গুনে গুনে নিচ্ছি যে সব,
হিসেব রাখি কই?
সবার আগে নিয়ে নিলাম
'আমার বাংলা বই'।
'ইংলিশ ফর টুডে' নিলাম,
নিলাম বিজ্ঞানটাও,
ওহ আম্মু, তুমিই এবার
ধর্ম বইটা দাও।
এরপর দাও প্রাথমিক গণিত
তারপর দাও সমাজটা,
হাতে হাতেই গুনি দেখি
বই হলো কি ছয়টা?  
বাংলা ব্যাকরণ বইটা এবার
দাও তো ব্যাগে ভরে।
ওয়ার্ড বুক নিলাম কি না
দেখি ভালো করে।
লেক্সিস গ্রামার বইটাও যে
এবার নিতে হবে,
না হলে যে ই-টু মিস
কটু কথা কবে।
আর্ট বইটা কোথায় গেলো?
পাচ্ছি না তো খুঁজে।
কোন কোন বই দিতে হবে
আম্মুও না বুঝে!
ডায়েরিটা মা দাও গো এবার
ওয়ার্ড বুকের সাথে,
হোমওয়ার্কের খাতাগুলো
নিয়েছি কাল রাতে।
ক্লাস ওয়ার্কের ছয়টা খাতা
দাওনা ব্যাগে ঢুকিয়ে,
এবার দাও ক্রিকেট ব্যাট,
রেখেছো কি লুকিয়ে?
পেন্সিল-পেন বক্সটাও দাও,
দাও বোতলভরা পানি,
দাও ঢুকিয়ে ব্যাগে এবার
ভরা টিফিনখানি।
দাও তো এবার ব্যাগটা তুমি
আমার কাঁধে তুলে,
ওরে বাবা! এতো দেখি
পড়ছি আমি ঢুলে!  
স্কুলের এই ব্যাগটা দেখি
আমার চেয়ে ভারী,
কাঁধে ব্যথা, কোমর বাঁকা,
সইতে যে না পারি।


* ই-টু= ইংলিশ সেকেন্ড পেপার
(সরকার ও শিক্ষা বোর্ড নির্দেশিত বিষয়ের অতিরিক্ত বই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়াও হোমওয়ার্ক, ক্লাস ওয়ার্ক, এসাইনমেন্ট, প্রজেক্ট ওয়ার্ক ইত্যাদি নামে শিশুদের উপর এক ধরণের অত্যাচার করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের জীবনে পড়াশুনা আনন্দের না হয়ে বিরক্তির বিষয় হয়ে দেখা দিচ্ছে। স্কুল ব্যাগের ভারে শিশুরা যখন মেরুদন্ডের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তখন জাতির মেরুদন্ড সোজা হয়ে দাঁড়াবে কীভাবে?)