অধিকারহারা কতো মানুষ ঘোরে পথে পথে, কতো শিশু শ্রম বেচে পথ ‘পরে,
কেউ বোঝেনা কাব্যের মর্মকথা, ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরেই অন্তরে।  
কচি হাত ভরে ফুলের গুচ্ছ পথে ঘুরে ঘুরে জীবন তুচ্ছ, কষ্টের হয় না অবসান,
জীবিকার সংগ্রামে নেমে গেছে ওরা, সদা চিৎকার, ‘ভাই, একটা ফুল নিয়া যান’।
ফুলের মতো হাজার শিশু, কচি কোমল মুখগুলো বিষণ্ণ মলিন, মেখে যায় ধূলি,
ডুবতে বসেছে যে জীবন বিপন্নতার স্রোতে, সুখের আশা, ভালোবাসা যায় ভুলি।
মানবাধিকার কী, জানেনা তারা, শিশু অধিকার কী, তারা বোঝেনা। কপাল পোড়া!
সারাদিন ধরে জনে জনে ঘুরে যে অর্থের যোগাড় তা দিয়ে সুখ পায় না যে ওরা।
রেস্টুরেন্টের পচা-বাসি খাবার, কিম্বা ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া উচ্ছিষ্ট কিছু যদি পায়
তা দিয়েই ক্ষুধা মেটানোর চেষ্টা ব্যর্থই থেকে যায়, গরীবের পেট আরও খেতে চায়। ৩৫০
পেটে ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য যে আর হয় না! তাই গাম-ভরা কৌটো কিম্বা পলিথিনে
ফুঁ দিয়ে দিয়ে সে যন্ত্রণা ভোলার বৃথা চেষ্টা, মাদক আর অপরাধ ডাকে দিনে দিনে।
লোভের ফাঁদে পা ফেলে হায় কতো শিশুই শেষ হয়ে যায়, একটু খাবারের জন্য
কতো শিশু হয় চোরাচালানের বলী, কেউ ফের হয় সন্ত্রাসী, খুনি, অমানুষ, বন্য।
কেউ বাধ্য ছিনতাইয়ে, কেউ ধরে ভিক্ষার থালা, নিরুপায় কেউ পায় শুধুই জ্বালা,
পার্কে, পথে, খোলা আকাশের নিচে শুয়ে-বসে থেকে কেউবা বেচে ফুলের মালা।  
কেউ বেচে অস্ত্র-গোলা, কেউ বেচে মাদকদ্রব্য অসৎ ব্যবসায়ীদের হাতিয়ার হয়ে,  
কেউবা বেচে শরীরটাকেই, জীবনসংগ্রামে হেরে যায় কেউ, মরে যায় ক্ষয়ে ক্ষয়ে,
উঁচু-নিচু ভেদাভেদের খেলায় ডুবে গেছে যারা অবহেলায়, মেনেছে ভাগ্যের পরাজয়,
তাদের বাঁচাতে কে এগিয়ে আসবে? এ কি রাষ্ট্র, সমাজ, বিত্তবানদের দায় নয়?  ৩৬০
(চলবে.....................)