ঘড়ির কাঁটা বারোটা ছুঁইছুঁই দুপুর বেলা,
আকাশে মেঘের সাথে সূর্যের লুকোচুরি খেলা
হিমালয়ের নাতিশীতোষ্ণ হাওয়া ধেয়ে এসে লাগে গায়ে,
সন্তান বুকে নিয়ে মা চলছে আলতো পায়ে
ঘরে ফিরছে স্বামী দিতে হবে খাবার
রান্না ঘরে ঢুকে, শোবার ঘরে যাচ্ছে আবার
স্কুলে গেছে সন্তানেরা, ফিরবে একটু পর
বৃদ্ধা মা বিছানা ছেড়ে উঠে কী ভেবে যেন গোছাচ্ছে ঘর
উঠোনে উড়ছে শুকনো খরের গোছা,
ব্যস্ত স্ত্রী পায়ে দিল জোর, তখনও হয়নি ধোঁয়া মোছা!  
মেঘ জমে এই রোদ, এই পড়ে ঝিরঝির বৃষ্টি,
মন চমকে উঠে থেকে থেকে, কোন কুক্ষণে পড়ছে যে দৃষ্টি!
বৃদ্ধ বাবা গেল নাইতে হাতে নিয়ে হুঁকো
মাঝে মাঝে দুচোখ বাড়িয়ে হচ্ছেন আকাশমুখো  
অমনি লামজুং উঠলো আচমকা কেঁপে
উনুনের চালে তখনও স্ত্রী দিচ্ছিলেন পানি মেপে মেপে
কেঁপে উঠলো চম্পারণ, দ্বারভাঙ্গা, সুপৌল, সীতামারি
ভেংগে পড়লো আড়ারিয়া, শিহোর, সারণের ঘরবাড়ি
প্রকৃতির আঘাতে থেমে গেল মানুষের রথ
আকাশও কাঁপিয়ে দিল শান্ত বুদ্ধভূমির পথ
লন্ডভন্ড শান্ত বুদ্ধভূমি প্রকৃতির রোষে
প্রাণহীন দেহগুলো পড়ে আছে কোন দোষে?
ক্লান্তিহীন হেঁটে হেঁটে যে পথ ধরে
শান্তির বার্তা দিয়েছেন বুদ্ধ শত ঘরে ঘরে
আজ সেখানে বিস্তীর্ণ শুধু বিপর্যয়ের রূপ
আজ সেখানেই গড়েছে যেন গভীর মৃত্যু কুপ
হিমালয়ের বুকে রোদ পড়ে যেখানে ছিল রূপের বাহার
আজ এ কোন দৃশ্যে কাঁদে প্রাণ? হিমালয়ের কোলে যেন লাশের পাহাড়!


* কবিতাটি ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ইংরেজি তারিখে নেপালে সংঘটিত ভয়াবহ গোর্খা ভূমিকম্প স্মরণে লেখা।
*রচনাকাল- ২৫ এপ্রিল ২০১৫