আমাদের বিজয়ের ডাক, ধারালো ছুঁচের মতো
বিঁধেছিল নরকীয় কুচকাওয়াজের ফসিল ভেদে
এক দল ঘৃণিত নরপিশাচদের বুকে,
শতাব্দীর মাঠ প্রান্তর পেরিয়ে রচেছিলো গর্বিত অমলিন ইতিহাস,
প্রতিদানে দিয়েছিলাম তিরিশ লক্ষ টগবগে বুকের রক্ত
চার লক্ষ মা ও বোনের সম্ভ্রম, আরো কত কি।


বিজয় তোমার কাছে আমার প্রশ্ন !!!
তুমি'কি সমকালের রাতের বিছানায় দেখা শুধুই স্বপ্ন  
প্রশ্নবিদ্ধ ইতিহাসের পাতায় সভ্যতা কি শুধুই লোক দেখানো মাত্র
লাল সবুজ আঁচল উড়িয়ে ডেকে আনা দুর্ভেদ্য সহংসাহীনতা
নাকি "ভালোবাসি" স্লোগানের আড়ালে নিরেট স্বার্থপরতা।


তোমার ডাকে সারা দিয়ে পেয়েছিলাম ঐতিহাসিক স্বাধীনতা
সত্যি কি হয়েছি স্বাধীন এখনো সেই বর্বরতা থেকে
পথে ঘাটে নগরে বন্দরে স্কুলে বাসে লঞ্চে রেলগাড়িতে
এখনো কি আমার মা'বোনেরা সম্ভ্রম নিয়ে নিরাপদ?
আমরা কি দুর্নীতির বেড়াজাল ছিঁড়ে একবিংশ শতাব্দীর দ্বারে-
দাঁড়িয়েছি মাথা উঁচু করে, অনাহার কে বিদায় জানিয়ে।


এখনো পথে ঘাটে অজস্র বস্রহীন মানুষের বসবাস
ক্ষুধার জ্বালায় কাতর শিশু, নিরুপায় মায়ের করুন আহাজারি
এখনো মানচিত্র ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে একদল নরপিশাচ
আমাকে নির্বোধ করে তোলে তাদের চেতনাহীন নির্মম উল্লাস
ব্যাখ্যাহীন এক বোধের পাঁজর ভাঙ্গা শব্দে চিৎকার করি  
বুকের শানিত নির্বোধ সর্বনাশি হাহাকার নিয়ে
অজস্র আঘাত, অগণিত প্রত্যাঘাতের নির্মমতা দেখে
কি হবে বলো পতাকা উড়িয়ে "ভালোবাসি" সংগীত গেয়ে,
হয়ত তিরিশ লক্ষ শহীদের রক্ত পানি হয়ে বয়ে যাবে  
অন্ধকূপের ক্লেদিত স্বার্থের নর্দমায়।


ইচ্ছে করে আবার তোমায় ডাকি সেই আগের উদ্দীপনায়  
আগের একাত্মবোধের দৃঢ় বন্ধনে বেঁধে সবাইকে
আবার মেতে উঠি সেই আনন্দ উল্লাসে,সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে
বিজয় তুমি আবার এসে জাতপাত ধর্মের দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলিয়ে
ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে বেঁধে যাও আমাদের।
_____________________
রচনা কাল রাত ৯.২৫ মিনিট
১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ২০১৭
গ্রিসের রাজধানী এথেন্স থেকে
© Copyright সংরক্ষিত ®