপ্ত খুন্তির সেঁকাই যে খায়।  
কে বলো কার করবে বিচার? বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে,
আসনে বসে বিচারক ভাবেন, পড়ি কিনা অভিশংসন ফাঁদে।
রায়ের আগেই রায় ঠিক হয়, নিজ রায় দিতে লাগে বড় ভয়,
বিচারপতির করতে বিচার আইনও হেথায় লেখা হয় নিশ্চয়।  
কতোজনের বিচার পেতে বছরের পর বছর কেটে যায়
আদালতে বসে ডুকরে কাঁদে তবুও তো বিচার না পায়। ৭০
টাকার জোরে জেলেই বসে কেউ পাচ্ছে মদ-বিড়ি-গাঁজা,  
কতো শত দাগী আসামী আবার জেলেতে হন নবাব, রাজা।
কেউবা আবার কপালদোষে পাচ্ছে সাজা জজ মিয়ার,  
দলপ্রেমিক টপ টেরর পাচ্ছে খেতাবখানা আউলিয়ার।
চোরে চোরে মাসতুত ভাই, কেউ কাউকেই ছাড়ছে না।  
হিসেবখানা মিলিয়ে দেখে, ভাগাভাগিতে কেউ হারছে না।
আগে থেকেই ঠিক করা হয়, মরবে কোনজন কোন খানে,
ক্রসফায়ার নাটক রাত্রীকালে, মঞ্চ সাজে সেই পানে।
লিমন-লিটন-কাদের আছে, ইচ্ছেমতো ধর তারে,
কার কতো আর সাহস আছে যে চোর-পুলিশে নাক বাড়ে? ৮০
বিনা বিচারে মরবে মানুষ, বনে-জঙ্গলে লাশ পড়ে রবে,  
প্রতিবাদে শুধু আশ্বাস মেলে- তদন্তে শেষে বিচার হবে।  
আগে যা ছিলো তাই-ই রবে, কাজের কাজ তো হবে না,
ঘটনায় ঘটনা চাপা পড়ে যায়, কেউ আর কিছু ক'বে না।
তনু ঢাকে ইয়াসমিনকে, তনু ঢাকা পড়ে যায় কতো রিশায়!
যারা বিচারের দায় নিয়েছে তারাই তো হারায় অমানিশায়।
লাঞ্ছিতজনে দোরে দোরে ফেরে কজনইবা বাড়ায় নিঃস্বার্থ হাত,
অসহায় নিরুপায় সর্বহারা মুখ ঢেকে কাঁদে একাকী সারা দিনরাত।
আসে না কেউ দাঁড়াতে পাশে, অসহায় জনে বিদ্রুপই পায়,  
সুবিচার তরে দ্বারে দ্বারে ঘুরে দিন শেষে সে করে 'হায়! হায়!' ৯০
অপরাধীরা পার পেয়ে যায়, বুক ফুলে হেঁটে কতো কটু কথা বলে,
তাদের দর্পে ধরাতলও কাঁপে, আইনের লোকও ভয় পেয়ে চলে!
এ সমাজে তাই অপরাধীরাই হুংকার ছাড়ে দিনের আলোয়,
সাহসী বুকে দাঁড়াবে রুখে? চুপ করে থাকো ভালোয় ভালোয়।
যতো অপরাধী, সন্ত্রাসী যতো লাগে যে কাজে নেতার জয়ে,  
শোষিত, পীড়িত, বঞ্চিত যারা চুপ করে থাকে প্রাণের ভয়ে।  
ভোটের হিসেব নিষ্ঠুর বড়! রীতিনীতি মেনে চললে হয়?
টাকা-পেশী জোর যার বেশি আছে সেই তো ভোটে করবে জয়।
অসহায়ের পাশে দাঁড়াতে যেয়ে নিজের পায়ে কুড়োল মারবে কে?
সন্ত্রাসীদের পাশে রেখে তাই ভোটে জেতার সুযোগ ছাড়বে কে? ১০০