সামান্য বেদনায় যে জীবন ত্যাগিবার নেশায় রহিয়াছো উন্মত্ত,
ভাবিয়াছো কভু -ও জীবনই পাইবার তরে কেহ কাঁদিছে অবিরত।
আত্মহননে উদ্যত হও ঘাটতিতে সামান্য বিলাস,
প্রমোদে কিঞ্চিৎ কমতি পড়িলে জীবনের চাও নাশ।
দশ মাস জননী গর্ভে ধরিয়া,সহিয়া অকথ্য যাতন,
দিয়াছে জনম,করিয়াছে মানুষ, মানিয়া বুকের রতন।
পিতার রক্ত জল হইয়াছে কত পুরিতে শত আবদার,
দুশ্চিন্তায় কত অধীর হইয়াছে সামান্য রোগে তোমার।
এমনি জনম তোমার,তবু করিছো হেলা,ভাবিছো অর্থহীন,
যাও তবে দেখো,রহিয়াছে শিশু কত পিতৃ-মাতৃহীন।
ক্ষুধার জ্বালা সইতে না'রি কুড়াইছে বাসী খাবার,
রাস্তা হইতে তুলিয়া লইয়া সানন্দে সারিছে আহার।
অসুখে তাহারা পায়না শুশ্রূষা, ওষুধ-পথ্য বহুদূর,
নিষ্ঠুর দুনিয়ায় কেবল বাঁচিবারে হায় সর্বদা যে ব্যাকুল।
রাস্তায় পড়িয়া সাহায্য চাহিয়া দেখো কাঁদিছে কত জন,
হস্ত-পদ নাই,রোগের চিকিৎসা নাই,তবু আশায় বাঁধে মন।
এমন সাধের জনম পাইয়াও করনা সামান্য মায়া,
আপনজন শেষে কাঁদিয়া মরে ধরিয়া অনড় কায়া।
নারীর প্রেমে ব্যর্থ হইয়া করিয়াছে আত্মহনন,
এমন পুরুষ রহিয়াছে কত,অসীম তাহার গণন।
প্রাণের পুরুষ না করিয়া তাহারে,পরেরে করিয়াছে সঙ্গী,
নির্বোধ নারী ভাবিয়াই তাহা দিয়াছে যে আত্মাহুতি।
শত সহস্র পাইবার মাঝেও সামান্য না পাইবার দোহায়,
এত সাধের জনম রে হায়,কেমনে বিসর্জন দ্যায়!
এত আলোর এত ঝলমলানিতেও ভরেনা যাহার মন,
চিরকালের ঘোর অমানিশায় কেমনে কাটিবে ক্ষণ!
ধরণীর সামান্য যাতনা কোনক্রমেই সহেনা যাহার!
চিরকালের চির অসহনীয় যাতনা কেমনে সহিবে তাহার?
জনম থাকিতেই ফিরিয়া আসো হায়,না পড়িও না ও নেশার ফাঁদে,
ইহকাল-পরকাল সকলই হারাইবে, সর্ববিনাশ হইবে তাতে।