প্রভাত গগনে আলো ছড়ায়ে
রবিরাজ যবে উঠবে না,  
কানন ভরে মধ্য ফাগুণে
পুষ্পকলি ফুটবে না,
বুঝবে তখন বুঝবে,
শাড়ীর আঁচল ফুলহীন ফিরে
মলিন চাহুনি ভাবাবেগে ঘিরে  
খুঁজবে আমায় খুঁজবে।  


তটিনীর বুকে স্রোতহীন জল
করবে না যবে কোনো কোলাহল,
কোনো কুলে এসে পড়লে না ঢেউ,
দু’চোখের জল দেখলে না কেউ,  
বুঝবে তখন বুঝবে,
মুছে চোখ দুটি ঘরে যেয়ে ছুটি
খুঁজবে আমায় খুঁজবে।


জোনাকির আলো পড়লে না ঘরে,
তমসা যখন নেবে ঘিরে ধরে
ছোট ঘরখানি চারদিক পরে,  
বুঝবে তখন বুঝবে,
ঘর ছেড়ে তবে দুয়ারটা খুলে
বাইরে দাঁড়িয়ে চোখ দুটি তুলে
খুঁজবে আমায় খুঁজবে।


চাঁদহীন রাতে প্যাঁচা ডাকা ভয়ে
বুককাঁপা মুখে আঁচলখানি লয়ে
অঝোরে জল ফেলবে রয়ে রয়ে
বুঝবে তখন বুঝবে,
হাত বাড়িয়ে শিয়র পাশেতে
খুঁজবে আমায় খুঁজবে।


আঙিনাখানি ভরে গেলে ধুলোয়,
কোনো আগুণ জ্বললে না চুলোয়,
চাল-ডাল যখন পড়বে না কুলোয়,
বুঝবে তখন বুঝবে,
পেটখানি চেপে ক্ষুধা যন্ত্রণায়
খুঁজবে আমায় খুঁজবে।


কপলে তোমার পড়লে না নাড়া,
কোনো আবেগে না পেলে সাড়া,
কেঁদে কেঁদে যবে হবে দিশেহারা,
বুঝবে তখন বুঝবে,
একটু ছোঁয়া পাবার আশাতে
খুঁজবে আমায় খুঁজবে।


ভাঙ্গা টিনের চালা বেয়ে ঘরে
বরষার দিনে বৃষ্টি পড়ে পড়ে
বিছানা উঠানে দেবে এক করে
বুঝবে সেদিন বুঝবে,
আমার এ বুকে আশ্রয় পেতে
খুঁজবে আমায় খুঁজবে।


বেলা শেষ হলে তুমি একা একা
হাতড়িয়ে মোর না পেলে দেখা
অচল কায়ায় কাতরালে তবে
বুঝবে তখন বুঝবে,
জীবনের শেষ, তবু কাছে পেতে
খুঁজবে আমায় খুঁজবে।